Friday, May 23, 2025
spot_imgspot_img

Top 5 This Week

spot_img

Related Posts

নতুন রকমের হাঁটায় হার্ট থাকবে ভাল, ঝরবে ওজন!‌ ইন্টার্ভাল ওয়াক ও এলিফ্যান্ট ওয়াক সুস্থ থাকার চাবিকাঠি

নতুন রুটিনে হাঁটা। হার্ট থাকবে ভাল। ঝরবে ওজন। দ্রুত হাঁটা। ধীরে হাঁটা। হাঁটা অভ্যাস। ইংরেজিতে ইন্টার্ভাল ওয়াকিং। ধীরে হাঁটলেও ওজন কমবে। দ্রুত হাঁটলে বেশি ক্ষণ দম ধরে রাখতে পারা যায় না! দ্রুত হাঁটা না ধীরে। ইন্টার্ভাল অর্থাৎ ব্যবধান মেনে হাঁটা। পালা করে গতি বদলানো। প্রথমে কয়েক মিনিট স্বাভাবিক গতির তুলনায় দ্রুত হাঁটতে হবে। তার পর খানিক ক্ষণ একেবারে গতি কমিয়ে হাঁটা। খানিক ক্ষণ এ ভাবে হাঁটার পর আবার গতি বাড়িয়ে হাঁটার রুটিনই ‘ইন্টার্ভাল ওয়াকিং’। হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের ওয়েবসাইট হার্ভার্ড হেলথ পাবলিশিং গবেষণপত্রে চিকিৎসকের কথায়, দ্রুত হাঁটার কথা বলা হচ্ছে কারণ এর ফলে ব্যক্তির হৃৎস্পন্দনের গতি বাড়তে পারে। এই নিয়মের মধ্যেই আরও একটি নিয়মের বা রুটিনের সংযোজন হয়েছে সম্প্রতি। ৫-৪-৫ রুটিনে হাঁটা। হৃৎস্পন্দন বৃদ্ধি করতে জন্য প্রথমে ৫ মিনিট দ্রুত হাঁটতে হবে, অথবা দৌড়তে হবে। তার পর ৪ মিনিট ধীরে ধীরে হাঁটতে হবে। দমের ঘাটতি পূরণ করতে এই ৪ মিনিট যথেষ্ট। হৃদ্‌যন্ত্রের কর্মক্ষমতাকে অব্যাহত রাখতে তাই পরের ৫ মিনিটে ফের সেই গতির সঙ্গে হৃৎস্পন্দনের গতির সামঞ্জস্য রাখতে হবে। সারা দিনে দুই বা তিন বার মতো এই রুটিনটি অভ্যাস করলেই ৩০-৪৫ মিনিটের শরীরচর্চা সম্পন্ন। জিমের বা ট্রেডমিলের কোনও প্রয়োজন পড়ে না। একটানা ধীরে হাঁটা, জগিং করা বা দৌড়নোর তুলনায় ইন্টার্ভাল ওয়াকিংয়ের উপকারিতা বেশি। কারণ, এতে কোনওটিই অতিরিক্ত নয়। দু’ধরনের গতির ভারসাম্য বজায় রাখার ফলে একই সঙ্গে হাই ইন্টেনসিটি ইন্টার্ভাল ট্রেনিং এবং অ্যারোবিক এক্সারসাইজ। গবেষণায় বলছে, ইন্টার্ভাল ওয়াকিংয়ের ফলে হার্টের স্বাস্থ্য উন্নত হচ্ছে। ৬৫ থেকে ৮০ বছরের মানুষদের মধ্যে যাঁরা ইন্টার্ভাল ওয়াকিং এবং অন্যান্য ইন্টার্ভাল ওয়ার্কআউট করেছেন, হার্টের কার্যকারিতা বেড়েছে, বার্ধক্যজনিত পেশিক্ষয় রোধ করা সম্ভববর হয়েছে।

এলিফ্যান্ট ওয়াক বা গজগমন। এ হল আরও এক কার্যকর পদ্ধতি। শারিরীক সমস্যার মুশকিল আসান! এই ব্যায়ামেই দূর ব্যথাবেদনা। স্পোর্টস নিউট্রিশনিস্টের পরামর্শ, সকলের জন্যই এই ব্যায়াম কার্যকরী। কোনও রকম ঝুঁকি এড়াতে সব সময়ে প্রশিক্ষক বা বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে থেকে ব্যায়াম করা উচিত। আক্ষরিক অর্থেই গজগমন অর্থাৎ, সত্যিই হাতির মতো হাঁটা। অপ্রস্তুত হওয়ার ভয়ে রাজি হবেন না বোধ হয়। কিন্তু হাতির মতো হাঁটার উপকারিতা শুনলে কাল থেকেই এই ব্যায়াম অভ্যাস করতে পারেন। হাতির মতো হাঁটা বলতে এখানে ধীরে চলার কথা বলা হচ্ছে না। এমনকি হামাগুড়ি বা চারপেয়েদের মতোও নয়। হাত দু’টি কেবল নীচের দিকে ঝুলিয়ে ঝুঁকে পড়তে হবে সামনে দিকে। ইংরেজিতে এই ব্যায়ামটিকে এলিফ্যান্ট ওয়াক বললেও এখানে হাঁটার দরকার পড়ে না। হাঁটার ভঙ্গী করতে হয় কেবল। ক্রীড়াবিষয়ক পুষ্টিবিদ বা স্পোর্টস নিউট্রিশনিস্টের কথায়, কাঁধ, পিঠ, কোমর, পায়ের বিভিন্ন পেশিকে সক্রিয় রাখার জন্য হাতির মতে চলন শরীরচর্চা খুব কার্যকরী। এতে পেশিগুলি প্রসারিত হয়ে নমনীয় হয়ে ওঠে। স্ট্রেচ করতে করতে হাঁটার ফলে শরীর আরও বেশি সক্রিয় থাকে। পেশি শক্ত হয়ে যাওয়ার সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। দাঁড়ানো অবস্থা থেকে সামনের দিকে নীচে ঝুঁকে পড়তে হবে। চেষ্টা করতে হবে, হাতদু’টি যাতে পায়ের সামনের মাটিকে ছুঁতে পারে। শুরুর দিকে মাটি ছুঁতে না পারলে সামনে একটি টুল রেখে তার উপরে হাত রেখে করা যায়। মাটি বা টুল, যেখানে হোক, হাতের তালু দু’টি দিয়ে ভাল করে ভর দিতে হবে। তার পর দু’টি পায়ের হাঁটু অল্প ভাঙতে হবে। এক বারে নয়। একটির পর একটি। বার বার এটি করতে হবে। হাঁটতে থাকেলেও জায়গা থেকে নড়ছেন না পা। ধীরে ধীরে এক বার বাঁ পায়ের হাঁটু ভাঙা, পরের বার ডান পায়ের হাঁটু ভাঙার পদ্ধতিই এলিফ্যান্ট ওয়াক। শরীরের সঠিক ভঙ্গিমা বিঘ্নিত হওয়ার কারণে ঘাড়, পিঠ, কোমর, পশ্চাৎদেশে ব্যথা হয় অনেকের। পুষ্টিবিদ বলছেন, সেই সমস্যা এড়াতে ভঙ্গিমা ঠিক করা দরকার। আর তার জন্য দরকার এলিফ্যান্ট ওয়াকের মতো ব্যায়াম। শরীরের গতিশীলতা এবং নমনীয়তা বৃদ্ধি করতে পারে। রোজ এই ব্যায়াম করলে শিরদাঁড়া, কাঁধ, পশ্চাৎদেশের পেশির নমনীয়তা বাড়ে। শরীরকে সক্রিয় রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ শরীরের ভারসাম্য এবং সমন্বয়। এই ব্যায়ামের সময়ে হাঁটু দু’টিকে সামনে পিছনে করার অভ্যাসের ফলে ভারসাম্য এবং সমন্বয় উন্নত হয়। শরীরের নীচের অংশে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে। ফলে সেই অংশে অক্সিজেন এবং পুষ্টির জোগান ভাল হয়। আর সেই কারণে ক্রমাগত ব্যথা হওয়ার সমস্যা থেকে রেহাই মিলতে পারে। ফিটনেস বাড়ানোর জন্য এই ব্যায়ামের মতো সহজ ব্যায়াম কমই আছে। খুব বেশি হলে একটি টুল বা চেয়ার লাগবে। এ ছাড়া আরও কিছুর প্রয়োজন নেই। যখন-তখন চোট লাগার সম্ভাবনাও কম। সকলেরই জন্য এই ব্যায়াম অভ্যাস দারুন। কোনও রকম ঝুঁকি এড়াতে সব সময়ে প্রশিক্ষক বা বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে থেকে ব্যায়াম অভ্যাস করতে পারলে আরও সুরক্ষিত থাকা যায়।‌

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Popular Articles