Saturday, May 24, 2025
spot_imgspot_img

Top 5 This Week

spot_img

Related Posts

প্রচণ্ড গরম তীব্র দাবদাহনিজেক সুস্থ্য রাখার দায়িত্ব নিজেরই

গরমের তীব্রতা বাড়বে বলে আশঙ্কা। তীব্র দাবদাহ। হাওয়া অফিসরে বার্তা, শনি অবধি দক্ষিণবঙ্গের সব জেলায় তীব্র গরম ও অস্বস্তি। তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি পশ্চিমের জেলাগুলিতে। চরম অস্বস্তি। কলকাতা ও দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে। স্বস্তি উত্তরে। উত্তরবঙ্গের জেলায় বৃষ্টির সম্ভাবনা। মালদা, দুই দিনাজপুরে তাপমাত্রা বাড়বে। বৃহস্পতি এবং শুক্রে তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি থাকবে পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, বীরভূম ও পশ্চিম বর্ধমানে। শনি থেকে পশ্চিমের বেশ কিছু জেলায় ঝড় ও বৃষ্টির সম্ভাবনা। রবি থেকে মঙ্গল বজ্রবিদ্যুৎসহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সঙ্গে ৩০ থেকে ৫০ কিলোমিটার গতিবেগে দমকা ঝোড়ো বাতাস বইতে পারে। কলকাতায় শনিবার পর্যন্ত গরম ও অস্বস্তিকর আবহাওয়া বজায় থাকবে। সপ্তাহান্তে আবহাওয়া বদলের সম্ভাবনা রয়েছে। বজ্রবিদ্যুৎসহ বৃষ্টির সঙ্গে দমকা ঝোড়ো বাতাস। রবি থেকে মঙ্গল পর্যন্ত ঝড় বৃষ্টির সম্ভাবনা বেশি থাকবে। কলকাতা, দুই ২৪ পরগণা, দুই বর্ধমান, দুই মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া সহ দক্ষিণবঙ্গের সব জেলাতেই টানা বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিপাতের ফলে পারদ কিছুটা নামতে পারে। উত্তরবঙ্গে বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টি হবে দার্জিলিং–সহ উপরের দিকের কয়েকটি জেলায়। মালদহে তাপমাত্রা থাকবে ৪০ ডিগ্রির উপরে। গরম ও অস্বস্তিকর আবহাওয়া দুই দিনাজপুরে। পরিস্থিতি চলবে শুক্রবার পর্যন্ত। তারপর থেকে ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা।

এই গরমে পান্তা ভাতের উপকারীতা অনেক। বৈজ্ঞানিক গবেষণাতেও প্রমাণিত গরম ভাতের তুলনায় পান্তা খাওয়া বেশি উপকারি। গরমের মোকাবিলা করতে বা শরীরকে চাঙ্গা রাখতে পান্তা ভাতের জুড়ি মেলা ভার! ঠান্ডা ভাতে শুকনো লঙ্কা পোড়া, আস্ত কাঁচা পিঁয়াজ আর বিটনুন। প্যাঁচপ্যাঁচে গরমে পান্তা অমৃত সমান। ভাতের জলে লেবুপাতা ভাসিয়ে রাখা যায়। কয়েকটা ডালের বড়া কিংবা ভর্তা। গরমে শরীর চাঙ্গা রাখতে রকমারি পান্তা।

গরমে সবার আগে খেয়াল রাখতে হবে খাবারের দিকে। কারণ এমন অনেক খাবার আছে যেগুলো গরমের অনুভূতি আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। কিছু খাবার আছে যেগুলো খেলে গরম কম লাগবে। সবার আগে সেই খাবার বেছে নিলে স্বস্তি দেবে। গরমে ভারী ও মশলাদার খাবার যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে। বদলে হালকা খাবার খান। অল্প মসলায় রান্না করা মাছ, সবজি ইত্যাদি যেসব খাবার সহজে হজম হয় সেগুলো বেছে নিলেই শরীরে স্বস্তি। গরমে অনেকে রাস্তার পাশ থেকে শরবত কিনে খাওয়ার অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে। কারণ এই শরবত বিশুদ্ধ জল দিয়ে তৈরি করা হয় না। থাকে নানা রোগ-জীবাণুর ভয়। এছাড়া বাইরের সব ধরনের খোলা খাবার বাদ। ঘরে তৈরি হালকা ধরনের খাবার। আইসক্রিম, কোমল পানীয়ের বদলে ঘরে তৈরি শরবত, জুস ইত্যাদিতে গরমেও প্রশান্তি।

পছন্দের পোশাক গরমে পরা নাও যেতে পারে। কারণ জমকালো পোশাক পরার উপযুক্ত সময় এটি নয়। বদলে সুতির এবং হালকা রঙের পোশাক। নিজের স্বস্তির দিকে নজর। গরমে সুতি, খাদি, লিলেন ইত্যাদির পোশাক আপনাকে বেশি আরাম দেবে। গাঢ় রঙের পোশাক এড়িয়ে চলা জরুরী। কারণ গাঢ় রঙের তাপ শোষণ করার ক্ষমতা বেশি থাকে। এ ধরনের পোশাক পরলে আপনার আরও বেশি গরম লাগতে পারে। বদলে গোলাপি, সাদা, আকাশি ইত্যাদি ধরনের হালকা রঙের পোশাক। বাইরে বের হলে সঙ্গে ছাতা অতিরিক্ত রোদের কারণে হিট স্ট্রোক হতে পারে।

স্নানের কিছুক্ষণ পরই আবার ঘেমে যেতে হয়। স্নান করতে হবে বারবার। স্নানের মাধ্যমে শরীরের অনেক রোগ-জীবাণু ধুয়ে চলে যায়। স্বস্তিও অনুভব। ঠান্ডা লাগার ভয় না থাকলে একাধিকবারও স্নান করতে করলে গরম অনেকটাই কম লাগবে। পাশাপশি পর্যাপ্ত ঘুম। গরমের সময়ে পর্যাপ্ত ঘুমের দিকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। যদিও তীব্র গরমে নির্বিঘ্নে ঘুমই বড় চ্যালেঞ্জ। বিদ্যুৎ বিভ্রাটও এক্ষেত্রে সমস্যা। ঘুমের জন্য সহায়ক পরিবেশ তৈরি করতে হবে। ঘর যতটা সম্ভব ঠান্ডা রাখতে হবে। ঘরে বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রাখুন। হালকা রঙের বিছানার চাদর, বালিশের কভার। ঘুমের আগে স্নান করে নিলে ঘুম ভালো হবে।

স্বাভাবিক অবস্থায় রক্ত দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে। কোনো কারণে শরীরের তাপমাত্রা বাড়তে থাকলে ত্বকের রক্তনালি প্রসারিত হয় এবং অতিরিক্ত তাপ পরিবেশে ছড়িয়ে দেয়। প্রয়োজনে ঘামের মাধ্যমেও শরীর তাপ কমায়। কিন্তু প্রচণ্ড গরম ও আর্দ্র পরিবেশে অনেকক্ষণ থাকলে বা পরিশ্রম করলে তাপ নিয়ন্ত্রণ করা আর সম্ভব হয় না। এতে শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত বিপৎসীমা ছাড়িয়ে যায় এবং হিটস্ট্রোক দেখা দেয়। বর্তমানে দেশজুড়ে যে গরম চলছে, তাতে যে কারও হিটস্ট্রোক হতে পারে। সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।

তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দেহে নানা রকম প্রতিক্রিয়া। প্রাথমিকভাবে হিটস্ট্রোকের আগে অপেক্ষাকৃত কম তীব্র সমস্যা হিটক্র্যাম্প অথবা হিট-এক্সোসশন। হিটক্র্যাম্পে শরীরের মাংসপেশি ব্যথা করে, দুর্বল লাগে ও প্রচণ্ড পিপাসা লাগে। পরের ধাপে হিট-এক্সোসশনে দ্রুত শ্বাসপ্রশ্বাস, মাথাব্যথা, ঝিমঝিম করা, বমি ভাব, অসংলগ্ন আচরণ। দুই ক্ষেত্রেই শরীরের তাপ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা ঠিক থাকে এবং স্বাভাবিকভাবেই শরীর বেশি ঘামতে থাকে। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। হিটস্ট্রোকের লক্ষণগুলো হলো, তাপমাত্রা দ্রুত ১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট ছাড়িয়ে যায়। ঘাম বন্ধ হয়ে যায়। ত্বক শুষ্ক ও লালাভ হয়ে যায়। নিশ্বাস দ্রুত হয়। নাড়ির স্পন্দন ক্ষীণ ও দ্রুত হয়। রক্তচাপ কমে যায়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Popular Articles