পুনর্বাসনের অভাবে কালো ধোঁয়ার অন্ধকারে গৃহহীনদের বসবাস, পাশেই ঝলমলে আলোয় মন্দির উদ্বোধন! মানুষকে গৃহহীন করে ভগবানের পুজো কখনই কাঙ্ক্ষিত নয়। দিঘায় দুই ভিন্ন চিত্র। গৃহহীনদের বসবাসের করুন ছবি। অপরদিকে ঝলমলে আলোকোজ্জ্বল মন্দিরের উদ্বোধন। কুড়ি একর জায়গার উপর প্রায় আড়াইশো কোটি টাকা খরচ করে গড়ে ওঠা জগন্নাথধাম। দিঘার প্রশাসনিক বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা, পুরীর আদলে দিঘায় গড়ে তোলা জগন্নাথ মন্দির ১১৬বি জাতীয় সড়ক সংলগ্ন ভগীব্রহ্মপুর মৌজায় ২০ একর জমিতেই। চিহ্নিতকরণ দিঘা শংকরপুর উন্নয়ন পর্ষদের। সাজসাজ রব। চন্দননগরের আলোকসজ্জায় সেজে উঠেছে সৈকতনগরী দিঘার গেট দিয়ে প্রবেশ করে পৌঁছে যাওয়া যাবে জগন্নাথধামে। চারিদিকে শুধুই আলোর রোশনাই। কিন্তু অন্ধকারে কারা? এই জগন্নাথ মন্দিরের জন্য জমি অধিগ্রহণে যাঁদের উচ্ছেদ হতে হয়েছে, আজ তাঁরা অন্ধকারে। কারণ তাঁদের পুনর্বাসন এখনও মেলেনি। তাই তো গরিব পরিবারগুলির চোখে আজ জল। অনেক আশা ছিল, দিদির কাছে। উচ্ছেদের সময় প্রশাসন এবং তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা তাঁদের বলেছিলেন ৬ মাসের মধ্যে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা হবে। কিন্তু দিঘার সমুদ্রসৈকত দিয়ে অনেক জল বয়ে গেলেও জোটেনি পুনর্বাসন, গুরুতর অভিযোগ।

দিঘায় সদলবলে হাজির বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জগন্নাথ মন্দির পরিদর্শন সেরে মুখ্যমন্ত্রী বিশ্রাম নিচ্ছেন। কারণ এরপর অক্ষয় তৃতীয়ার দুপুরে উদ্বোধন। রমরমা আয়োজন। মন্ত্রী আমলা থেকে শুরু করে চতুর্থ শ্নেণীর নেতা। সকলেই হাজির। ভিড় জমাতে গাড়ি ম্যাটাডোর ভাড়া করে মিছিলের মতো লোকজন হাজির করা হচ্ছে দিঘায়। বিনে পয়শায় সমুদ্র দেখার স্বাদও মিটবে। সরকারের প্রয়োজন ভিড়ভাট্টা। ভোটের আগে নতুন চমক দিতে তৈরী মমতা সরকার। ধর্মের দোহাই দিয়ে নিজেদের হিন্দুত্ববোধ জাগানোর প্রতিদ্বন্দিতা। এবার ভোটের বড় লড়াই, সবচেয়ে বড় হিন্দু কে বা কারা।
সালটা ছিল ২০১৮। তারিখ ৬ ডিসেম্বর। দিঘার প্রশাসনিক বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা, পুরীর আদলে দিঘায় জগন্নাথ মন্দির গড়ে তোলা হবে। ২০১৯ সালে ১১৬বি জাতীয় সড়ক সংলগ্ন ভগীব্রহ্মপুর মৌজায় ২০ একর জমি মন্দিরের জন্য চিহ্নিত করে দিঘা শংকরপুর উন্নয়ন পর্ষদ। কুড়ি একর জায়গার উপর প্রায় আড়াইশো কোটি টাকা খরচ করে গড়ে উঠেছে জগন্নাথধাম। এখানেই অগনিত গরিব পরিবারগুলির বাসস্থান ছিল। অসহায় মানুষগুলোর জীবন জীবিকাও ওখানেই চলত। আজ ১৯টি পরিবার ভিটেহারা। আশ্রয়হীন। অসহায়তার চিত্র স্পষ্ট। হাসপাতালের পাঁচিলের গায়ে পলিথিন ঝুলিয়ে অস্থায়ীভাবে বসবাস করছেন নিরুপায় মানুষগুলো।

ওই এলাকা থেকে প্রায় ৭০টি ঝুপড়ি দোকান উচ্ছেদ করা হয় বলে অভিযোগ। এখনও মেলেনি পুনর্বাসন। গৃহহীন বরুণ জানা, গণেশ জানা, নিতাই পাত্র, পূর্ণিমা জানা, বাপি শ্যামল, সুমিতা পাত্ররা। হাসপাতালে পাঁচিলের লাগোয়া ইতিউতি ছেঁড়া পলিথিন, বাঁশ এবং টিনেঘেরা ঘরে আশ্রয় নিয়েছেন ওঁরা। উচ্ছেদ হয়ে এখানে আসা বাপি শ্যামলদের গলায় এখন ভয়মিশ্রিত সুর, ‘এখনও হুমকি মেলে এখান থেকে উঠে যাওয়ার। নাহলে... নাহলে কী হবে বুঝতেই পারবে?’ সুমিতা পাত্রদের দুচোখ বেয়ে জলের ধারা, ‘মন্দির হয়েছে সেটা ভালো কথা। অনেক দর্শনার্থী আসলে পর্যটনের উন্নতি হবে। কিন্তু দিদির উপর অনেক ভরসা। তাই জানতে চাই, আমাদের কী হবে? আমাদের জীবিকারছু ব্যবস্থা করলে ভালো হতো।’ সিপিএমের পূর্ব মেদিনীপুরের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পরিতোষ পট্টনায়েক বলেন, ‘মানুষকে গৃহহীন করে ভগবানের পুজো কখনই কাঙ্ক্ষিত নয়। এটা দুর্ভাগ্যজনক। কারণ মানুষের মধ্যেই ঈশ্বর বাস করেন। এটা তো মুখ্যমন্ত্রী বারবার নানা সভা–সমাবেশ থেকে বলেছেন। তাহলে এমন ঘটনা ঘটল কেমন করে? আমরা প্রশাসনের সর্বস্তরে বিষয়টি জানাব। গৃহহীনদের ঘর পাইয়ে দেব।’

দিঘায় জগন্নাথধাম ঘিরে উৎসবের আমেজ। জিবলিতে মজেছেন নেতা-মন্ত্রীরা! সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানকে আরও রঙিন করে তুলতে এবার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআইতে তৃণমূল নেতারা। ‘জিবলি’ আর্টে মজেছেন। নিজেদের সোশাল মিডিয়ায় সেসব ছবিও পোস্ট করেছেন মলয় ঘটক, মনোরঞ্জন ব্যাপারি, সাবিত্রী মিত্ররা। ব্যাকগ্রাউন্ডে দিঘার জগন্নাথ মন্দির। ‘জিবলি’ ছবিতে আনন্দ লুটছেন মন্ত্রী নেতারা। জগন্নাথ মন্দির সামনে রেখে বসিরহাট দক্ষিণের ডঃ সপ্তর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায়, বলাগড়ের মনোরঞ্জন ব্যাপারি, মুরারইয়ের মোসারফ হোসেন-সহ প্রায় ৫০ জন বিধায়ক এই বিশেষ ছবি ব্যবহার করেছেন। জগন্নাথ মন্দির এবং তার পবিত্র নিদর্শনগুলি নিয়ে তৈরি এআই-নির্মিত অ্যানিমেটেড ভিডিও পোস্ট করা হচ্ছে। আলোকমালায় সজ্জিত দিঘা। আলোয় ভাসছে জগন্নাথ মন্দির। চারদিকে বেজে চলেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা, ইন্দ্রনীল সেনের গাওয়া জগন্নাথের গান – ‘তোমায় মোদের আস্থা, তোমায় মোদের বিশ্বাস, তোমায় ভালবাসা। পুণ্য করো, পুণ্য করো, পুণ্য করো। ধরায় এসো, ভালবাসো। জয় জগন্নাথ। জয় জগন্নাথ। জয় জগন্নাথ জয় হে।’ কলকাতা থেকে দিঘা পর্যন্ত ১৮৫ কিলোমিটার পথে অসংখ্য তোরণ। অক্ষয় তৃতীয়ার পুণ্যলগ্নে প্রাণপ্রতিষ্ঠা প্রভু জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার। মহাযজ্ঞে ১০০ কুইন্টাল আম ও বেল কাঠ এবং ২ কুইন্টাল ঘি। যজ্ঞকুণ্ডে কলস স্থাপন। বিভিন্ন তীর্থস্থান থেকে মঙ্গল কলসে আনা জল। মহাযজ্ঞের সমাপ্তির পর তিন দেবদেবীকে সুসজ্জিত খাটে ঘুমের ব্যবস্থা। ৩০ তারিখ তাঁদের ঘুম ভাঙিয়েই প্রাণপ্রতিষ্ঠা-স্নানপর্ব ও পুণ্যাভিষেক। ৫৬ ভোগ-প্রসাদ প্রভু জগন্নাথকে। মন্দির সামনে চেয়ার ও কার্পেট বিছানো। নৃত্যশিল্পী ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়, নচিকেতা, জিৎ গঙ্গোপাধ্যায়দের মঙ্গলে অনুষ্ঠান। শিল্পপতিদের নির্দিষ্ট হোটেলে রাখার সুব্যবস্থা। মন্দিরে আগতদের যাতে গরমে কষ্ট না হয়, তাই গামছা দেওয়া হবে। প্রথমে ১২ হাজার গামছার আয়োজন থাকলেও পরে ২২ হাজার গামছার ব্যবস্থা। মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট নির্দেশ কোনও সাধারণ মানুষের কষ্ট না হয়। অতিথি আপ্যায়ন থেকে গাড়ি পার্কিংয়ের খুঁটিনাটি সবটাই তিনি খতিয়ে দেখেছেন। তাহলে, বাসস্থানহীন অসহায় মানুষগুলোর কথা একবার ভেবে দেখেছেন কী মুখ্যমন্ত্রী? বড় প্রশ্ন।

২২ একরেরও বেশি এলাকা জুড়ে গড়ে ওঠা দিঘার জগন্নাথ মন্দির নির্মাণে আনুমানিক ২৫০ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে, যা সম্পূর্ণভাবে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তহবিল থেকে ব্যয় করা হচ্ছে। অক্ষয় তৃতীয়ার শুভক্ষণে উদ্বোধন দিঘার জগন্নাথ মন্দির। গত শুক্রবার বিভিন্ন রকমের অনুষ্ঠান। মঙ্গল বিশেষ যজ্ঞের আয়োজন। বুধে শুভ উদ্বোধনের পর একাধিক যজ্ঞ। অক্ষয় তৃতীয়ার দিন মাহেন্দ্রক্ষণ ২০ মিনিট। বেলা ১১ টা ১০ মিনিট থেকে ১১ টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত শুভক্ষণ। বিগ্রহের চারদিকে ঘেরা সোনা, রুপো, তামার তার। তিন ধাতুরই কার থাকবে প্রধান পুরোহিতের কোমরেও। পুজোর বিশেষ প্রক্রিয়ার পর তৈরি হবে যজ্ঞকুণ্ড, কুম্ভকুণ্ড। মাহেন্দ্র ক্ষণের ২০ মিনিটের মধ্যে দেববিগ্রহের সর্বাঙ্গে কুশস্পর্শ। জগন্নাথমূর্তির প্রাণ প্রতিষ্ঠা পর্ব। জগন্নাথ দেবের সঙ্গে প্রাণ প্রতিষ্ঠা হবে রাধা কৃষ্ণেরও। রুদ্ধ দরজার ভিতরে হবে প্রাণ প্রতিষ্ঠা। সেখানে শাস্ত্রজ্ঞ, সন্ন্যাসী, সাধুরাই থাকবেন। বিশেষ এক নির্দিষ্ট সময়ে জগন্নাথদেবের প্রাণ প্রতিষ্ঠার পরই জগন্নাথের স্নান ও বস্ত্র পরিধানের প্রক্রিয়া শুরু। অর্পণ করা হবে ভোগ। দেবতাকে ৫৬ ভোগ অর্পণ। দেবতার জন্য অর্পণ গজা, প্যাঁড়ার সঙ্গে রসগোল্লা। অক্ষয় তৃতীয়ার দিন বিকেল ৫ টা থেকে ৫ টা ১০ মিনিটের মধ্যে দ্বারোদ্ঘাটন করবেন মুখ্যমমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সন্ধ্যায় দেবতার আরতি। পুরীর মন্দিরের মতোই দিঘার জগন্নাথ মন্দির তৈরি হয়েছে সম্পূরা ঘরানায়। রাজস্থানের গোলাপি বেলেপাথর দিয়ে মন্দির তৈরি। নির্মাণ কাজে রাজস্থানের অন্তত ৮০০ দক্ষ কারিগর। পুরীর মতো দিঘার জগন্নাথ মন্দিরেও রয়েছে লক্ষ্মীমন্দির, রয়েছে আলাদা ভোগশালা। অশ্বদ্বার, ব্যাঘ্রদ্বার, মূল প্রবেশ দ্বার, সহ মোট ৪ দ্বার রয়েছে মন্দিরে। প্রবেশ দ্বারের সামনে রয়েছে ১৮ মুখী ৩৪ ফুট লম্বা অরুণস্তম্ভ। মাথায় রয়েছে অরুণামূর্তি। সিংহদ্বারে ঢুকলেই পুরীর মন্দিরের মতো দেখা যাবে জগন্নাথদেবের মূর্তি। দিঘার মন্দিরে ভোগমণ্ডপ, ১৬ স্তম্ভের উপরে নাটমন্দির। নাট মন্দিরের পরে ৪ স্তম্ভের উপর দাঁড়িয়ে জগমোহন। মূল গর্ভগৃহে সিংহাসনে জগন্নাথদেব, বলরাম দেব ও সুভদ্রার মূর্তি। মূর্তি পাথরের হলেও পুজো করা হবে নিমকাঠের মূর্তিকে। ভোগ মণ্ডপ আর নাট মন্দিরের মাঝে গরুড় স্তম্ভ। নাট মন্দিরের দেওয়ালে কালো ছোট ছোট দশবতারের মূর্তি। মন্দিরের গায়েও অসংখ্য কারুকাজ। এত আনন্দ আর আয়োজন! কাদের জন্য?

বুধে অর্থাৎ অক্ষয়তৃতীয়ার দিনে দ্বারোদঘাটন দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের। মঙ্গলে মহাযজ্ঞে শামিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পূর্ণাহুতি, নিজের হাতে আরতি। উড়ল ধ্বজাও। মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতেই মন্দিরের দ্বারোদঘাটন ও জগন্নাথদেবের প্রাণপ্রতিষ্ঠা। পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের বিধান অনুযায়ী পুরীর রাজেশ দৈতাপতির হস্তক্ষেপেই। মহাযজ্ঞে। পূর্ণাহুতির পরে মমতা বলেন, ‘‘সমস্ত ধর্ম-বর্ণের মানুষ এসেছেন এখানে। প্রত্যেকেই আমাদের অতিথি। ধর্ম কখনও মুখে প্রচার করে হয় না। ধর্মে হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়ার জিনিস। মা-মাটি-মানুষ ভাল থাকলে আমি ভাল থাকব। তাই সকলের হয়ে প্রার্থনা করছি।’’ মুখ্যমন্ত্রী জানান, বুধবার বেলা আড়াইটে থেকে অনুষ্ঠান শুরু হবে। ৩টের সময় দ্বার উদ্ঘাটন রয়েছে। তার পর ৫ মিনিটের জন্য মন্দির খুলে দেওয়া হবে।

তার পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। মন্দিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রয়েছেন তৃণমূলের একঝাঁক নেতা, সাংসদ, বিধায়ক। রয়েছেন তৃণমূলের তারকা সাংসদ রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে জুন মালিয়া, বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ। মূল যজ্ঞমঞ্চের অদূরে মঞ্চে দেখা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর ভাই বাবুন বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। টলিউডের নামী প্রযোজক শ্রীকান্ত মোহতা, গায়ক নচিকেতা চক্রবর্তী, অভিনেতা ও চিত্রপরিচালক অরিন্দম শীল, দেবলীনা কুমার, শিল্পপতি রুদ্র চট্টোপাধ্যায় প্রমুখকে দেখা গিয়েছে মন্দিরের কাছে তৈরি মঞ্চে। মমতা বলেন ‘‘বুধবার অনুষ্ঠান আছে। সে জন্য অদিতি মুন্সি, গায়িকা, বিধায়ক এসেছে। ডোনা গাঙ্গুলি, জিৎ গাঙ্গুলি এসেছে। দেব, রচনা, দেবলীনা, সকলেই এসেছে।’’ যজ্ঞের সময় মুখ্যমন্ত্রীর পাশে ছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মা, মমতার ভ্রাতৃবধূ লতা বন্দ্যোপাধ্যায়।