Friday, May 23, 2025
spot_imgspot_img

Top 5 This Week

spot_img

Related Posts

ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস দর্শিয়ে আইপিএল ফাইনাল মোদি রাজ্যে!‌ বিসিসিআইয়ের ‘‌বঞ্চনা’‌র বিরুদ্ধে সরব ক্রিকেটপ্রেমীরা, মাঠে নামলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়

আশার আলো এবার ফুটছে। আইপিএল ফাইনাল ফেরার সম্ভাবনা জাগছে। কারণ, এবার মাথা ঘামিয়েছেন প্রাক্তন বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। আইপিএল ফাইনাল নিয়ে রাজনীতির বাতাবরণ। কলকাতা থেকে সোজা মোদীর রাজ্যে! কলকাতা থেকে আহমদাবাদে। সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার রাস্তাও প্রায় পাকা করার পদক্ষেপ করছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড? শুধু বৃষ্টির পূর্বাভাসই কারণ? অথচ বৃষ্টির হার দেখাচ্ছে ৩৪ শতাংশ। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডে অন্তরীক্ষে থাকা আবহাওয়াবিদের আজব যুক্তি!‌ বিসিসিআই তিন সপ্তাহ আগে জেনে গিয়েছে ৩ জুন কলকাতায় বৃষ্টি হবে? সঙ্গে ঝড়ও! আজব ‘পূর্বাভাস’-এর প্রেক্ষিতেই আইপিএল ফাইনাল ইডেন থেকে আহমদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে। আনুষ্ঠানিক ঘোষণা এখনও হয়নি। অন্তরীক্ষে স্থাপিত আধুনিক উপগ্রহের সুবাদে আবহাওয়ার গতিপ্রকৃতি অনেকটাই নিখুঁত ভাবে আগে থেকে বলা যায়। তাও সাত দিন আগে। আলিপুরের আবহাওয়া দফতর সূত্রের বক্তব্য। কোনও শহরের ক্ষেত্রেই ‘দীর্ঘকালীন পূর্বাভাস’ দেওয়া যায় না। কেন্দ্রীয় সরকারের ‘ইন্ডিয়া মেটিওরোলজিকাল ডিপার্টমেন্ট’ ছ’দিনের পূর্বাভাস দেয়। ভারতীয় বোর্ড ঠিক কীভাবে ৩ জুন কলকাতায় বৃষ্টির সম্ভাবনা ৬৫ শতাংশ জেনে গেল?‌ বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির সম্ভাবনাও। আমেরিকার একটি বেসরকারি অ্যাপের উপর ভিত্তি করেই বোর্ড কলকাতা থেকে আইপিএল ফাইনাল সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার মতো বড় সিদ্ধান্ত ঘোষণা করতে চলেছে। ৩ জুন আইপিএল ফাইনাল হতে এখনও বাকি ১৮ দিন! চলতি বছরের আইপিএল শুরুর সূচিতে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ও ফাইনাল ইডেনে ছিল ২৩ মে ও ২৫ মে। কেকেআর গত বারের চ্যাম্পিয়ন। প্রথা অনুযায়ী উদ্বোধনী ম্যাচ এবং ফাইনাল গত বারের চ্যাম্পিয়নের ঘরের মাঠেই হয়। দ্বিতীয়ত, ফাইনাল এবং দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারের মধ্যে দিনের ব্যবধান প্রায় না-থাকায় দু’টি ম্যাচ একই মাঠে হয়। ফাইনাল এবং দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ইডেনে হওয়ার কথা।

ভারত-পাকিস্তান সঙ্ঘাতের কারণে ১৩ মে আইপিএলের পরিবর্তিত সূচিতে বলা হয়েছিল, প্লে-অফ এবং ফাইনাল-সহ বাকি ১৭টি ম্যাচ ছ’টি কেন্দ্রে হবে। বোর্ডের বিবৃতিতে ছ’টি শহর বেঙ্গালুরু, জয়পুর, দিল্লি, লখনউ, মুম্বই এবং আহমদাবাদ। পশ্চিমবঙ্গের ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থা সিএবির একটি অংশ এখনও ইডেন নিয়ে আশাবাদী। মূলত ওই অংশের উদ্যোগেই সিএবি আইপিএল ফাইনাল নিয়ে চিঠি দিয়েছে বোর্ডকে।আইপিএল ফাইনাল স্থানান্তরণের নেপথ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বনাম নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহ রাজনীতির লড়াই। স্বয়ং নরেন্দ্র মোদীর স্টেডিয়াম এশিয়ার বৃহত্তম ক্রিকেট স্টেডিয়াম। অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডের চেয়েও ওই স্টেডিয়ামের দর্শকসংখ্যা অনেক বেশি ১ লক্ষ ৩২ হাজার আসন। বিশ্বকাপে ভারত বনাম পাকিস্তান এবং ফাইনাল হয়েছিল এই স্টেডিয়ামে। আইপিএলে গুজরাত টাইটান্সের সাতটি হোম ম্যাচ ছাড়া আর কোনও খেলা সেখানে হয় না। এমনকি, রঞ্জি ট্রফির ম্যাচও হয় ‘নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়াম এ গ্রাউন্ড’ এবং ‘নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়াম বি গ্রাউন্ড’-এ। এর আগে দু’টি আইপিএল ফাইনাল অহমদাবাদে হয়েছে। ২০২২ এবং ২০২৩। ২০২২ সালে চেন্নাই ফাইনাল আয়োজন করতে না পারায় ফাইনাল হয়েছিল এই স্টেডিয়ামেই। গুজরাত চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় পরের বছর ২০২৩ সালের ফাইনালও হয়েছিল আহমদাবাদে। বঙ্গ ক্রিকেট এখনও আশাবাদী। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ইডেনে ফাইনাল করানোর ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছেন। তাঁর চেষ্টাতেই আইপিএলে নাইটদের একটি ম্যাচ গুয়াহাটি গিয়েও আবার দিন পাল্টে ফিরেছিল ইডেনে। ফাইনালের জন্য ‘দাদা’ ব্যাট ধরলেই ওভার বাউন্ডারিই সম্ভব।

ক্ষুব্ধ কলকাতার ক্রিকেটপ্রেমীরা। অবিচারের বিরুদ্ধে ইডেনের সামনে শুক্রবার বিক্ষোভ আছড়ে পড়ল কলকাতায়। বিসিসিআইয়ের নতুন সূচির উপসংহারে লেখা, প্লে অফ এবং ফাইনাল সরানোয় সমালোচনার ঝড়। কেন এই ‘অবিচার’? ইডেনের সামনে ব্যানার নিয়ে এদিন প্রবল বিক্ষোভ দেখান ক্রিকেটপ্রেমীরা। হিন্দি-ইংরেজি-বাংলায় লেখা সেই ব্যানারের মূল বক্তব্য, ‘ক্রিকেটের নন্দন কানন ইডেন গার্ডেন থেকে আইপিএল ফাইনাল না সরানোর অনুরোধ বিসিসিআইকে’। পুরুষ-মহিলা নির্বিশেষে সেই বিক্ষোভের মূল বক্তব্য শুধু ‘অনুরোধ’ নয়, বরং প্রশ্ন তোলা হচ্ছে আহমেদাবাদের প্রতি পক্ষপাতিত্বে ও দ্বিচারিতা প্রসঙ্গেও। এক ক্রিকেট সমর্থকের কথায়, “বিসিসিআই ইডেনকে বঞ্চিত করছে। কলকাতাবাসীর আশা ইডেনে ফাইনাল হবে। পাকিস্তানের সঙ্গে কলকাতার কোনও সীমান্ত নেই। গুজরাটের আছে। বাংলায় শান্তিশৃঙ্খলা বজায় আছে। তাহলে কোন যুক্তিতে ফাইনাল সরানোর কথা শোনা যাচ্ছে? বোর্ডের কাছে আমাদের অনুরোধ, কলকাতার প্রাপ্য যেন না কেড়ে নেওয়া হয়।” ইডেনের সামনে জড়ো হওয়া তরুণ ক্রিকেটাররাও সরব। সিএবি’র তরফ থেকে এর আগেই বোর্ডকে চিঠি লিখে জানানো হয়েছে, আগামী ৩ জুন ইডেন আইপিএল ফাইনাল আয়োজন করতে সব রকম ভাবে তৈরি। সেদিন শহরে কতটা কী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে, সেই সমস্ত তথ্য দিয়ে লেখা হল যে, শহরে সেদিন যদি অল্প-বিস্তর বৃষ্টিও হয়, তা হলেও ইডেন গার্ডেন্সের কাছে বন্দোবস্ত রয়েছে পুরো ফাইনাল আয়োজন করার। কথাটা ঠিকই। বাংলা ক্রিকেটমহলের কেউ কেউ বললেন, গ্রাউন্ড কভার থেকে শুরু করে ইডেনে যে উন্নত মানের সুপার সপার রয়েছে, তাতে অঝোর বৃষ্টি হলেও খেলা পঁয়তাল্লিশ মিনিটের মধ্যে শুরু করে দেওয়া সম্ভব। ভারতবর্ষের যে কোনও মাঠের তুলনায় ইডেনের নিকাশি ব্যবস্থা এতটাই উন্নত। ইডেনে বিক্ষোভে বিসিসিআই একটু হলেও ভাবতে বাধ্য।

এদিকে, ভারত ‘এ’ দলের নেতৃত্বে ঈশ্বরণ, রয়েছেন বাংলার আরও দু’জন, সুযোগ ঈশান-নায়ারকে, বাদ শ্রেয়স! ইংল্যান্ড সফরের জন্য ১৮ সদস্যের ভারত ‘এ’ দল ঘোষণা করল ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। নেতৃত্বে বাংলার অভিমন্যু ঈশ্বরণ। ঘরোয়া ক্রিকেটে ভাল পারফরম্যান্সের সুযোগ পেয়েছেন করুণ নায়ার। ইংল্যান্ড সফরের জন্য ভারত ‘এ’ দল ঘোষণা করল ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআই। ইংল্যান্ড লায়ন্সের বিরুদ্ধে দু’টি বেসরকারি টেস্ট রয়েছে ‘এ’ দলের। বাংলার ওপেনার অভিমন্যু ঈশ্বরণের নেতৃত্বে ১৮ সদস্যের দল ঘোষণা করা হয়েছে। গত বর্ডার-গাওস্কর ট্রফির ভারতীয় দলে থাকা ছ’জন রয়েছেন ‘এ’ দলে। ঈশ্বরণদের সঙ্গে ইংল্যান্ড যেতে পারেন ভারতীয় দলের কোচ গৌতম গম্ভীর। ‘এ’ দলের সহ-অধিনায়ক উইকেটরক্ষক ব্যাটার ধ্রুব জুরেল। গত বছরের শুরুতে ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট অভিষেক হয়েছিল তাঁর। দ্বিতীয় উইকেটরক্ষক হিসাবে দলে রয়েছেন ‘অবাধ্য’ ঈশান কিশন। রাখা হয়নি শ্রেয়স আয়ারকে। মনে করা হচ্ছিল রোহিত শর্মা এবং বিরাট কোহলির অবসরে সাদা বলের ক্রিকেটে তিনি এখনও দেশের অন্যতম সেরা মিডল অর্ডার ব্যাটার শ্রেয়স। ভাল ফর্মে থাকা সত্ত্বেও শ্রেয়স ১৮ জনের দলেও না থাকা কিছুটা হলেও বিস্ময়ের। ১৪টি টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে পাঁচ টেস্টের সিরিজ়ের দলে শ্রেয়সের থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। ২০১৭ সালের পর টেস্ট দলে সুযোগ না পাওয়া করুণ নায়ার সুযোগ পেয়েছেন ‘এ’ দলে। ঘরোয়া ক্রিকেটে ভাল পারফরম্যান্সের পুরস্কার পেলেন ৩৩ বছরের ব্যাটার। বিজয় হজারে ট্রফিতে আটটি ম্যাচে ৭৭৯ রান করেন নায়ার। পাঁচটি শতরান করেন। তার মধ্যে টানা চারটি ম্যাচে শতরান করেন তিনি। রঞ্জি ট্রফির ন’টি ম্যাচে বিদর্ভের হয়ে করেন ৮৬৩ রান। উল্লেখ্য, বীরেন্দ্র সহবাগ ছাড়া তিনিই এক মাত্র ভারতীয় যাঁর টেস্টে ত্রিশতরান রয়েছে। ২০১৬ সালে চেন্নাইয়ে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধেই ৩০৩ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছিলেন। ঈশ্বরণ ছাড়াও ‘এ’ দলে জায়গা পেয়েছেন বাংলার দুই জোরে বোলার আকাশ দীপ এবং মুকেশ কুমার। রুতুরাজ গায়কোয়াড়, যশস্বী জয়সওয়াল, নীতীশ কুমার রেড্ডি, সরফরাজ় খানে মতো ব্যাটারদের রাখা হয়েছে। বলা হয়েছে, দ্বিতীয় বেসরকারি টেস্টের আগে দলের সঙ্গে যোগ দেবেন শুভমন গিল এবং সাই সুদর্শন। জোরে বোলার হিসাবে আকাশ-মুকেশ ছাড়া রয়েছেন হর্ষিত রানা, খলিল আহমেদ, অনশুল কম্বোজ। নীতীশ ছাড়া অলরাউন্ডার হিসাবে নেওয়া হয়েছে শার্দূল ঠাকুর, হর্ষ দুবে এবং তনুষ কোটিয়ানকে। মুম্বইয়ের অভিজ্ঞ ক্রিকেটারকে আবার টেস্ট ক্রিকেটের জন্য বিবেচনা করছেন অজিত অগরকরেরা।

ভারত ‘এ’ দল: অভিমন্যু ঈশ্বরণ (অধিনায়ক), যশস্বী জয়সওয়াল, করুণ নায়ার, ধ্রুব জুরেল (সহ-অধিনায়ক, উইকেটরক্ষক), রুতুরাজ গায়কোয়াড়, সরফরাজ় খান, তুষার দেশপান্ডে নীতীশ কুমার রেড্ডি, শার্দূল ঠাকুর, ঈশান কিশন (উইকেটরক্ষক), মানব সুতার, তনুষ কোটিয়ান, মুকেশ কুমার, আকাশ দীপ, হর্ষিত রানা, খলিল আহমেদ, অনশুল কম্বোজ এবং হর্ষ দুবে। এ ছাড়া দ্বিতীয় বেসরকারি টেস্টের আগে দলের সঙ্গে যোগ দেবেন শুভমন গিল এবং সাই সুদর্শন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Popular Articles