২৫ এপ্রিল ২০২৫। ৩৭ বছরে পা রাখলেন অরিজিৎ সিং। শ্রোতাদের হার্টথ্রব। একের পর এক হিট গান উপহার দিয়েছেন। অতিজিৎ গানের জাদুতে মুগ্ধ ৮ থেকে ৮০। ১৮ বছর বয়সে কেরিয়ার শুরু। আশিকি ২ ছবির তুম হি হো গানটি গেয়েই খ্যাতির শীর্ষে মুর্শিদাবাদের শিল্পী। প্রথম প্লেব্যাক করা গান মার্ডার ২ ছবির ফির মহব্বত গানটি। বিভিন্ন ভাষায় ৩০০ টির বেশি গান গেয়েছেন অরিজিৎ। বার্থডে বয়ের জন্মদিনে বেশ সাড়া জাগানো। বলিউডের অন্যতম বেশি পারিশ্রমিক পাওয়া গায়ক অরিজিৎ সিং। বছরে প্রায় ৭০ কোটি টাকার বেশী। ৪১৪ কোটি টাকার সম্পত্তির মালিক অরিজিৎ। বলিউডের এক একটি গান গাওয়ার জন্য প্রায় ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা করে নেন অরিজিৎ। কনসার্টের জন্য ৫০ লাখ টাকা থেকে দেড় কোটি টাকা চার্জ করেন বলেই জি জেস্টের রিপোর্ট। অরিজিৎ ৭টি ফিল্মফেয়ার পুরষ্কার এবং জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারজয়ী অরিজিৎ এক ঘণ্টা পর্যন্ত চলা কনসার্টের জন্য তিনি নিয়ে থাকেন দেড় কোটি।
অরিজিৎ সিংয়ের মুম্বইয়ে ভারসোভা বিল্ডিংয়ে ৪টি ফ্ল্যাটের প্রতিটির দাম প্রায় ৯ কোটি টাকা। রেঞ্জ রোভার ভগ, হামার এইচ ৩, মার্সিডিজ বেঞ্জের মতো একাধিক বিলাসবহুল গাড়ি আছে। সাদামাটা ভাবেই থাকতে পছন্দ করেন বিখ্যাত সঙ্গীত শিল্পী। তুম হি হো গানটির জন্য ফিল্মফেয়ার পুরস্কার পেয়েছিলেন অরিজিৎ সিং। কলঙ্ক টাইটেল ট্র্যাক, অ্যায় ওয়াতান, রোকে না রুকে, সুরজ ডুবা হ্যায়, ইত্যাদি গানগুলির জন্যও ফিল্মফেয়ার পেয়েছেন গায়ক। সোচ না সকে গানটির জন্য গ্লোবাল ইন্ডিয়ান মিউজিক অ্যাওয়ার্ড জয়ী অরিজিৎ। অরিজিৎ সিং স্টারডাস্ট অ্যাওয়ার্ড পান চান্না মেরেয়া গানটির জন্য।
২০১১ সালে ‘মার্ডার ২’ সিনেমার ‘ফির মহব্বতে’ গান দিয়ে। এরপর সাংহাই-এর ‘দুয়া’। ২০১৩ সালে আশিকি ২ -এর ‘তুম হি হো’ এবং ‘চাহু ম্যায় না’ গান গেয়ে রীতিমতো ফেমাস অরিজিৎ। প্লেব্যাকের দুনিয়ায় প্রবেশ করেন ২০১১ সালে মার্ডার ২ সিনেমার ফির মহব্বতে গান দিয়ে। এরপর একে একে সাংহাই-এর ‘দুয়া’, এজেন্ট বিনোদের ‘রাবতা’ এবং ১৯২০: ইভিল রিটার্নস থেকে ‘উসকা হি বানা’ দিয়ে জিতে নিতে থাকেন শ্রোতার মন। ২০১৩ সালে আশিকি ২ -এর ‘তুম হি হো’ এবং ‘চাহু ম্যায় না’ ট্র্যাকগুলির মাধ্যমে অরিজিতের জনপ্রিয়তার গ্রাফ হয় ঊর্ধ্বমুখী। অরিজিতের গান মানেই সুপারহিট। ফ্যানদের ভালোবাসায় ভরপুর একেবারেই সাদাসিধে মানুষটা। ফতুয়া পরে জিয়াগঞ্জের রাস্তায় স্কুটি চড়তেই বেশি পছন্দ করেন অরিজিৎ।
মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জের প্রাণ। প্রাণের স্পদন গোটা দেশ জয় করে বিদেশের মাটিতেও উজ্জ্বল। অরিজিৎ সিং দেশের এক নম্বর গায়ক। নতুন প্রজন্মের প্রেম থেকে ব্রেকআপ, সব মুহূর্তের সঙ্গেই জড়িয়েই অরিজিতের গান। অরিজিৎ একেবারেই মাটির মানুষ। ছিমছাম পোশাকে স্কুটিতেই ঘুরে বেড়ান। দেশের এক নম্বর এই গায়কের বার্ষিক আয় ৭২ কোটি এবং মাসিক আয় ৬ কোটি টাকা। ফোর্বসের তালিকা বলছে, অরিজিৎ ২০১৯ সালে ৭১ কোটি আয় করেছিলেন। রিয়্যালিটি শো ‘ফেম গুরুকুল’-এ অংশ নিয়ে অরিজিৎ শোয়ে সেরা হতে পারেননি। সেই ঘটনার পর গোপনে নিজেকে তৈরি করছিলেন। রীতিমতো সেরার সেরা অরিজিৎ।
প্রিয় গায়ককে ভালোবাসা ও শুভেচ্ছায় ভরিয়েছেন সকলে। বলিউডের পয়লা নম্বরের গায়ক। তাঁর গান ছাড়া বিগ বাজেটের ছবি যেন ভাবাই যায় না! অরিজিতের জন্ম ১৯৮৭ সালের ২৫ এপ্রিল। বাবা কক্কর সিং, একজন পাঞ্জাবি শিখ এবং মা অদিতি সিং, বাঙালি হিন্দু। মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জে জন্ম, পড়াশোনা, বেড়ে ওঠা। অরিজিৎ সিংয়ের সম্পদ গত এক দশক ধরে ইন্ডাস্ট্রিতে তিনি যে কঠোর পরিশ্রম এবং দুর্দান্ত সঙ্গীত উপহার দিয়েছেন। বিলাসবহুল জীবনে একেবারেই অভ্যস্ত নন। ট্রেনের স্লিপার ক্লাসে চড়তেও দেখা যায়। নেই নিরাপত্তারক্ষীর বহর।
প্রতিবাদের ভাষা। অরিজিৎ সিং কলকাতার আরজি কর-কাণ্ডের সময়ে গান বেঁধেছিলেন। আন্দোলনকারীরা খুঁজে পেয়েছিলেন প্রতিবাদের ভাষা। পহেলগাঁও কাণ্ড নিয়ে প্রতিক্রিয়ায় অরিজিৎ? প্রতিবাদ জানালেন শিল্পী। ২৭ এপ্রিল এমনই এক অনুষ্ঠান ছিল চেন্নাই শহরে। অনুষ্ঠান বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেন অরিজিৎ। পহেলগাঁও কাণ্ডে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতেই অনুষ্ঠান না করার সিদ্ধান্ত। অনুষ্ঠানের আয়োজকদের তরফ থেকে অনুষ্ঠান বাতিলের ঘোষণা। আয়োজকদের বিবৃতি, “একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া এই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনার জেরে, আয়োজক ও শিল্পী যৌথ ভাবে অনুষ্ঠান বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আগামী ২৭ এপ্রিল, অর্থাৎ রবিবার চেন্নাইয়ে এই অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল।” অনুষ্ঠানের টিকিট কাটা দর্শকদের পুরো টাকা ফেরত দেওয়া হবে বলেও জানানো হয় আয়োজকদের তরফ থেকে। দর্শকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি টাকা পৌঁছে যাবে। ভূস্বর্গ পরিণত মৃত্যু উপত্যকায়। নিরীহ পর্যটকদের উপর হামলা। ঘটনার নিন্দায় সরব বলিউডের বহু তারকা। সরব অরিজিৎ সিং।