Friday, May 23, 2025
spot_imgspot_img

Top 5 This Week

spot_img

Related Posts

ফের ‘জাল’ ওষুধের রমরমা ব্যবসা বাংলায়!‌ অ্যাজিথ্রোমাইসিন থেকে অ্যালপ্রাজোলাম, ছোটো রিটেইল দোকানে বিকেচ্ছে দেদার?‌

গুজরাটের ৫১ রকম জাল ওষুধ ঢুকে পড়েছে বাংলায়। সম্প্রতি ড্রাগ কন্ট্রোল বোর্ডের ল্যাবরেটরিতে ৫১টি ওষুধের নমুনা পরীক্ষা। সেগুলোর গুণগতমান অত্যন্ত নিম্নমানের খারপও বটে। রাজ্যে ফের পাওয়া গেল নিম্নমানের জাল ওষুধ। তালিকায় অ্যাজিথ্রোমাইসিনের মতো জীবনদায়ী অ্যান্টিবায়োটিকও। বাজেয়াপ্ত এই অ্যান্টিবায়োটিক প্রস্তুতকারী সংস্থার নাম এমএস স্কাই কিওর সলিউশন। কেরলের ইদ্দুকিতে কারখানা। গুজরাটের আমেদাবাদে তৈরি হওয়া গুরুত্বপূর্ণ প্রোবায়োটিকও জাল বেরিয়েছে। জাল ৫১ ওষুধের তালিকায় রয়েছে গ্যাস অম্বলের ওষুধ রেবেপ্রাজোল, ভিটামিন বি-এর ট্যাবলেট, স্নায়ুর ওষুধ অ্যালপ্রাজোলাম। নির্দিষ্ট ব্যাচ নম্বর দিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোল। রাজ্যের প্রতিটি খুচরো ও পাইকারি বিক্রেতাকে বাজার থেকে এই ওষুধ প্রত্যাহার করতে বলা হয়েছে। প্রতিটি ওষুধের দোকানে ব্যাচ নম্বর-সহ এই ওষুধের তালিকা টাঙিয়ে রাখতে বলেছে রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোল বোর্ড। চোরাগোপ্তা ওষুধ বিক্রিও করছে ছোটোখাটো রিটেইল সপগুলো বলে অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেলথের অধ্যক্ষ ডা. জয়দেব রায় জানান, এই ধরনের ওষুধ খেলে অসুখ সারবে না। অর্থাৎ একটি খারাপ মানের অ্যান্টিবায়োটিক কেউ খেলে ক্ষতিকর ব্যাকটিরিয়াটি মরবে না। যিনি খেয়েছেন তাঁর শরীরে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স ব্যাকটিরিয়া তৈরি হবে। পরবর্তীতে তাঁর শরীরে অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করবে না। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, কয়েক দিন বাদে বাদে ভেজাল ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে। যেখানে এই ধরনের ওষুধ তৈরি হচ্ছে সেই কারখানায় হানা দিয়ে উৎপাদন বন্ধ করতে হবে। খারাপ মানের ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থাকে ব্যান করতে হবে। রিটেইল সপগুলোকে নজর রাখা হচ্ছে। ইতিমধ্যে সেন্ট্রাল ড্রাগ কন্ট্রোলের ইমেইলে জাল ও ভুয়ো ওষুধ বিক্রির অভিযোগ জমা পড়েছে হাওড়ার ইছাপুরের এক রিটেইল সপের নামে। এমনকি সেই রিটেইল সপে ১৯৯৮ সাল থেকে ওষুধ কেনাবেচার নথিপত্র যথযথ মিলবে না বলেও আশঙ্কা প্রকাশ। সেন্ট্রাল ড্রাগ কন্ট্রোলের বিধি অনুযায়ী রিটেইল সপে যথাযথ ডিগ্রিধারী ফার্মাসিস্টও নেই বলে সন্দেহ প্রকাশ। এক্সপ্যয়রি ওষুধের তারিখ স্পিরিট দিয়ে মুছে বিক্রি করে দেওয়াও হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। যথাযথ রিপোর্ট জমা পড়েছে সেন্ট্রাল ড্রাগ কন্ট্রোলে।

অসাধু ওষুধ ব্যবসায়ী চিহ্নিতকরণ!‌ এবার খোদ হাওড়ার বুকে। দীর্ঘদিনের ভুক্তভোগীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ। দীর্ঘদিন অনৈতিক কাজকর্মে লিপ্ত রিটেইল ওষুধ ব্যবসায়ীকে চিহ্নিত করল খোদ জনতাই। এলাকার অধিকাংশ ভুক্তভোগী একপ্রকার বয়কট করেছে ওষুধের দোকানটিকে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। এমনিতেই ভেজাল ওষুধে ছেয়ে গেছে বাজার!‌ নিয়ন্ত্রণে দরকার কঠিন শাস্তি। একের পর এক অনৈতিক কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত উক্ত ওষুধ ব্যাবসায়ী বলে বিস্তর অভিযোগ। জ্বর জ্বালা হলে সাধারনত অসহায় মানুষ স্থানীয় ওষুধের দোকানের দ্বারস্থ হন। সেই অসহায়তার সুযোগ নিয়ে নানান দুর্নীতিমূলক কাজকর্ম করে চলেন বলে অভিযোগ ওষুধ ব্যবসায়ীর নামে। এলাকায় বহুবার ডেট পেরিয়ে যাওয়া ওষুধ ও ভুল ধুলোজমা ওষুধ দিয়ে একাধিবার এলাকায় প্রহারের শিকার অভিযুক্ত ওষুধ ব্যবসায়ী হতে হয়েছে বলে এলাকাবাসীর বিস্তর অভিযোগ। এলাকায় একদা ভুল ইনজেকশন দেওয়ার ফলে হাত ফুলে কালো হয়ে যাওয়ার ফলে বেধড়ক মারধোর করেন জনৈক এক ব্যক্তি। এছাড়াও অবৈধ পথে বড়বাজার থেকে আনত ওষুধ দিয়ে অসহায় মানুষদের চিকিৎসা করার মতো সিংহভাগ অনৈতিক কাজকর্মে লিপ্ত বলেও অভিযোগ। নিজের অতিনিম্ন মানের শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রমাণপত্র দেখতে চাইলেও মিথ্যাচারিতা ‘‌সার্টিফিকেট হারিয়ে গেছে।’‌ আপাদমস্তক মিথ্যাচারিতায় ভরা ওষুধ ব্যবসায়ী এলাকায় অপরের নামে মিথ্যা পরচর্চা ও পরনিন্দায় পারদর্শী বলেও বিস্তর অভিযোগ জনৈক অভিযুক্ত ওষুধ ব্যবসায়ীর নামে। এলাকায় রথযাত্রার মতো যে কোনও উৎসবকে কেন্দ্র করে অসহায় অংশগ্রহনকারী ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা তোলার বিস্তর অভিযোগ রয়েছে জনৈক ওষুধ ব্যবসায়ীর নামে। এবার প্রভাব খাটিয়ে সংগঠনের লোকেদের ভুল বুঝিয়ে মিথ্যাচারিতার মাধ্যমে সাংবাদিক হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে জনৈক ওষুধ ব্যবসায়ীর নামে।

অসাধু ওষুধ ব্যবসায়ীর সন্ধানে তৎপরতা চলছেই। ইতিমধ্যেই অলিতে গলিতে বেশ কিছু অসাধু ওষুধ ব্যবসায়ী বছরের পর বছর ধরে নকল ওষুধের অথবা জাল ওষুধের কারবার করে চলেছেন আড়ালে আবডালে বলে অভিযোগ। প্রতিবাদ করতে গেলে জনৈক ওষুধ ব্যবসায়ী মুখের ওপর বলে ‘‌রাজ্য সংস্থা বিসিডিএকে টাকা দেওয়া আছে। দেখতে পাওয়া যাচ্ছে স্টিকার সাঁটানো। কিচ্ছুটি করতে পারবে না কেউ।’‌ এই মূহুর্তে সবচেয়ে বড় সমস্যায় মানুষ। নকল ও জাল ওষুধ ধরতেই পারছেন না। বুঝতেও পারছেন না কোন দোকানে গেলে বিশ্বস্ততা মিলবে। এবার সরাসরি অভিযোগের তীর হাওড়া ইছাপুর ডুমুরজলা চত্ত্বরে অবস্থিত ওষুধের দোকানের দিকেই। দোকানের এক কোনে লুকিয়ে রাখা ‘‌ভায়াগ্রা’‌ ওষুধ সন্ধ্যা নামলেই লুকিয়ে বিক্রি শুরু হয়। ‘‌ভায়াগ্রা’ টাইপ ওষুধ রিটেইল সপে রাখার অনুমতি সন্দেহজনক। অথচ লুকিয়ে এই প্রকার ওষুধ এবং পার্শ্ববর্তী পরিচিতদের ভ্যালিয়াম টেন নামক ওষুধ বিক্রির বিস্তর অভিযোগ রয়েছে জনৈক ওষুধ ব্যবসায়ীর নামে। জ্বরের সর্দির ওষুধ চাইলেই, ক্যালপল বা ব্র‌্যান্ডেড প্রোডাক্টের বদলে দেওয়া হয়, ‘‌প্যালা ৬৫০ বা প্রি ৫০০’‌ ইত্যাদি নানান ওষুধ। উক্ত দোকানের মালিক এলাকার কোনও সংস্থার পদে নিজেকে পদে বহাল রেখে প্রভাবশালী তকমা জুড়ে ওষুধের অনৈতিক কাজকর্ম চালিয়ে গেছে যুগ ধরে। প্রচুর মানুষ অভিযোগ করতে গেলেই চোখ রাঙিয়ে বিতাড়িত করেন জনৈক ওষুধ ব্যাবসায়ী অনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত ব্যক্তি। সচরাচর এলাকার কোনও মানুষই আর পা রাখেন না এই রিটেইলটিতে। আশেপাশে কান পাতলে শোনা যায় ওষুধ নিয়ে ক্লেচ্ছা। সারা দিনই ইন্টারনেটে লুডো খেলে সময় অতিবাহিত করতে হয় জনৈক ওষুধ ব্যবসায়ীকে।

সাধারন মানুষ এই অসাধু ব্যাবসায়ীর কাছে আসতে ভয় পান। দৈনিক সেল লিস্ট দেখলে দেখা যাবে, প্রতিদিনে ওষুধ বিক্রির অঙ্ক। ৬০০-‌৮০০টাকার গন্ডি পার করে না। মাসে এক সপ্তাহের ডেইলি সেল ১৫০০ টাকা টপকায় না। এলাকার বহু মানুষের মুখে বিস্তর অভিযোগের পাহাড়, এই ওষুধ ব্যবসায়ীর দিকে। এলাকায় কান পাতলে শোনা যায়, ওই ওষুধের দোকানে গেলেই বিপদ। এমনিতেই তারিখ পেরিয়ে যাওয়া ওষুধের স্ট্রিপের তারিখকে রেকটিফায়েড স্পিরিট দিয়ে মুছে নিম্ন-‌শিক্ষিত মানুষদের মধ্যে বিক্রি করে দেওয়ার অভ্যাস রয়েছে বলে অভিযোগ। যেটা মুছে ফেলা যায় না, সেই তারিখের অংশ কেটে নর্দমায় ফেলে দিয়ে, বাকিটা বিক্রিও করার অভিযোগ রয়েছে জনৈক অসাধু ব্যাবসায়ীর নামে। দোকানের পরিবেশের দিকে যদি রাজ্যের ওষুধ সংস্থা খোঁজ নেন তাহলেই দেখা যাবে, অসংখ্য ধুলো ময়লা জমা ওষুধগুলোও থাকে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে। যা সেবন করলে মানুষের রোগ বাড়বে বই সারবে না। দোকানে নেই কোনও বৈধ ফার্মাসিস্ট। ফার্মাসিস্টের যথার্থ ডিগ্রি ছাড়াই যে কারুর লাইসেন্স দোকানে লটকে দোকান চলছে বলেও অভিযোগ এলাকায়। জাল ওষুধ নকল ওষুধ!‌ রিটেইলে নেই ডিগ্রিধারী ফার্মাসিস্টও?‌ অসাধু ছোট রিটেল সপে কম ইনভেস্টে বেশী লাভ?‌ মুখে বলে ওষুধ নিয়ে বিপদে সাধারন মানুষ!‌ নকল ওষুধ। ডাহা ফেল গুণমান পরীক্ষা্য়। রোগ সারা দুরস্থ বাড়ছে সংক্রমণ। সবচেয়ে বেশী দায়ী অলিতে গলিতে থাকা ছোট দোকানগুলি। ব্র‌্যান্ডেড প্রোডাক্ট রাখার বদলে জেনেরিক প্রোডাক্ট ব্যবহার করে চলছে জাল কারবার। এমনকি কোনও ছোট রিটেইল সবে থাকছে না যথার্থ ডিগ্রিধারী ফার্মাসিস্টও। ধুলো ময়লায় আবৃত ওষুধের দোকানগুলোতে স্বাস্থ্যও পরীক্ষা সঠিকভাবে করে না ড্রাগ কন্ট্রোল বলে অভিযোগ। লাইসেন্স রিনিওয়ালের সময় পকেটে টাকা গুঁজে দিয়ে কাজ সারেন অসাধু রিটেইলাররা বলে বিস্তর অভিযোগের পাহাড়। নির্ধারিত ব্র‌্যান্ডেড ওষুধ চাইলেই, বলা হয় ‘‌ওমুক ওষুধ অন্য কোম্পানির আছে, একই কাজ করবে, খালি দেখতে আলাদা।’‌

ওষুধ মানুষের জীবন রক্ষার রসদ। আজকের দিনে ওষুধই ভেজালে পূর্ণ! কলকাতা থেকে শহরতলি। এমনকি গ্রামাঞ্চলের মানুষকে বোকা বানিয়ে জাল ওষুধের রমরমা। মন রাখতে হবে, কোনও ওষুধের দোকানদার নিজেকে যেন ডাক্তার না মনে করেন?‌ অসহায় মানুষ রিটেইল সপের দোকানদারকে এসে বলেন, ‘‌ডাক্তারবাবু, আমার এই হয়েছে, ওষুধ দিন।’‌ দোকানদার যেন বলেন, সোজা ডাক্তারের কাছে যান। কড়া নির্দেশিকা। ওষুধের দোকানে যথযথ ফার্মাসিস্ট লাইসেন্সধারী ফার্মাসিস্টকেই রাখার উপর কড়াকড়ি নির্দেশ। কলকাতা জুড়ে নাকি ছেয়ে গেছে ভেজাল ওষুধ। কলকাতা থেকে উদ্ধার বিপুল পরিমাণ জাল ওষুধ। এরই মাঝে জাল ওষুধ ব্যবসায়ীর হদিশ মিলেছে। দীর্ঘদিন ধরেই চলেছে এই প্রকার অসাধু ওষুধ ব্যবসায়ীর কর্মকাণ্ড। ইনজেকশন দেওয়া থেকে শুরু করে পেসার মাপা নিজেই সারেন মানু্ষের গলা কেটে। অসহায় মানুষদের থেকে পেসার মেপে সর্বনিম্ন ৫০-‌১০০ টাকা দাবি করেন, পাশাপাশি ইনজেকশনেও একই ভাবে ব্যবসা করেন বলে অভিযোগ। দোকানের বাইরে গেলে এই কাজের জন্য ধার্য দ্বিগুন তিনগুন বলেও অভিযোগ। এমনকি দোকানের রেফ্রিজেটরটিও ত্রিশ বছরের বেশী অতিক্রান্ত, সঠিক তাপমাত্রা বহন করে না, টেটভ্যাক থেকে অন্যান্য জীবনদায়ী ইনজেকশন ওষুধ রাখা হয় এই অর্ধবিকল ফ্রিজেই। মাঝেমধ্যেই ইনজেকশন থাকা অবস্থাতেই দিনের পর দিন ফ্রিজ বন্ধ থাকে। এগুলোই মানুষের শরীরে পুশ করা হয় বলে অভিযোগ। বিপুল কমিশনে রক্ত পরীক্ষার জন্য সাধারন মানুষের উপর প্রেসার প্রয়োগ। একবার কাবু করতে পারলেই, ফোন করে ডেকে নেওয়া হয় রক্তচোষাকে। মোটা টাকা কমিশন পাওয়ার লোভাতুর ওষুধ ব্যবসায়ী মানুষকে জোর জরবদস্তি রক্ত পরীক্ষায় বাধ্য করানোর অভিযোগ রয়েছে। শিশুদের ওষুধ দিতেও পিছুপা হন না। এছাড়াও বিভিন্ন দিকে অনৈতিক কাজকর্মে লিপ্ত থাকার উদাহরণ প্রত্যক্ষ অভিযোগ। সাধারন মানুষ এভাবেই ঠকে যায় এইপ্রকার অসাধু ব্যবসায়ীকে বিশ্বাস করে। মানুষকে ঠকিয়ে বৎসরে দুবার বড় ট্যুর করে ভন্ডামি প্রদর্শণ জনৈক অসাধু ব্যবসায়ীর। অসহায় মানুষদের রক্ষা করতে প্রশাসন সহ রাজ্য ও দেশীয় ওষুধ নিয়ামক সংস্থার হস্তক্ষেপ অতি জরুরী বলে মনে করছেন প্রত্যেক প্রতারিত মানুষজন।

ওয়েস্ট বেঙ্গল ড্রাগ কন্ট্রোল বোর্ডের তরফে কড়া নির্দেশিকা, ওষুধের শিশি/স্ট্রিপ সন্দেহজনক মনে হলেই ফোন করুন ডাইরেক্টরেট অফ ড্রাগ কন্ট্রোলে। নম্বর ২২২৫-২২১৩, ২২২৫-২২১৪। কোনও দোকান থেকে কেনা ওষুধ সন্দেহজনক মনে হলে, অথবা দীর্ঘদিন খাওয়ার পরেও তা কাজ না করলে ইমেল করেও জানানো যাবে অভিযোগ। মেইল করা যাবে tellddcwb@rediffmail.com। দেওয়া হল একাধিক নির্দেশিকা। খোদ স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফে। রিটেইল সপেও ঝোলাতে হবে নন-স্ট‌্যান্ডার্ড কোয়ালিটি ওষুধের তালিকা। ওষুধ মানুষের জীবন রক্ষার রসদ। আজকের দিনে ওষুধই ভেজালে পূর্ণ! কলকাতা থেকে শহরতলি। এমনকি গ্রামাঞ্চলের মানুষকে বোকা বানিয়ে জাল ওষুধের রমরমা। মন রাখতে হবে, কোনও ওষুধের দোকানদার নিজেকে যেন ডাক্তার না মনে করেন?‌ অসহায় মানুষ রিটেইল সপের দোকানদারকে এসে বলেন, ‘‌ডাক্তারবাবু, আমার এই হয়েছে, ওষুধ দিন।’‌ দোকানদার যেন বলেন, সোজা ডাক্তারের কাছে যান। কড়া নির্দেশিকা। ওষুধের দোকানে যথযথ ফার্মাসিস্ট লাইসেন্সধারী ফার্মাসিস্টকেই রাখার উপর কড়াকড়ি নির্দেশ। কলকাতা জুড়ে নাকি ছেয়ে গেছে ভেজাল ওষুধ। কলকাতা থেকে উদ্ধার বিপুল পরিমাণ জাল ওষুধ। কয়েকদিন আগেই সেন্ট্রাল ড্রাগ কন্ট্রোলের অভিযানে ধরা পড়েছিল ৬ কোটি ৬০ লক্ষ টাকার জাল ওষুধ। এই সব ওষুধের ওপর বিভিন্ন দেশের স্টাম্প। জাল ওষুধের একটা অংশের উপর রয়েছে বাংলাদেশের স্ট্যাম্পও। এমনকি স্ট্যাম্প দেওয়া আয়ারল্যান্ড, তুরস্ক, আমেরিকার জাল ওষুধও। ওষুধ আমদানির কোনও বৈধ নথি দেখাতে পারেনি সংস্থা। এমএস কেয়ার অ্যান্ড কিওর ফর ইউ নামে সংস্থাই নজরে। এই ঘটনায় এক মহিলাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃত মহিলাকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতে পাঠানো হয় বলে খবর। উদ্ধার হওয়া ওষুধের গুণমান যাচাই হচ্ছে কোয়ালিটি কন্ট্রোলে।

বহুদিন ধরেই জাল ওষুধে বাজার ছেয়ে যাওয়ার অভিযোগ। সেপ্টেম্বরেই বাজারে রমরমিয়ে বিক্রি হওয়া বেশ কিছু ওষুধ গুণমান পরীক্ষায় ডাঁহা ফেল। বহুল ব্যবহৃত ওষুধ ‘প্যান ডি’, ক্যালসিয়াম সাপলিমেন্ট ‘শেলক্যাল’ ইত্যাদিএ। ডায়াবেটিসের ওষুধ এমনকি উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের ওষুধও গুণমান পরীক্ষায় ফেল। বুকের ব‌্যথা কমানোর র‌্যানোজেক্স কিংবা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের ওষুধ টেলমা এইচ। বিগত কয়েক মাসে গুণমান পরীক্ষায় ব‌্যর্থ একাধিক জীবনদায়ী ওষুধ। চিন্তায় সাধারণ মানুষ। আমজনতাকে সুরক্ষা দিতে নম্বর প্রকাশ করল ডাইরেক্টরেট অফ ড্রাগ কন্ট্রোল ওয়েস্ট বেঙ্গল। ওয়েস্ট বেঙ্গল ড্রাগ কন্ট্রোল বোর্ডের তরফে নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, ওষুধের শিশি/স্ট্রিপ সন্দেহজনক মনে হলেই ফোন করুন ডাইরেক্টরেট অফ ড্রাগ কন্ট্রোলে। নম্বর ২২২৫-২২১৩, ২২২৫-২২১৪। কোনও দোকান থেকে কেনা ওষুধ সন্দেহজনক মনে হলে, অথবা দীর্ঘদিন খাওয়ার পরেও তা কাজ না করলে ইমেল করেও জানানো যাবে অভিযোগ। মেল আইডিতে মেইলও করা যাবে tellddcwb@rediffmail.com। ‘সেন্ট্রাল ড্রাগ স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন’ সূত্রে খবর, গত তিন মাসে ৩০০টির উপর ওষুধ ল‌্যাবরেটরিতে গুণমান পরীক্ষায় ব‌্যর্থ। পশ্চিমবঙ্গের একাধিক সংস্থার তৈরি ওষুধ। উদ্বিগ্ন রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তরও। গুণগত মানের পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ ওষুধ ব্যবহার বন্ধ করতে সম্প্রতি নির্দেশিকা জারি করেছিলেন রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম। পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ ব্যাচের ওষুধের তালিকা ও তথ্য সব সরকারি হাসপাতাল, সেন্ট্রাল মেডিক্যাল স্টোর,পাইকারি বিক্রেতা এবং ডিস্ট্রিবিউটরদের নির্দেশিকা দিয়ে জানাতে হবে রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোলকে। এই সব ওষুধ ব্যবহার না করা হয় কোনওভাবেই।

স্বাস্থ‌্য দপ্তরের নির্দেশ, যে সমস্ত ওষুধ ল‌্যাবরেটরিতে গুণমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেনি, ‘এনএসকিউ’ অর্থাৎ নট স্ট‌্যান্ডার্ড কোয়ালিটি ওষুধ যেন কোনওভাবেই পাইকারি এবং খুচরো বিক্রেতাদের কাছ থেকে বিক্রি না হয়। নিশ্চিত করতে হবে ‘স্ট্রেট ড্রাগ কন্ট্রোল অথোরিটি’-কে। রাজ্যের প্রতিটি ওষুধের দোকানে অবিলম্বে সেই এনএসকিউ বা নট স্ট‌্যান্ডার্ড কোয়ালিটি ড্রাগের তালিকা ঝোলানোর নির্দেশ স্বাস্থ‌্য দপ্তরের। প্রতিটি ওষুধের দোকান এই তালিকা ঝুলিয়েছে কি না, তা দেখতে ওষুধের দোকানে অতর্কিতে হানা দেবে ওয়েস্ট বেঙ্গল ড্রাগ কন্ট্রোল বোর্ড। ওষুধ ব‌্যবসায়ীদের সংগঠন, বেঙ্গল কেমিস্ট অ‌্যান্ড ড্রাগিস্ট অ‌্যাসোসিয়েশনের তরফে জানানো হয়েছে, কিছু সংস্থা এমনভাবে ওষুধ জাল করছে যে সাধারণ চোখে জাল ওষুধ আর আসল ওষুধ আলাদা করা বেশ কষ্টসাধ্য। বেঙ্গল কেমিস্ট অ‌্যান্ড ড্রাগিস্ট অ‌্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক পৃথ্বী বোসের সাফাই, জাল ওষুধ গড়ার কারিগররা এতটাই নিখুঁতভাবে বানাচ্ছে, ব‌্যবসায়ীরাও ধরতে পারছেন না অনেক ক্ষেত্রে।‌ এমনকি তাদের এই ওষুধ বিক্রির জন্য চোরাগোপ্তা দোকানদারও রয়েছেন। যাদের কাছে লুকিয়ে জাল ওষুধ সাপ্লাই দেওয়া হয়।

কাশির ওষুধে বিষাক্ত রাসায়নিক নিয়ে সতর্ক করেছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হু। নির্দেশিকা জারি ভুয়ো লিভারের ওষুধেও। ভারত ও তুরস্কের বাজার ওষুধের নাম ডেফিটেলিও। দেশের ওষুধের দোকানগুলিতে রমরম করে বিক্রি হচ্ছে এই ব্র্যান্ডের জাল ওষুধ। ডেফিটেলিও ওষুধ হেপাটিক ভেনো-অকালসিভ রোগের চিকিৎসায় কাজে লাগে। লিভারের অসুখের থেরাপিতে, অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন থেরাপিতেও প্রয়োগ করা ওষুধ ভুয়ো। ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন ছাড়া সেইসব ওষুধ সাধারণের হাতে এলে এবং তা ব্যবহার করলে চরম ক্ষতি হতে পারে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে প্রাণ সংশয়ের ঝুঁকিও বাড়বে। ডেফিটেলিও ড্রাগ জার্মানি বা অস্ট্রিয়া থেকে আমদানি করা হয়। ব্রিটেন থেকেও আসে এই ওষুধ। ভুয়ো ওষুধে ছেয়ে গেছে দেশের বাজার। কাশির ওষুধ নিয়েও সাবধান করেছে হু। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানাচ্ছে, যেসব কাফ সিরাপ ওষুধের দোকান থেকে মুখে বলে নিয়ে আসা হয় বা ঘন ঘন খাওয়া হয় তার মধ্যেও নানারকম উপাদান থাকে যা মাত্রাতিরিক্ত শরীরে ঢুকলে বিপদ হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কিছু কাফ সিরাপে কোডেইন এবং ফোলকোডিন নামে উপাদান পাওয়া গেছে যা শরীরে ঢুকলে নেশার মতো বোধ হয়। স্নায়ুগুলো ঝিমিয়ে পড়তে থাকে। চিন্তাভাবনা গুলিয়ে যায়। ব্রেন সেলগুলোকে কব্জা করে ফেলে এই ধরনের রাসায়নিক উপাদান। চার বছরের কম বয়সের কোনও শিশুকে কাফ সিরাপ খাওয়ানো বিপজ্জনক। প্রাপ্তবয়স্ক যাদের কোমর্বিডিটি আছে বা সম্প্রতি কোনও অপারেশন হয়েছে তাদের শরীরে এইসব রাসায়নিক উপাদান ঢুকলে তা বিপদ আরও বাড়াবে। সবদিক থেকেই সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

পশ্চিমবঙ্গের সর্বত্র জাল ও নকল এবং ভেজাল ওষুধে ছেয়ে গেছে। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার ওষুধের গুণমানে তদন্ত ও সমীক্ষা চালিয়ে প্রায় ৩৫০ রকমের জাল ও ভেজাল ওষুধ দিনের পর দিন ব্যবহার করেছেন রাজ্যের কোটি কোটি মানুষ! পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ঝাড়খন্ড, ওড়িশা এবং প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশ থেকেও অসংখ্য মানুষ কলকাতায় আসেন চিকিৎসার জন্য। ভেজাল ওষুধের প্রভাব বৃদ্ধিতে রীতিমতো আতঙ্ক ও উদ্বেগ প্রকাশ করছে এখানকার চিকিৎসক মহল। হাওড়ার আমতা থেকে সম্প্রতি উদ্ধার প্রেসারের ওষুধের জমা করা ডিরেক্টরেট অব ড্রাগ কন্ট্রোলের রিপোর্টে চাঞ্চল্য। রিপোর্ট অনুযায়ী, ওই প্রেসারের ওষুধ সম্পূর্ণ জাল। উচ্চ রক্তচাপজনিত সমস্যায় চিকিৎসকদের প্রেসক্রাইব করা ওষুধের অন্যতম ‘‌টেলমা এএম ৪০’‌ নামক ওষুধ নিয়েই কালোবাজারি। ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থার তরফ থেকে ডিরেক্টরেট অব ড্রাগ কন্ট্রোলকে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ জাল, ব্যাচ নম্বর ০৫২৪০৩৬৭। এই ব্যাচ নম্বরের সঙ্গে আসল ওষুধের ব্যাচ নম্বরের সম্পূর্ণ মিল রয়েছে। অর্থাৎ ব্যাচ নম্বর জাল করা হয়েছিল। প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে গিয়ে ওষুধের ওপর ছাড় দিচ্ছেন বহু ব্যবসায়ী। সেই সুযোগে দেশ তথা রাজ্যে জাল ওষুধের রমরমা ব্যবসা ক্রমশ বাড়ছে। জাল ওষুধ চেনার উপায় জানা নেই সাধারণ মানুষ এমনকি ওষুধ ব্যবসায়ীদেরও। এ কথা স্বীকার করেছে বেঙ্গল কেমিষ্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্টস অ্যাসোসিয়েশন বিসিডিএ। কড়া নজরদারি চালাতে দোকানে আচমকা পরিদর্শন করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোলকে। গাফিলতি ধরা পড়লে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও নির্দেশিকায় প্রকাশ।

ভেজাল ওষুধ নিয়ন্ত্রণে দরকার কঠিন শাস্তি। প্রত্যন্ত অঞ্চলের ফার্মেসিগুলোতে নকল বা ভেজাল ওষুধ বিক্রি দেদার। ওষুধ খেয়ে রোগী সুস্থ্য হওয়ার পরিবর্তে আরও রোগাক্রান্ত হচ্ছেন। রোগিকে মৃত্যুর মুখোমুখিও হতে হচ্ছে। ভেজাল ওষুধ বিক্রি বন্ধে আইন প্রয়োগ, কঠিন শাস্তির ব্যবস্থাসহ কার্যকর পদক্ষেপে মত বিশেষজ্ঞদের। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও গবেষকরা বলছেন, ভেজাল বা নকল ওষুধের কারণে শরীরে ভয়াবহ রোগ দানা বাঁধে। লিভার, কিডনি, হার্ট, ব্রেন থেকে শুরু করে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নকল ওষুধ কেনাবেচার কারণে মানুষের জীবন প্রশ্নের মুখে। নকল, ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ উৎপাদন ও বিপণন নিয়ন্ত্রণে নেই। অ্যালোপ্যাথিক থেকে শুরু করে আয়ুর্বেদিক ও হার্বাল সব ধরনের ওষুধ নকল হচ্ছে। ওষুধ খেয়ে লিভার, কিডনি বিকল, বিকলাঙ্গ, মস্তিষ্কের জটিলতাসহ বিভিন্ন সংক্রামক রোগে মৃত্যু বাড়ছে। খুচরা ওষুধ বিক্রেতারা অধিক লাভের আশায় নকল ওষুধ বিক্রি করেন। নকল ওষুধ সাধারনত নিন্ম শ্রেণীর মানুষদের দেওয়া হয়, যাদের এ বিষয়ে ধারণা নেই। ওষুধ-ব্যাবসার সঙ্গে জড়িত ও সংঘবদ্ধ চক্র খুঁজে বের করে প্রয়োজনীয় মনিটরিং, কার্যকর শাস্তি ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্র‌্য়োজন। বেঙ্গল কেমিস্টস্ অ্যান্ড ড্রাগিষ্টস্ অ্যাসোসিয়েশনের তরফে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য নির্দেশিকা, পরিচিত দোকান থেকে বারকোড দেখে এবং বিল করে ওষুধ নিতে হবে। তাহলে ভেজাল ওষুধ অনেকটাই রোধ করা সম্ভব হবে। পাশাপাশি ভিনরাজ্য থেকে যে ওষুধগুলি আসছে সেদিকেও নজর দিতে হবে। ফলে এই সচেতনতা আগামীদিনে মানুষকে সুস্থ থাকতে অনেকটাই সাহায্য করবে বলে মনে করছেন সচেতন নাগরিকরা।

জাল ওষুধ নকল ওষুধ!‌ রিটেইলে নেই ডিগ্রিধারী ফার্মাসিস্টও?‌ অসাধু ছোট রিটেল সপে কম ইনভেস্টে বেশী লাভ?‌ মুখে বলে ওষুধ নিয়ে বিপদে সাধারন মানুষ!‌ নকল ওষুধ। ডাহা ফেল গুণমান পরীক্ষা্য়। রোগ সারা দুরস্থ বাড়ছে সংক্রমণ। বড় দোকানগুলো তো আছেই। সবচেয়ে বেশী দায়ী অলিতে গলিতে থাকা ছোট দোকানগুলি। ব্র‌্যান্ডেড প্রোডাক্ট রাখার বদলে জেনেরিক প্রোডাক্ট ব্যবহার করে চলছে জাল কারবার। এমনকি কোনও ছোট রিটেইল সবে থাকছে না যথার্থ ডিগ্রিধারী ফার্মাসিস্টও। ধুলো ময়লায় আবৃত ওষুধের দোকানগুলোতে স্বাস্থ্যও পরীক্ষা সঠিকভাবে করে না ড্রাগ কন্ট্রোল বলে অভিযোগ। লাইসেন্স রিনিওয়ালের সময় পকেটে টাকা গুঁজে দিয়ে কাজ সারেন অসাধু রিটেইলাররা বলে বিস্তর অভিযোগের পাহাড়। ধরা পড়েছে জাল ৫৩টি ওষুধ। তালিকায় ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ নিরাময়ে ব্যবহৃত ওষুধ ক্লাভহাম ৬২৫, গ্যাসের জন্য ব্যবহৃত প্যান ডি, জ্বরের জন্য ব্যবহৃত প্যারাসিটামল ট্যাবলেট আইপি ৫০০ ইত্যাদি ওষুধ। সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্স কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন-র রিপোর্টে প্রকাশ্যে তথ্য। বাজারে প্রচুর ওষুধ রয়েছে সেগুলির গুণগত মান যাচাই করার জন্য প্রতি মাসে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করেন সেন্ট্রাল ড্রাগ স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন-র আধিকারিকরা। আগস্টেই ‘‌নট অফ স্ট্যান্ডার্ড কোয়ালিটি অর্থাৎ এনএসকিউ অ্যালার্ট-র তালিকা প্রকাশ করেছে সিডিএসসিও। তালিকায় প্রথমেই ৪৮টি ওষুধের নাম, দ্বিতীয় তালিকায় ৫টি ওষুধ। তালিকায় থাকা ব্র্যান্ড বড় কিছু ওষুধ তৈরির সংস্থার নাম জড়িয়ে। এর মধ্যে একটি সংস্থা আবার রাষ্ট্রায়ত্ত। গ্যাসের সমস্যায় ভরসাযোগ্য ওষুধ হিসেবে প্যান-ডি চলে চিকিৎসকদের পরামর্শেই। ডায়াবেটিসের ওষুধ গ্লিমেপিরাইড, হাই প্রেসারের ওষুধ টেলমিসার্টান রয়েছে তালিকায়। গুণগত মানের নিরিখে উত্তীর্ণ হতে ব্যর্থ হয়েছে ক্লাভহামও। ওষুধ প্রস্তুতকারী এক সংস্থার সাফাই, সমস্ত ব্যাচের ওষুধের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে সেগুলি তাঁদের তৈরি নয় এবং সেগুলি জাল। ঘটনাটি নিয়ে তদন্তের দাবি।

প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে গিয়েই ওষুধের উপরে দেদার ছাড় দিচ্ছেন বহু ব্যবসায়ী। আর সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে দেশ তথা রাজ্যে জাল ওষুধের রমরমা ক্রমশ বাড়ছে। জাল ওষুধ চেনার উপায় ঠিক মতো জানা নেই সাধারণ মানুষ তো বটেই, ওষুধ ব্যবসায়ীদেরও। চোরাগোপ্তা দোকানদাররাও নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য বিক্রিও করছেন জাল ওষুধ। এমনটাই স্বীকার করল বেঙ্গল কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্টস অ্যাসোসিয়েশন অর্থাৎ বিসিডিএ। গুণগত মানের পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ ওষুধ ব্যবহার বন্ধ করতে বৃহস্পতি রাতেই নির্দেশিকা জারি করেছেন রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম। জানানো হয়েছে, পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ ব্যাচের ওষুধের তালিকা ও তথ্য সমস্ত সরকারি হাসপাতাল, সেন্ট্রাল মেডিক্যাল স্টোর, পাইকারি বিক্রেতা এবং ডিস্ট্রিবিউটরদের নির্দেশিকা দিয়ে জানাতে হবে রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোলকে। সেন্ট্রাল ড্রাগ স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজ়েশন অর্থাৎ সিডিএসসিও সূত্রের খবর, গত তিন মাসে প্রায় ৩০০টি ওষুধ গুণমানের পরীক্ষায় ফেল করেছে। যার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের একাধিক সংস্থার তৈরি ওষুধও রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরও। নির্দেশ হয়েছে, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, হাসপাতাল থেকে শুরু করে দোকানেও প্রকাশ্যে ঝোলাতে হবে অনুত্তীর্ণ সব ওষুধের তালিকা। তা রাখতে হবে স্বাস্থ্য দফতরের ওয়েবসাইটেও। ওই সব ওষুধ বেচাকেনা হচ্ছে কিনা, নজরদারি চালাতে দোকানে আচমকা পরিদর্শন করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোলকে। গাফিলতি ধরা পড়লে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে। রাজ্যের যে সমস্ত ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থার তৈরি ওষুধ অনুত্তীর্ণের তালিকায় রয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছেন স্বাস্থ্যসচিব। ধুলো ময়লায় আবৃত ওষুধের দোকানগুলোতে নজরদারী চালানোর নির্দেশ। ওষুধের দোকানগুলোর স্বাস্থ্যও পরীক্ষা করার নির্দেশ। অসাধু ব্যবসায়ীর গলিতে ঘুপচি কারবার করে দেদার ভ্যাকসিনও গ্রামের দোকানগুলোতে গিয়ে সাপ্লাই দেন।

বিসিডিএ-এর মুখপাত্র শঙ্খ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘জাল বা ভুয়ো ওষুধের সমস্যা গুরুতর। যা দেশের জনগণের স্বাস্থ্য এবং ওষুধ ব্যবসা, দু’টিরই ক্ষতি করছে। দ্রুত এর বিরুদ্ধে সরকারের পদক্ষেপ করা প্রয়োজন। ৩৫ শতাংশ জাল ওষুধ তৈরি হয় এ দেশে। মিশর এবং চিনেও জাল ওষুধ তৈরির রমরমা কারবার চলে। সম্প্রতি যে ওষুধগুলি অনুত্তীর্ণ হয়েছে, তার বেশির ভাগ হাসপাতালে সরবরাহ করা হয়। অল্প কিছু ওষুধ দোকানে বিক্রি হয়। ব্যবসায়ীরাও বুঝতে পারেন না জাল ওষুধ কোনটি। সংগঠনের কোনও সদস্য জাল ওষুধের কারবারে ধরা পড়লে সাসপেন্ড করা হয়। ব্যবসায়ী থেকে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে জেলায় জেলায় প্রচার চালাবে বিসিডিএ। বিসিডিএ-র কর্তারা জানাচ্ছেন, দেশে মাত্র ৩০০টি ওষুধে বারকোড দেওয়া রয়েছে। কিন্তু তাতেও নকল হচ্ছে। জাল ওষুধ আটকাতে সিডিএসসিও-কে আরও কড়া হতে হবে বলেও দাবি বিসিডিএ-র। সেই কাজে তারাও ড্রাগ কন্ট্রোলের সঙ্গে যৌথ ভাবে কাজ করতে ইচ্ছুক বলে জানায় সংগঠন।’‌’‌ বিসিডিএ-র তরফেও দাবি, মানুষ সস্তায় ওষুধ কিনুন। কিন্তু সেটা কখনওই গুণগত মানের সঙ্গে আপস করে নয়। বড় ওষুধ ব্যবসায়ীরা ২০-৩০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দিচ্ছেন। তাঁদের সঙ্গে পাল্লা দিতে গিয়ে মাঝারি ও ছোট ব্যবসায়ীরা আনকোরা ডিস্ট্রিবিউটরের থেকে ওষুধ কিনে মুনাফা লুটে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। এতেই বিপত্তি। শিডিউল কে’ তালিকাভুক্ত অ্যান্টিসেপটিক ট্যাবলেট বা ক্যাপসুল, মাউথওয়াশ, অ্যান্টি-ফাঙ্গাল ক্রিম, কাশির লজেন্স, অ্যান্টি অ্যালার্জি, জ্বর-ব্যথা, নাকের স্প্রে, খুশকির শ্যাম্পু, কোষ্ঠকাঠিন্যের সিরাপ, অ্যান্টি-ব্যাক্টিরিয়াল, অ্যান্টিসেপটিক লোশন এবং গর্ভনিরোধক বিভিন্ন ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে মুদিখানা দোকানে। বিসিডিএ-র সম্পাদক পৃথ্বী বসু বলেন, ‘‘ওষুধ সস্তায় পাওয়ার জন্য সবার আগে জিএসটি প্রত্যাহার করতে হবে। কেন্দ্রই একমাত্র পারে ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থার উপরে চাপ তৈরি করে দাম আয়ত্তে রাখতে। একই ওষুধের তিন জায়গায় তিন রকমের দাম কেন হবে?’’

২০২৫ বছরের প্রথম দু মাসে দেশের বিভিন্ন সংস্থার তৈরি প্রায় ৩০০ ওষুধ কেন্দ্রীয় ড্রাগ কন্ট্রোলের গুণমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেনি। উত্তীর্ণ হতে না পারা সংস্হার মধ্যে এই রাজ্যের একাধিক সংস্থার ওষুধ রয়েছে বলে খবর। খোলা বাজার থেকে এইসব ওষুধের নমুনা নিয়ে পরীক্ষা চালায় কেন্দ্রীয় ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা। পরীক্ষাগারে পরীক্ষার পর সেগুলিকে ‘নট ফর স্ট্যান্ডার্ড কোয়ালিটি ড্রাগস’ ঘোষণা করা হয়। উত্তীর্ণ হতে না পারা ওষুধের তালিকায় নামী সংস্থার বহুল প্রচলিত ব্র্যান্ডের একাধিক ওষুধ রয়েছে বলে রিপোর্টে প্রকাশ। চিকিৎসকদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের মধ্যেও উদ্বেগ ছড়িয়েছে। বাজারে জাল ওষুধের রমরমা নিয়ে জল্পনার মধ্যেই সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশনের ওষুধ পরীক্ষার সাম্প্রতিক রিপোর্ট নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করেছে। বিভিন্ন কারণে ড্রাগ কন্ট্রোলের ছা়ড়পত্র পায়নি নামী দামী ব্রান্ডের একাধিক ওষুধ। কাফ সিরাপ, সাধারণ স্যালাইন থেকে শুরু করে পক্সের টিকা, বিভিন্ন এন্টিবায়োটিক ঔষধও রয়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা গেছে প্যাকেটের গায়ে ছাপানো দাবি অনুয়ায়ী ভেতরে ওষুধ মিলছে না। আবার অভিযোগ কোনও কোন ও ট্যাবলেট খাবার পর শরীরে গিয়ে দ্রবীভূত হচ্ছে না, শক্তই থেকে যাচ্ছে। আবার কোনওটায় যে পরিমাণ ওষুধ আছে বলে দাবি করা হচ্ছে তার মাত্রা কম থাকছে। কোনও কোনও ওষুধে অপ্রয়োজনীয় দূষিত পদার্থ পাওয়া গেছে। সেই সমস্ত ওষুধগুলির সম্পর্কে সতর্কতা জারি করেছে কেন্দ্রীয় ড্রাগ কন্ট্রোল বিভাগ।

সম্প্রতি জাল ওষুধের কারবার ধরাও পড়ছে হাওড়ায়। রমরমিয়ে চলছিল জাল ওষুধের কারবার। ড্রাগ কন্ট্রোল দপ্তরের আধিকারিকদের হানায় উদ্ধার হয়েছে বিপুল পরিমাণ জাল ওষুধ। সেই সঙ্গে জাল ওষুধ বিক্রির অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে একজনকে। হাওড়া জেলার ড্রাগ কন্ট্রোল অফিস সূত্রে জানা গিয়েছে, আমতার একটি ওষুধ সরবরাহকারী সংস্থা জাল ওষুধের ব্যবসা করছিল। একটি নামী ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থার রক্তচাপের জাল ওষুধ বিক্রির অভিযোগ এসেছিল আমতার একটি ওষুধ সরবরাহকারী সংস্থার বিরুদ্ধে। এই অভিযোগ পাওয়ার পরে, বৃহস্পতিবার ওই সংস্থার গুদামে হানা দেন রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোল দপ্তরের আধিকারিকরা। ওই গুদামে হানা দিয়ে প্রায় ২০ লক্ষ টাকার জাল ওষুধ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি জাল ওষুধ বিক্রির অভিযোগে ওই ওষুধ সরবরাহকারী সংস্থার মালিক বাবলু মান্নাকে গ্রেপ্তার করেছে ড্রাগ কন্ট্রোল বিভাগের আধিকারিকরা। মুদি দোকানেও মেডিসিন বিক্রি হচ্ছে বলে অভিযোগ!
কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশে ৩০০টি প্রয়োজনীয় ওষুধের উপর কিউআর কোড লাগিয়ে দেয় সংশ্লিষ্ট ওষুধ কোম্পানি। সম্প্রতি একটি নামী ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থার নজরে আসে তাদের তৈরী রক্তচাপ ওষুধের কিউআর কোড জাল করা হয়েছে। এরপরেই ওই ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থার পক্ষ থেকে রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোলে অভিযোগ জানানো হয়। এই নিয়ে তদন্ত করে ড্রাগ কন্ট্রোল বিভাগের আধিকারিকরা জাল ওষুধ সরবরাহকারী সংস্থা হিসেবে আমতার একটি ওষুধ সরবরাহকারী সংস্থার সন্ধান পায়। তার পরেই বৃহস্পতিবার বিকালে ওই ওষুধ সরবরাহকারী সংস্থার গুদামে হানা দিয়ে ২০ লক্ষ টাকার জাল ওষুধ বাজেয়াপ্ত করেন। ড্রাগ কন্ট্রোল আধিকারিক সূত্রে খবর এই জাল ওষুধ বিহার থেকে আনা হয়েছে। ওই সংস্থা ১ কোটি টাকার বেশী জাল ওষুধ বাজারে বিক্রি করেছে। সেইসব জাল ওষুধ কোথায় দেওয়া হয়েছে এবং এই ঘটনার পিছনে আর কারা জড়িত আছে তা নিয়ে তদন্ত করছেন ড্রাগ কন্ট্রোল বিভাগের আধিকারিকরা।
বেঙ্গল কেমিস্টস অ্যান্ড ড্রাগিস্টস অ্যাসোসিয়েশন বিসিডিএর উদ্বেগ প্রকাশ, ইতিমধ্যে প্রচুর ওষুধের নকল ছড়িয়ে গিয়েছে বাজারে।

প্যান ডি, প্যারাসিটামল, গুণগত পরীক্ষায় ফেল ৫৩টি ওষুধ। ওষুধগুলি কেনার জন্য প্রেসক্রিপশনেরও দরকার হবে না। তালিকায় রয়েছে প্রায় ৪০০ ওষুধ। অনলাইনে ওষুধ বিক্রি নিয়েও উদ্বেগ। অনলাইনে অর্ডার করা যে ওষুধ বাড়িতে আসছে সেটি সঠিক কি না বা ঠিক মতো সংরক্ষণ করা হয়েছে কি না তার কোনও নিশ্চয়তা নেই। অনুত্তীর্ণ ওষুধগুলোর সঠিকভাবে পরিশোধন করা তরল দিয়ে বানানো হয়নি, আবার কোনোটার ট্যাবলেটের গায়ে কালো কালো ছোপ। কোনোও ট্যাবলেট ক্যাপসুলের আবার ল্যামিনেশন-এর ত্রুটি কোনোটায় একই স্ট্রিপে থাকা কিছু ট্যাবলেট এক রঙের, কিছু ট্যাবলেট অন্য রঙের। কোনও কোনও ওষুধ আবার ব্র্যান্ড জাল করে বানানো বলে অভিযোগ। এর মধ্যে একাধিক বহুজাতিক সংস্থার ব্র্যান্ডেড ওষুধও আছে। সমস্ত ব্যাচের ওষুধগুলোর বিষয়ে সতর্কতা জারি করেছে কেন্দ্রীয় ড্রাগ কন্ট্রোল বিভাগ।

বাজারে রমরমিয়ে বিক্রি ভেজাল ওষুধ! আসল-নকল চেনার পরামর্শ বিশিষ্ট চিকিৎসকদের। ভুয়ো ওষুধের জাল থেকে কীভাবে বাঁচাবেন অসহায় সাধারন মানুষ? পরামর্শ চিকিৎসকদের। সারা দেশে নকল ওষুধের সমস্যা। এক বছরে গুণমান পরীক্ষায় প্রায় ১ হাজারটি ওষুধ ফেল। এ কলকাতার সেন্ট্রাল ড্রাগ ল্যাবের পরীক্ষায় ৩১২টি ওষুধের নমুনা মানহীন বলে প্রমাণিত। এ হেন পরিস্থিতিতে মানুষের সামগ্রিক স্বাস্থ্য সংকট।

প্যাকেজিং পরীক্ষা: মূল ওষুধের প্যাকেজিং সাধারণত উচ্চমানের হয়। যদি প্যাকেটের রঙ, ফন্ট, বা লোগো অস্পষ্ট বা ভুল মনে হয়, অবশ্যই নকল হওয়ার সম্ভবনা।
মেয়াদ উত্তীর্ণ তারিখ: ওষুধের মেয়াদ উত্তীর্ণ তারিখ এবং ব্যাচ নম্বর স্পষ্টভাবে মুদ্রিত থাকে। যদি এটি অস্পষ্ট বা অনুপস্থিত হয় তবে সতর্ক হোন।
মূল্যের পার্থক্য: মূল ওষুধের তুলনায় যদি কোনো ওষুধের দাম অত্যন্ত কম হয়, তাহলেই নকল হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।
ওষুধের রং ও আকার: ওষুধের রং, আকার বা গন্ধে কোনো অস্বাভাবিকতা থাকলেই নকল হতে পারে। ওষুধ কেনার পর দেখুন, সেই ওষুধ সহজে ভেঙে যাচ্ছে কিনা অথবা সেই ওষুধের গায়ে ব্লিস্টার তৈরি হচ্ছে কিনা। ম্যানুফ্যাকচারিং এবং ওষুধ স্টোরেজের সময় সঠিক তাপমাত্রায় না রাখলে অনেক সময় ওষুধ ভেঙে যেতে পারে। ক্যাপসুলের ক্ষেত্রে দেখা যেতে পারে সেটি অসমতল কিনা।
কিউ আর কোড স্ক্যান: ওষুধের পিছনের নথি থেকে কিউ আর কোড অবশ্যই স্ক্যান করে সেই ওষুধটির কম্পোজিশন ও কম্পানির তথ্য জেনে নিন। ওষুধটির ব্যাচ নাম্বার ও যথাযথ লাইসেন্স আছে কিনা তা চেক করে নেওয়া জরুরী।

ব্র্যান্ডের ওষুধে ভেজাল থাকে তাহলে ডাক্তারদের পরামর্শ, সুগার হোক বা প্রেশার, নিয়মিত খাওয়ার ওষুধ নকল কিনা তা বারবার স্যাম্পলিং ছাড়া বোঝার আর কোনও উপায় নেই। জীবনযাত্রার মান অপরিবর্তিত রেখে নির্দিষ্ট ওষুধটি খেয়ে প্রতিদিন সকালে প্রেশার চেক করতে হবে। কারণ, একটি ওষুধ শরীরে কাজ দেবে কিনা তা অনেকগুলি বিষয়ের উপর নির্ভর করে। কাজেই প্রত্যক্ষ পর্যবেক্ষণ ছাড়া কোনও উপায় নেই।
প্রকৃত অর্থে ওষুধ ভেজাল কিনা তা পরীক্ষা করা একমাত্র ল্যাব টেস্টের সাহায্যেই সম্ভব। দেশে ল্যাব সংখ্যা বাড়ানো প্রয়োজন। দেশের নিম্নবিত্ত মানুষরা ওষুধের ক্ষেত্রে পুরোপুরি ভাবেই সরকারের উপর নির্ভরশীল। কাজেই সরকারকে আরো বেশি তৎপর হয়ে মানুষের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে হবে। বললেন চিকিৎসকরা

পাঠকদের প্রতি আবেদন: প্রতিবেদনটি চিকিৎসকের মতামতের ভিত্তিতে ও সমস্থ ওষুধের সংগঠন ও নানান অভিযোগের ভিত্তিতে লেখা। সম্প্রতি ধারাবাহিকভাবে হতে চলা সমস্যা সম্পর্কে সাধারণ ধারণার উপর আলোকপাত ও সাধারন মানুষকে ওয়াকিহাল করা। ব্যক্তিবিশেষে প্রতিটি সমস্যার চিকিৎসা এবং নিরাময়ের পদ্ধতি পৃথক। যে কোনও সমস্যায় শুধুমাত্র এই প্রতিবেদনের কথায় ভরসা না রেখে, ব্যক্তিগতভাবে চিকিৎসকের বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে এবং অবশ্যই নিজস্ব সুবুদ্ধি প্রয়োগ করা জরুরী। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবরের ভিত্তিতে চিরুনি তল্লাশিও চলছে অক্লান্তভাবে। সেন্ট্রাল ড্রাগ স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন ও বেঙ্গল কেমিস্টস অ্যান্ড ড্রাগিস্টস অ্যাসোসিয়েশন এই দুই কেন্দ্র ও রাজ্য সংস্থা তৎপরতার সঙ্গে খোঁজখবর চালাচ্ছে জোর কদমে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Popular Articles