Saturday, May 24, 2025
spot_imgspot_img

Top 5 This Week

spot_img

Related Posts

‌‘শতবর্ষে ইস্টবেঙ্গল’ তথ্যচিত্র উদ্বোধনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়! ভাইপোর দলের প্রশংসার মাধ্যমে ইস্টবেঙ্গলকে শেখালেন মুখ্যমন্ত্রী

ডায়মন্ড হারবারকে দেখে শিখুন। ওদের দেখে বুঝুন, কেমন বুদ্ধি খাটিয়ে দল গড়েছে। ইস্টবেঙ্গলের কর্তারাও আগে থেকে ভাবুন, কাদের নেবেন। এক বছর ধরে পরিকল্পনা করুন। কঠোর সিদ্ধান্ত নিন। আগামী বছর যেন আর ব্যর্থতা না আসে। শুধু টাকা ঢাললে হবে না। বুদ্ধি করে দলটা তৈরি করতে হবে। ইস্টবেঙ্গল কর্তা নীতুদাকে বলছিলাম, আপনারা দলটা ভাল করে করছেন না কেন? ভাইপো অভিষেকের ডায়মন্ড হারবার ফুটবল ক্লাবের সাফল্যের উদাহরণ দেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজারহাটে একটি জমি ফুটবল স্টেডিয়াম করার জন্য রাজ্য সরকার দিয়েছিল। আইনি জটে তা আটকে যায়। মুখ্যমন্ত্রী বাংলার ক্রিকেট সংস্থার সভাপতি স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায়কে নির্দেশ দেন ওই জায়গায় ক্রিকেট স্টেডিয়াম তৈরি করার। ইতিমধ্যেই এই বিষয়ে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। ডুমুরজলায় সিএবি-কে মাঠ তৈরি করার জন্য জমি দেওয়া হয়েছিল। সেখানে ক্রিকেট স্টেডিয়াম তৈরি করার উপযুক্ত জমি নেই। সেই কারণে ওখানে ক্রিকেট অ্যাকাডেমি তৈরি করার নির্দেশ দেন মমতা।

বৃহস্পতি সন্ধ্যায় ইস্টবেঙ্গলের উপর তৈরী তথ্যচিত্র উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তথ্যচিত্রের নাম ‘শতবর্ষে ইস্টবেঙ্গল’। রবীন্দ্র সদনে জমকালো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে গৌতম ঘোষের তৈরি করা তথ্যচিত্রটি প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। ৫৮ মিনিটের এই তথ্যচিত্রে তুলে ধরা হয়েছে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের ১০০ বছরের সামগ্রিক ইতিহাসকে। ভারতসেরা ইস্টবেঙ্গলের মহিলা দল উপস্থিত ছিল। লাল-হলুদের মহিলা দলের প্রশংসা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “মেয়েরা জিতে এসেছে। তারা তো ইস্টবেঙ্গলকে অহংকার এনে দিয়েছে। গোটা দলকে অভিনন্দন। দলের কোচকেও শুভেচ্ছা। গর্বের ব্যাপার হল ওরা এএফসি মহিলা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলবে। আশা করব, সেখানেও জয়যাত্রা অব্যাহত থাকবে। আগাম শুভেচ্ছা রইল। আমরা তিন প্রধানকেই অর্থসাহায্য করেছি। যখন ক্রীড়ামন্ত্রী ছিলাম, অলিম্পিকে পরাজয়ের পর পার্লামেন্টে বক্তব্য দিয়েছিলাম। বলেছিলাম, খেলাটাকে গুরুত্ব দিতে হবে। অ্যাকাডেমি তৈরি না হলে, খেলোয়াড়দের ঠিকমতো প্রশিক্ষণ না দিতে পারলে কীভাবে ভালো পারফরম্যান্স করবে? আমার সময় অনেক অ্যাকাডেমি তৈরি করেছি। একটা সময় খেলাধুলায় বরাদ্দ ছিল ১২৬ কোটি টাকা। আমরা আসার পর তা বেড়ে হয়েছে ৮৪০ কোটি টাকা। চারশোর বেশি খেলার মাঠের উন্নয়ন করা হয়েছে। ফিফাও আমাদের প্রশংসা করেছে। ইস্টবেঙ্গল যেন ভালো দল করে। ইমামির সঙ্গে ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের এগিয়ে যেতে হবে। ইস্টবেঙ্গলও পারবে ভালো দল তৈরি করে চ্যাম্পিয়ন হতে। আশা করি, তারা তা পারবে। ভালো প্লেয়ার নিতে হবে। ১০০ বছর অতিক্রম করছে ইস্টবেঙ্গল ক্লাব। দল হেরে গেলে সমর্থকদের খুব কষ্ট হয়। তবে, বাংলার কোনও দল জিতলেই আমার ভালো লাগে। কারণ আমি বাংলার সমর্থক। ইস্টবেঙ্গলের ইতিহাস নিয়ে গবেষণাও হচ্ছে। তাই আগামীতে কী করব, এখন থেকেই ভেবে এগোতে হবে। বোল্ড আউট করতে গেলে পরিকল্পনা করা তো সবার আগে দরকার। বাচ্চাদের দিকেও নজর দিন। বাংলায় প্রতিভার অভাব নেই। তাই সামনের দিকে এগিয়ে চলুন। করে দেখাতে হবে। জয় হবেই। এই বিশ্বাস নিয়েই মাঠে নামতে হবে। ডায়মন্ড হারবার এমন দল করেছে যে, কম সময়ের মধ্যে ওরা আই লিগে উঠে এসেছে। মোহনবাগান তো দুর্দান্ত দল গড়েছে। ওরা আইএসএল চ্যাম্পিয়ন। মহামেডানও আইএসএলে উঠে এসেছে। তবে মনে রাখতে হবে কম্পিটিশনটা কম্পিটিশনের মতোই থাকা উচিত। তাতে প্রতিদ্বিন্দ্বিতাও জমে ওঠে। মহিলা দল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বলে ভীষণ ভালো লাগছে। যৎসামান্য হলেও ওদের জন্য ৫০ লক্ষ টাকা দিয়ে গেলাম।”

রবীন্দ্র সদনে শতবর্ষে ইস্টবেঙ্গলের বিশেষ তথ্যচিত্র উদ্বোধনে এসে ক্লাবের প্রেসিডেন্ট মুরারি লাল লোহিয়া, ইমামি কর্তা আদিত্য আগরওয়াল এবং শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকারের হাতে চেক তুলে দেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। মমতা ব্যানার্জি বলেন, ‘ইস্টবেঙ্গলের মেয়েদের দলকে বিশেষ অভিনন্দন। তরুণ কোচকেও শুভেচ্ছা। ইস্টবেঙ্গলের মহিলা ফুটবল দল সেরা। এশিয়ায় সেরা টুর্নামেন্ট এএফসি উইমেন্স লিগ খেলবে। মেয়েদের এই সাফল্যের জন্য আমরা ইস্টবেঙ্গল ক্লাবকে ৫০ লক্ষ টাকা অনুদান দিচ্ছি।’ এদিন মুখ্যমন্ত্রীর হাতে ট্রফি তুলে দেয় ইস্টবেঙ্গলের মেয়েদের ফুটবল দল। মমতা ব্যানার্জি বলেন, ‘আমাদের ফুটবল, তীরন্দাজি, টেবিল টেনিস অ্যাকাডেমি আছে। তোমরা ডুমুরজলাতে একটা ক্রিকেট অ্যাকাডেমি করে নাও। তোমাদের জন্য রাখা আছে। এছাড়াও আমরা চাইব সিএবি আরও একটা স্টেডিয়াম করুক। রাজারহাটে ১৫ একর জমি পড়ে আছে। আমরা তিন বছর অপেক্ষা করতে পারি। তারপর অন্য কোনও কাজে দিয়ে দিই। চেয়েছিলাম ফুটবল স্টেডিয়াম হোক। কিন্তু হল না। তোমরা আরেকটা ক্রিকেট স্টেডিয়াম করো। আমরা জমির বিষয়ে সবরকম সাহায্য করব।’

রবীন্দ্র সদনে জমকালো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে গৌতম ঘোষের তৈরি করা তথ্যচিত্রটি প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। ৫৮ মিনিটের এই তথ্যচিত্রে তুলে ধরা হয়েছে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের ১০০ বছরের সামগ্রিক ইতিহাসকে। ইস্টবেঙ্গলে ক্লাবের শতবর্ষ ঘিরে পরিকল্পনা পাঁচ বছর আগে নেওয়া হয়। উল্লেখযোগ্য গৌতম ঘোষের পরিচালনায় তথ্যচিত্র, ‘মশাল’। ২০২০-তে লাল-হলুদের শতবর্ষে ক্লাবকে ঘিরে তথ্যচিত্রর কাজ শুরুও করে দিয়েছিলেন গৌতম ঘোষ। হঠাৎই কোভিডের আক্রমণ বিধ্বস্ত করে দেয় যাবতীয় পরিকল্পনা। শুধু যে শুটের কাজ আটকে যায় এরকমটা নয়। কোভিডের থাকায় সারা বিশ্বের আর্থিক পরিকাঠামো ভেঙে পড়ার ভয়ংকর প্রভাব থেকে রক্ষা পায়নি ইস্টবেঙ্গল ক্লাবও। কোভিড ও আর্থিক ধাক্কা সামলে তথ্যচিত্র তৈরির কাজ শেষ পর্যন্ত ভালোভাবে শেষ করতে লেগে গিয়েছে পাঁচ-পাঁচটি বছর। নাম দেওয়া হয়েছে, ‘মশাল’। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস এবং ইন্দ্রনীল সেন। মঞ্চে ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের সঙ্গে ছিলেন মোহনবাগান এবং মহমেডানের কর্তারাও। মঞ্চে ছিলেন ইস্টবেঙ্গলের তথ্যচিত্রের পরিচালক গৌতম ঘোষ, চলচিত্র পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়। ২৮ এপ্রিল থেকে ৩ মে পর্যন্ত নন্দন ৩ প্রেক্ষাগৃহে দেখানো হবে। এদিন ইস্টবেঙ্গলের তথ্যচিত্র উদ্বোধনে চাঁদের হাট। এক ছাদের তলায় ফুটবল ক্রিকেট মিলেমিশে একাকার। ছিলেন ঝুলন গোস্বামী, স্নেহাশিস গাঙ্গুলি, ডোনা গাঙ্গুলি, সুকুমার সমাজপতি, সমরেশ চৌধুরী, গৌতম সরকার, মেহতাব হোসেন, রহিম নবি সহ একাধিক প্রাক্তন এবং বর্তমান তারকা। ছিলেন কলকাতার বাকি দুই ক্লাবের শীর্ষ‌কর্তা দেবাশিস দত্ত এবং কামারউদ্দিন। ভোটের আবহে ইস্টবেঙ্গলের এই অনুষ্ঠান মিলিয়ে দেয় মোহনবাগানের দুই গোষ্ঠীকে। একই মঞ্চে ছিলেন সৃঞ্জয় বসু এবং দেবাশিস দত্ত। ছিলেন ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের সভাপতি মুরারি লাল লোহিয়া, ইমামি গ্রুপের পক্ষ থেকে আরএস গোয়েঙ্কা, আদিত্য আগরওয়াল সহ ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের সমস্ত ছোট বড় কর্তা। ছিলেন কোচ অস্কার ব্রুজোও।‌ অনুষ্ঠানে বিশেষ চলচ্চিত্র দেখানো হয়। সমর্থকদের জন্য ইউ টিউবে পোস্ট করা হবে এই বিশেষ চলচ্চিত্র।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Popular Articles