সিন্ধু চুক্তি। হুঙ্কার দিলেন জলশক্তি মন্ত্রী সিআর পাটিল। জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের উপর সন্ত্রাসী হামলা। ২৬ জন নিরীহ মানুষকে হত্য। পাল্টা ভারতের। পাকিস্তানে এক ফোঁটাও জল প্রবাহিত হতে দেবে না। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সিআর পাটিল বলেন, ‘আমরা নিশ্চিত করব যে ভারত থেকে এক ফোঁটাও জল পাকিস্তানে প্রবাহিত যাতে না হয়।’ ১৯৬০ সালে পাকিস্তানের সাথে সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত। ভারতের সিদ্ধান্তের পর ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনার জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে যোগ দেওয়ার পর মন্ত্রী এই মন্তব্য করেন। পাটিল ছাড়াও, বেশ কয়েকটি মন্ত্রকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উচ্চ-স্তরের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বেশ কিছু নির্দেশ জারি। পাটিল একস হ্যান্ডলে-এ পোস্ট করেন, ‘সিন্ধু জল চুক্তির বিষয়ে মোদী সরকারের ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত আইনসঙ্গত এবং জাতীয় স্বার্থে নেওয়া হয়েছে। আমরা নিশ্চিত করব যে সিন্ধু নদের এক ফোঁটাও জল পাকিস্তানে প্রবাহিত না হয়।’ পাকিস্তানকে একটি ‘কড়া বার্তা’, যে তারা সন্ত্রাসবাদকে মোটেও সহ্য করবে না। জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ স্থগিত চুক্তিটিকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের জনগণের জন্য ‘সবচেয়ে অন্যায্য দলিল’ বলে অভিহিত করে বলেন যে এটি কখনও তাঁদের সমর্থন পায়নি। আবদুল্লাহ বলেন,’ভারত সরকার কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। জম্মু ও কাশ্মীরের কথা বলতে গেলে, সত্যি বলতে, আমরা কখনওই সিন্ধু জল চুক্তির পক্ষে ছিলাম না। এখন, এর মধ্যম থেকে দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব কী, তা দেখার জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।’
সিন্ধু জলচুক্তি স্থগিত। পাল্টা সিমলা চুক্তি বাতিল করে ইসলামাবাদ। কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা সাফ জানান, রাজ্য সিন্ধু চুক্তির সমর্থনে ছিল না। ভূস্বর্গের মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা ইসলামাবাদের কাছে কাশ্মীরের অবস্থানকেও আরও স্পষ্ট করে দিল। ১৯৬০ সালের জল চুক্তি স্থগিত ভারতের তরফে। কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা জানান, ‘ভারত সরকার কিছু পদক্ষেপ নিচ্ছে। আর যদি জম্মু ও কাশ্মীরের বিষয় বলেন, সত্যি কথা বলতে আমরা কোনও দিনওই সিন্ধু জলচুক্তির সমর্থনে ছিলাম না। তবে এটার দীর্ঘ সময়ের প্রভাব কী পড়ে, সেটা দেখার জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।’ তিনি বলছেন,’সিন্ধু জল চুক্তি সবচেয়ে অন্যায্য নথি জম্মু ও কাশ্মীরের মানুষের প্রতি।’ সিন্ধু জলচুক্তি নিয়ে অমিত শাহের বাড়িতে হাইভোল্টেজ বৈঠক। সেপাল্টা পাকিস্তান জানায়, জলের গতি বদল, ‘যুদ্ধের শামিল’। ভারতীয় জল শক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব দেবশ্রী মুখোপাধ্যায় এদিন পাকিস্তানকে একটি চিঠি লিখে জানিয়ে দেন যে ভারত এই চুক্তি স্থগিত রাখছে। ছয় বছরেরও বেশি সময় ধরে ভারতের সিন্ধু জল কমিশনার হিসাবে দায়িত্ব পালন করা প্রদীপ কুমার সাক্সেনা বলেন, উঁচু অববাহিকার দেশ হিসাবে ভারতের কাছে একাধিক বিকল্প রয়েছে।
কাশ্মীরে ফের পর পর জঙ্গির বাড়ি ধূলিস্যাৎ! কাশ্মীর কড়া নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা। ভূস্বর্গে জোর কদমে জঙ্গি দমন অভিযান। একের পর এক জঙ্গির বাড়ি কাশ্মীরের বুকে গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। চলছে বিভিন্ন জায়গায় ধরপাকড়। জঙ্গিদের পৃষ্ঠপোষকরাও রয়েছে স্ক্যানারে। কুলগামের মাতালাম এলাকায় জঙ্গি জাহিদ আহমেদের বাড়ি উড়িয়ে দেওয়া হয়। পুলওয়ামার মুরান এলাকায় জঙ্গি আহসান উল হকের বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। বিস্ফোরণ ঘটিয়ে বাড়িটিকে ধূলিস্যাৎ করানো হয়। নিমেষে তাবড় বিল্ডিংটি ভেঙে পড়ে। ২০১৮ সাল থেকে জঙ্গি শিবিরে ট্রেনিং নিচ্ছে আহসান। কাশ্মীরের শোঁপিয়ার চোটিপোরা গ্রামে লস্কর কমান্ডার শহিদ আহমেদ কুত্তের দোতলা বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কার্যত এই গোটা বাড়ি ধূলিস্যাৎ হয়ে গিয়েছে। ৩ থেকে ৪ বছরে কাশ্মীরে সন্ত্রাস সম্পর্কিত ক্ষেত্রে ত্রাস এই শাহিদ আহমেদ কুত্তে। পুলওয়ামার কাচিপোরায় হ্যারিস আহমেদের বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। জঙ্গি শিবিরের সঙ্গে সে ২০২৩ সাল থেকে সক্রিয়। এই সমস্ত জঙ্গির বিরুদ্ধে রয়েছে এফআইআর। শুধু এই ৫ জঙ্গিই নয়। এর আগে, উপত্যকায় জঙ্গি আদিল হোসেন ঠোকর ও আসিফ শেখের বাড়িও গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। এক জঙ্গির বোনের দাবি, তাঁর বাড়ির সকলকে ধরে নিয়ে গিয়েছে পুলিশ। বাড়ি খালি করে তা বিস্ফোরণে উড়িয়ে দেওয়া হয়। জম্মু ও কাশ্মীরের কুলগামে ২ জন এমন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে, যারা জঙ্গিদের সমর্থন করে বলে অভিযোগ। পহেলগাঁওয়ের ঘটনার পরই গোটা অনন্তনাগ জুড়ে তুমুল হারে চিরুনি তল্লাশি শুরু হয়ে গিয়েছে। জম্মু কাশ্মীরের পুলিশ, প্যারামিলিটারি ফোর্স, ভারতীয় সেনা একযোগে শুরু করেছে জঙ্গি দমন অভিযান। কুলগামের কুইমোহ এলাকার ঠোকেরপোরা থেকে ২ জন জঙ্গিদের মদতদাতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে বিশ্বের নানান দেশ দিল্লির পাশে থাকার বার্তা দিয়েছে।