“লেট আ হান্ড্রেড গিলটি বি অ্যাকুইটেড বাট ওয়ান ইনোসেন্ট নট বি কনভিক্টেড” ক্রিমিনাল ট্রায়ালের সেই গোড়ার আপ্তবাক্য। যন্ত্রণা আর লজ্জার গভআর আঁচড় আর ক্ষত। পুলিশের বুট একেবারে সোজাসুজি শিক্ষার পেটে। বিটের লাথি সরাসরি শিক্ষকের পেটে। কারা এরা? এই পুলিশের শিক্ষাজীবন আদৌ ছিল? এই পুলিশের জীবনে আদৌ শিক্ষক ছিলেন? শিক্ষকের পেটে পুলিশের বুট নিষ্পেষণ! শিক্ষার পেটে লাথি। রাজ্যবাসীর বুকে অবমাননার গ্লানি? শিক্ষকদের উপর পুলিশের পদাঘাত। পুলিশের পা জড়িয়ে ধরে শিক্ষকদের মিনতি। সামূহিক স্মৃতিতে দৃশ্য খোদাই হয়ে রইল। পুলিশের বুট শুধু চাকরিহারা শিক্ষকের গায়ে লাগেনি। লেগেছে রাজ্যবাসীর বুকে। অবমাননার গ্লানি স্পর্শ করেছে সমগ্র শিক্ষক সমাজকে। পুলিশের অকারণ হিংস্রতা। মানুষ মেনে নিতে পারবেন? সামান্য নাকি অসামান্য ব্যাপার? মেনে নেবেন নাকি ভুলে যাবেন? এ কেমন প্রত্যাশা তৃণমূল সরকারের? প্রশাসনে অনিয়ম ও দুর্নীতির জেরে তালিকায় স্থান পাননি অনেকেই। স্থান পেয়েও চাকরি হারালেন আরও অনেকে। প্রত্যেকের প্রতিই রাজ্যবাসীর পূর্ণ সহানুভূতি।

অদ্ভূত আচরণের শিক্ষামন্ত্রী। ব্রাত্য বসুর প্রশ্ন, শিক্ষকরা ডিআই অফিসে গিয়েছিলেন কেন? রাজ্যবাসীর প্রশ্ন করা দরকার, কেন নয়? ডিআই অফিসে বিক্ষোভ। স্মারকলিপি জমা দেওয়া। এসবের পূর্ণ অধিকার রয়েছে শিক্ষকদের। সরকারি দফতরের দরজায় তালা লাগিয়ে প্রতীকী প্রতিবাদ। ডিআই দফতরে শিক্ষকদের একটি প্রতিনিধি দলকে শান্তিপূর্ণ ভাবে স্মারকলিপি পেশ করার ব্যবস্থা করে দেওয়া যেত। ডিআই অফিসের গেট বন্ধ না থাকলে তা টপকানোর চেষ্টা বা তালা ভাঙার চেষ্টারও প্রয়োজন হত না। যদি সেই বিক্ষোভের মধ্যে হিংসা ও ভাঙচুর হয়েও থাকে। আটকাতে বা উচ্ছৃঙ্খলদের সংযত করতে পারে পুলিশ। সম্পূর্ণ অন্য উপায়ে। তার জন্য পুলিশের হিংস্র আক্রমণ কেন? মাটিতে ফেলে লাঠিপেটা। মহিলাদের উপর পুরুষ-পুলিশের আক্রমণ। এটা আধুনিক সরকারের আইনের শাসন! না কি শাসকের আইন লঙ্ঘন? পুলিশের অত্যাচার অনেকটা ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের পুলিশের অত্যাচারকে ছাড়িয়ে যেতে চলেছে?

ধৈর্য ও পেশাদারিত্ব। বিক্ষোভ কর্মসূচির মোকাবিলা। পুলিশ আগেও করেছে। এমন নিদর্শন কম নেই। প্রায় সব জেলায় ডিআই দফতরে শিক্ষকদের কর্মসূচি সামলেছে পুলিশ। অথচ কলকাতায় শিক্ষকদের পিটিয়ে পুলিশ লাঠি ভেঙে ফেলল। ভূলুণ্ঠিত শরীরে পুলিশের বুটের ছাপ পড়ল। আশঙ্কা অসহায়তার ছবি স্পষ্ট। নাগরিকের দেহের উপর রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার স্বাক্ষর। অকস্মাৎ ঘটনা নয়। পূর্ব-নির্দিষ্ট ক্রমানুসারবদ্ধতা। প্রথমে ব্যারিকেড। অতঃপর পুলিশি আক্রমণ। তার পরে মিথ্যা মামলা। নাগরিকের প্রতিবাদের মোকাবিলা। বর্তমান সরকারি রুটম্যাপ। নবতম কৌশল, অপরাধীকেই আক্রান্ত বলে সাজিয়ে দেওয়া। যেমন পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মার অভিযোগ, বিক্ষুব্ধ জনতার আক্রমণে আহত পুলিশ চিকিৎসাধীন। পুলিশ খুব তাড়তাড়ি হসপিটালের বেডে নিজেকে শায়িত করে দেন। একটু মনে করলেই দেখা যেতে পারে, বিক্ষুব্ধ জনতার সামনে পড়লে পুলিশ পরিস্থিতি-বিচারে বুট-লাঠি ফেলে কেমন নিষ্ক্রিয়ও হয়ে যেতে পারে। স্পষ্ট নিদর্শন ও প্রত্যক্ষ প্রমাণ ১৪ আগস্টের আর জি কর হাসপাতাল চত্বরের ঘটনার ঘনঘটা। পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা জনসাধারনের চোখে আজও ভাসে।

অন্ততপক্ষে অভব্যতা ছিল না শিক্ষকদের প্রতিবাদ কর্মসূচিতে। যথেষ্ট সঙ্গতও। সরকারি ব্যবস্থার ব্যাপক অনিয়ম। এবং এই দুর্নীতিপরায়নতার কারণেই কর্মহীন। সম্মানচ্যুত শিক্ষকরা রাস্তায়। প্রত্যক্ষভাবে দোষী সরকার। বিশেষত শিক্ষা দফতর। শিক্ষকদের কাছে নিশ্চিত অপরাধী। শিক্ষকদের প্রতিবাদ। ক্ষোভের উচ্চারণ নতমস্তকে শোনার প্রয়োজন প্রশাসনকে। শিক্ষকদের প্রশ্নের উত্তর দিতে বাধ্য প্রশাসন। শান্তিভঙ্গের অভিযোগের পিছনে লুকোনোর কোনও রাস্তাই নেই প্রসাসনের। মনে পড়ে, আর জি কর কাণ্ডের পরে লালবাজারে স্মারকলিপি দেওয়ার উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। সেই শান্তিপূর্ণ মিছিলও বিশাল ব্যারিকেডের মুখোমুখি হয়েছিল। রাস্তায় অবস্থানকারী ডাক্তারদের প্রতি জনসমর্থনের জোয়ার। বাধ্য হয়ে পুলিশই ব্যারিকেড সরায়। আক্রান্ত, অপমানিত শিক্ষকদের আরও বৃহৎ আন্দোলনের ডাক। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একরাশ আশ্বাসবাণী বিতরণ করেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর অস্তিত্ব বাঁচানোর লড়াই শুরু হয়েছিল আরজিকর কাণ্ড থেকেই। আইনের চোখে অপরাধী সন্দীপ ঘোষকে বারবার আড়াল করার চেষ্টা। একমাত্র ধৃতকে খুব তাড়াতাড়ি ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে মামলা নিস্পত্তি করার জোর সাওয়াল। কোনও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী একাজে নিজেকে নিয়েজিত করতে পারেন কিনা জানা নেই। সবকিছুই অনেকাংশই ভিত্তিহীন বলে প্রতীত।

রাজ্যের প্রধানতম তিনি ও তাঁর অনুচর-সহকর্মীরা মনে করতেই পারেন, তাঁর আশ্বাসবাক্যের পর আর কথা চলে না। বৃহত্তর সমাজ অর্থাৎ শিক্ষক, চিকিৎসক, ছাত্রছাত্রী, কৃষক-শ্রমিকরা? কথা বলতে চাইতে আগ্রহী। কিছু বলতে চান প্রত্যেকেই। প্রচুর জিজ্ঞাস্য রয়েছে প্রত্যেকের মনে। আরজিকর আনদোলনের চিকিৎসকদের চাকরি না দেওয়ার, সার্টিফিকেট না দেওয়ার, ফেল করানোর ভয় দেখিয়ে চুপ করিয়ে রাখা হয়েছে। চিকিৎসকরা কী আদৌ চুপ রয়েছেন? চিকিৎসকদের সার কথা সরকারকে শুনতে হবে, পুলিশের বুট দিয়ে চেপে দিলে চলবে না। চিকিৎসকরাও জোর গলায় বলেছিলেন, আমরা হেরে যাইনি। বাংলার মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিপুল ভোটে জিতিয়েছিলেন। কারণ তিনি জনগনের কথা শুনবেন, এই আশা নিয়েই। পুলিশের বুটে জনগনের কণ্ঠস্বর চেপে ধরার জন্য তো নয়ই। অথচ আজ জনসাধারন হতাশ্বাস। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ২৫,৭৫৩ জন শিক্ষক চাকরিহারা। ড্যামেজ কন্ট্রোলে নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে মুখ্যমন্ত্রীর সভা। ৭ এপ্রিল, ২০২৫। টাটকা তারিখ। আকাশে মেঘ ছিল। বজ্রপাতের আগাম সতর্কবার্তাও। অনেকেই বজ্রের ব্যাপকতা এবং ভয়াবহতা আগাম আঁচ করতে পারেননি। ২৫৭৫৩ জন শিক্ষক এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যদের জীবনে চরম আঁধার। রাজ্যের গোটা শিক্ষাব্যবস্থাও গভীর সঙ্কটে। সংশয়ের অবকাশ রাখে না কোনও আঙ্গিকেই।

এবার শুরু ‘খেলা হবে’ প্রতিযোগিতা। রায়-পরবর্তী ঘটনাক্রম। বড় চমক সৃষ্টির প্রেক্ষাপট। বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের নেপথ্য কারিগররা সজাগ হতে শুরু করেছেন। সকলের মধ্যেই দস্যু রত্নাকর থেকে বাল্মীকি হয়ে ওঠার প্রতিযোগিতা। শিক্ষক নিয়োগে লাগামহীন দুর্নীতিতে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ ভাবে লাভবান গুণধরেরা। বিপর্যয়ের দায় শুধুশুধু নিতে যাবেন কেন? তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই কিছু মানুষকে দোষী চিহ্নিত করতে পারলেও বাকিরা যে ক্লেদমুক্ত, তেমন প্রমাণ দিতে ব্যর্থ হয়েছে। যোগ্যদের চাকরি হারানোর দুর্ভোগের দায় গুণধরদের উপর কেন বর্তাল না, সেটা এক গভীর রহস্য। ওএমআর শিট নষ্ট করা এবং সেগুলির মিরর ইমেজ সংরক্ষণ না করার অভিযোগে বিদ্ধ এসএসসি-ও দায় নিতে নারাজ। আদালতে একাধিক বার দাখিল করা হলফনামায় চিহ্নিত দোষীদের বাইরে বাকিরা নিষ্কলুষ, এমন দাবি জানাতেও সমর্থ হননি। প্রচ্ছন্ন মদতে বছরের পর বছর মানুষ গড়ার কারিগরদের চাকরি বিক্রি হল। দুর্নীতি আড়াল করতে সুপারনিউমেরারি পদ সৃষ্টি। প্যানেলে নাম না-থাকা মানুষদের চাকরি দেওয়া। শিক্ষক সমাজের মুখে অনপনেয় কালি লেপন। এই সব কৃতকর্মের ভাগীদার গুণধরেরা নিজেদের কেবলমাত্র সম্পূর্ণ নির্দোষ দাবি করেই ক্ষান্ত হচ্ছেন না। বঞ্চিত চাকরি প্রার্থীদের হয়ে সওয়াল করা রাজ্যের কতিপয় আইনজীবী এবং বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর উপরে যাবতীয় দায় চাপাতে তৎপর ও সরব।

জটিল এবং ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র। কোনও ভূমিকাই ছিল না সৎ এবং যথার্থ মেধাসম্পন্ন শিক্ষকদের। অথচ যোগ্য শিক্ষকদের ঘাড়ে চরম শাস্তির খাঁড়া নেমে আসে। মহান কর্মযোগী গুণদরদের কণ্ঠে অনুশোচনার লেশমাত্র শোনা যায়নি। আদালতের রায়ে একই সঙ্গে সৎ এবং অসদুপায়ে চাকরি পাওয়া সকল শিক্ষকের চাকরি বাতিল হওয়ার পর দোষী-নির্দোষ নির্বিশেষে সবাইকে বাপ-বাপান্ত করতে নেমে পড়েছেন অনেকে। আদালতের রায়ে একটা স্ববিরোধ রয়েছে। শীর্ষ আদালত সিবিআইয়ের পেশ করা নথির ভিত্তিতে সংশয়াতীত ভাবে চিহ্নিত দোষীদের বেতন বাবদ প্রাপ্ত টাকা ফেরত দেওয়ার আদেশের সঙ্গে পুনরায় পরীক্ষায় বসার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। শীর্ষ আদালত যে সিবিআইয়ের তদন্তে প্রাপ্ত তথ্যপ্রমাণকে মান্যতায় দ্বিমত থাকার কথা নয়। চিহ্নিত দোষীদের বাইরে থাকা হাজার হাজার শিক্ষকের বিরুদ্ধে অন্তত দুর্নীতির কোনও প্রমাণ নেই। কিছু দোষী থাকা ব্যক্তিদের প্রমাণ করার দায় সিবিআই এবং এসএসসির।

প্রতিকূল পরিস্থিতিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কী? এতগুলো মানুষের বাঁচার প্রশ্ন। শীর্ষ আদালতের রায় যে-হেতু অলঙ্ঘ্য। আদালত পথ উন্মুক্ত রেখেছে। নতুন করে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় বসে নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করার সুযোগ। সময়সীমা মাত্র তিন মাস। অথচ, প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় বসার জন্যে যে প্রস্তুতি প্রয়োজন, তিন মাস তার জন্যে যথেষ্ট নয়। দীর্ঘ সাত-আট বছর শিক্ষকতা করার ফলে অধিকাংশ শিক্ষক নিজের পাঠদানের বিষয় ব্যতিরেকে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্যে জ্ঞাতব্য অন্যান্য বিষয়ের চর্চা থেকে সম্পূর্ণ বিযুক্ত। সকলেরই বয়স বেড়েছে। ফলে নতুন নতুন বিষয় আয়ত্ত করার ক্ষমতাও হ্রাস পেয়েছে। মাথার উপরে চাকরি হারানোর খাঁড়া। এরপর, চাকরির জন্যে নিয়মিত প্রস্তুতি নেওয়া প্রার্থীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে যোগ্যতার প্রমাণ দিতে হলে, সেটা হবে এক চরম প্রহসন। উত্তরণের উপায় একেবারেই নেই?
সদ্য চাকরি হারানো শিক্ষকরা প্রায় সাত থেকে আট বছর শিক্ষকতা করছেন। লিমিটেড পরীক্ষার ব্যবস্থার কথা পশ্চিমবঙ্গ সরকার খতিয়ে দেখতে পারে। নির্দিষ্ট কাট-অফ মার্ক রেখে পরীক্ষাটি অবশ্যই বিষয়ভিত্তিক হওয়া প্রয়োজন। উত্তীর্ণ হলেই চাকরিতে বহাল। রাজ্যের স্কুলগুলিতে প্যারা-টিচার নিয়োগের তেমন কিছু ধরাবাঁধা নিয়ম বা পরীক্ষার ব্যবস্থা নেই। অতএব, ব্যর্থদের প্যারা-টিচার হিসেবে বহাল রাখাটা দুরূহ হবে না। পাশ করতে অসমর্থ শিক্ষকরা আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও পুরোপুরি চাকরি খোয়ানোর চাইতে এই ব্যবস্থা মঙ্গলজনকই। কারণ, নেই মামার থেকে কানা মামা ভালো। বিপুল সংখ্যক শিক্ষকের যোগ্যতা নিয়ে আদালত কিংবা এসএসসি নিঃসংশয় নয়। পরীক্ষার মাধ্যমে অগ্নিশুদ্ধি হলে হৃত সম্মান এবং চাকরি ফিরে পেতে পারেন। স্কুলগুলিও শিক্ষকহীনতার এই সঙ্কট থেকে দ্রুত মুক্তি পেতে পারে। এই লিমিটেড পরীক্ষার জন্যে নতুন করে আদালতের অনুমতির দরকার হলে, আইনজ্ঞদের পরামর্শ সাপেক্ষে সরকারের পক্ষ থেকে আশু উদ্যোগ বাঞ্ছনীয়। বিনা দোষে কেউ যাতে শাস্তি না পান। এটাই তার জন্য বিকল্প পথের সন্ধান।
রাজ্যের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর তরফে বারংবার চাকরিহারাদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি। আবার ড্যামেজ কন্ট্রোলের প্রশ্ন সামনে। যোগ্য এবং সৎ শিক্ষকদের চাকরি রক্ষার দায়ভার প্রকৃতপক্ষে মাননীয়ার সম্মান রক্ষার সমার্থক। ভারতের সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে বাংলায় প্রায় ২৬০০০ শিক্ষকের চাকরি বাতিল। বাংলা আবার উত্তাল। আবার এক বা একাধিক আন্দোলন। মুখ্যমন্ত্রী এটা আঁচ করে, মরিয়া হয়ে নতুন খেলা হবে খেলায় আরও এক হাত খেললেন। নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে শিক্ষকদের ডাকলেন আর চেষ্টা করলেন গরম হাওয়াটা তাঁর পালের দিকে টানতে। কোনও স্পষ্ট আশ্বাস তো দিতে পারেনইনি, বরং জল আরও ঘোলা করে দিলেন। উনি শিক্ষকদের স্বেচ্ছায় স্কুলে পড়াতে যাওয়ার কথা বলেছেন। এর অর্থ কী? শিক্ষকরা বহাল নন। বরখাস্ত। তার পরেও, সেই পদের কাজ সমাজ সেবা হিসাবে করবেন? টাকা পাবেন কি? কত? কী ভাবে পাবেন, পদস্থ শিক্ষক হিসাবে না স্বেচ্ছাসেবী হয়ে?
বাংলার মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিপুল ভোটে জিতিয়েছিলেন। বিপুল জনসমর্থনে কংগ্রেস আর বাম দলগুলি নির্মূল। অভূতপূর্ব জয়। বিপুল জয়েরর এক বছর পরেই খবরে প্রকাশ, গোলাপি দু’হাজার টাকার নোটের পাহাড় প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তির বাড়িতে। যাঁরা ভোট দিয়ে জিতিয় আনলেন অনেক আশা নিয়ে। লজ্জায় এবং ক্ষোভের ক্ষীণ শুরু ঠিক তখন থেকেই। বিশ্বাস নষ্ট হতে শুরু করেছে। কেলেঙ্কারির সূত্রপাত। শেখার সুযোগ ছিল ২০২২-এ। যোগ্য-অযোগ্য ভাগ করতে পারলে আজ এই ভয়ানক অবস্থা হত না। আন্দোলনের ঢেউও আছড়ে পনত না। জুনিয়র ডাক্তারদের বিশাল আন্দোলন থেকেও অবশ্য কিছু শিখতে পেরেছে কী? অর্থলোলুপতার লালসায় লালায়িত। দুর্নীতির আখড়া করতে মত্ত। অসততার কর্মকাণ্ড থেকে নিজেদের নিষ্কাষন করতে পুলিশ নামক উর্দিধারী গুন্ডাবাহিনী দিয়ে বুটে দিয়ে কণ্ঠরোধ করার চেষ্টায় রত খোদ মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সরকার। অভিযোগ ফুঁসতে থাকা ও পেটে লাথি খাওয়া খোদ জনসাধারনের।
নীল সাদায় সাজ্জিত ইঁটকাঠের ভিতরটা আজও জরীজীর্ণ। পথেঘাটে কান পাতলেই শোনা যায়, আন্দোলন করেও অভয়ার আসল দোষীদের তো শাস্তি দিতে পারল না এই সরকার। জুনিয়র ডাক্তারদের নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী এমন কয়েকটি চাল খেললেন যে, তাঁদের প্রতিবাদ প্রায় খতম হয়ে গেছে। আসল কথা হল, ছাত্র-রাজনীতিতে অন্য বিভাগের তুলনায় স্নাতক বা স্নাতকোত্তর স্তরে ডাক্তারি ছাত্রদের অবস্থা পৃথক। সরকারের উপর অনেক বেশি নির্ভরশীল, অন্তত কেরিয়ারের গোড়ার দিকেই। ভবিষ্যৎ নিয়ে বেশি সতর্ক। তা ছাড়া পড়া আর ট্রেনিং শেষ করার দায়িত্বও তো আছে। না করলে তো পরে সকলকেই ভুগতে হতে পারে। ডাক্তারদের পক্ষে খুব একটা লম্বা আন্দোলন চালানো যথেষ্ট কঠিন। নিজেদের ভবিষয়তের কথা ভেবে জুনিয়র ডাক্তাররাও প্রশ্নের মুখে। বাংলার রাজনৈতিক অবস্থা বেশ উত্তেজনাপ্রবণ। এই সরকারের আমলের ব্যাপক চুরি, দুর্নীতি আর দাদাগিরির বিরুদ্ধে রাজ্যের অনেকেই অতিষ্ঠ। বিশেষ করে মধ্যবিত্ত শ্রেণি বা শিক্ষিত সমাজ। প্রচণ্ড বিরক্ত ও ক্ষুব্ধ। এই পটভূমিকায় আর জি কর হাসপাতালে অভয়ার অতি ঘৃণ্য ঘটনাটি ছিল বারুদ, আর জুনিয়র ডাক্তাররা ট্রিগারের কাজ করেছেন। মুহূর্তের মধ্যে সক্রিয়তা ও নিষ্ঠা দেখিয়ে নির্ভয়ে রাষ্ট্রযন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে ঝাঁপিয়েছিলন। সাধারণ মানুষও লাখে লাখে রাস্তায় নেমেছিলেন নিজেদের রাগ, ক্ষোভ আর ধিক্কার জানাতে। অগণিত লক্ষ প্রাণের এক কণ্ঠে আর্তনাদ ছিল ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’। একপ্রকার বলতে গেলে ঘাম রক্ত দিয়ে লেখা ইতিহাস বাংলার মানুষ সহজে ভুলবেন না।
মেরুদণ্ডহীন। চটিচাটা। থ্রেট-কালচার। ইত্যাদি ইত্যাদি। মানুষের ঘৃণা প্রস্ফুটিত নতুন নতুন শব্দের আবির্ভাবে। ক্ষোভের সবচেয়ে বড় এবং ঐতিহাসিক প্রদর্শন। ১৪ আগস্টের রাত। লক্ষ লক্ষ মহিলা একত্রিত হয়ে ‘রাত দখল’ করলেন। কল্পনাতীত। গত শতাব্দীর সেই আবেগপূর্ণ ও বিদ্রোহী ষাট ও সত্তরের দশকের গণ-আন্দোলন। তার পর অনেক রাজনৈতিক প্রতিবাদ হয়েছে। কিন্তু এত স্বতঃস্ফূর্ত বিশাল দ্রোহ। সত্যিই মনে করা যাচ্ছে না। অনেকেই মনে করছেন যখন আর শোনা যাচ্ছে না সেই কোলাহলপূর্ণ ধ্বনি। অবস্থা বোধ হয় একেবারে স্বাভাবিক হয়ে গেছে। ধারণাটি একেবারেই ভ্রান্ত। সকল শ্রেণীর মানুষ গুমরে রয়েছেন। অন্তরে জ্বলে চাপা আগুন। পেটে লাথি খাওয়ার যন্ত্রণা। সাধারণ মানুষ কিন্তু এখন জাস্টিস আরও বেশি চাইছেন। শুধু অভয়ার জন্যই নয়। আর জি করের মাফিয়াদের শাস্তি দেওয়ার জন্যও নয়। জনগণ চাইছেন আরও অনেক অনেক জাস্টিস। চাইছেন প্রত্যেক জনসাধারনের চোখে দুর্নীতির আখড়া বর্তমান সরকারের দৃষ্টিকটু দোষগুলির মোকাবিলার জাস্টিস।
অভয়া-কেন্দ্রিক ওই বিশাল আন্দোলনের কোনও ফল হল না। যোগ্য শিক্ষকরা রাস্তায় নেমেই বা কী করতে পারবেন? অভয়ার মামলা সবচেয়ে প্রাথমিক স্তরে বিচারক তাঁর রায় দিয়েছেন পাঁচ মাসেই। এই দ্রুততাই অভয়ার প্রথম জয়। বিচারক একমাত্র সঞ্জয় রায়কেই দোষী সাব্যস্ত করায় আর তাকে ফাঁসির সাজা না দেওয়ায় অনেকে অসন্তুষ্ট। খুনের স্থান থেকে প্রমাণ লোপাট করা হয়েছে? এ বিষয়ে নীরবতা দেখে সাধারণ লোক আরও ক্ষিপ্ত। অভয়ার বাবা-মা সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে আর্জি জানিয়ে বিষয়টি আবার কলকাতা হাই কোর্টে ফিরিয়ে এনেছেন। আপাতত, হাই কোর্ট সিবিআই-কে বেশ চেপে ধরেছে। প্রথমেই আদালত গণধর্ষণ হয়নি বলে, বিষয়টিতে সিবিআই-কে অসম্ভব অস্বস্তিতে ফেলেছে। সামনে অপেক্ষা করছে আরও ভয়ঙ্কর প্রশ্ন। সিবিআই-কে প্রামাণিক তথ্য দেখিয়ে বিচারপতির সামনে স্থাপন করতে হবে যে, অকুস্থলের প্রমাণ লোপাট বা পরিবর্তন করা হয়েছে অথবা হয়নি। এই অভিযোগে টালা থানার ওসিকে সিবিআই গ্রেফতার করে হেফাজতে রেখেছিল। প্রাক্তন প্রিন্সিপালের দুর্নীতির কেসও বিচার অনেক বাকি। অতএব অভয়ার আন্দোলন একেবারেই নিষ্ফল নয়। জাস্টিসের খেলা এখনও বাকি।
পরপর আন্দোলনের ধাক্কায। কয়েক দশক ধরে যে সব কাজ রাজ্য সরকার হাসপাতালে করেনি বা করতে পারেনি। সুরক্ষার ক্যামেরা থেকে বিশ্রাম ঘর। হাসপাতালে কোনও বেড খালি আছে না নেই। সবই প্রতিবাদী ডাক্তারদের জয়। আন্দোলনে সারা বিশ্বকে তছা দেশকে কাঁপিয়ে দিয়েছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। এখন ভারতের সর্বোচ্চ স্তরে গুরুত্বপূর্ণ চিন্তা একটাই। সামগ্রিক স্বাস্থ্য পরিকাঠামো উন্নত করার প্রচেষ্টা। সুপ্রিম কোর্টের গঠন করা টাস্ক ফোর্সেই মূল্যবান প্রস্তাব মিলতে পারে। মহানগর আর রাজ্যের বিভিন্ন এলাকার প্রচুর মানুষ। শিক্ষিত শ্রেণি বেশি মানুষরা তৃণমূলকে পছন্দ না করলেও ভোটের সময় বাংলায় সাম্প্রদায়িক শক্তি ঠেকাবার জন্য ওদেরই ভোট দিত। এ বার তা না হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। এটা বিশ্লেষণের বিষয়। শিক্ষকদের নিয়ে বিপাকে পড়েছে দল ও সরকার। গত নয় মাসে আন্দোলনের ধারা অব্যাহত। যে আন্দোলনগুলোর মাধ্যমে বাংলার এক বিশাল অংশ সরকারকে বুঝিয়ে দিয়েছে, এক হাতে ভর্তুকি আর এক হাতে চুরি, দুর্নীতি, তোলাবাজি, হুমকি আর দাদাগিরি। এবার জনগন আর কোনওভাবেই বরদাস্ত করতে পারবে না।
অসংখ্য মিথ্যা ও ভুল কথার সংমিশ্রণ। মিথ্যা কথা আর ভুল কথা। দুটি জোড় শব্দের মধ্যে একটি গুণগত তফাত আছে। মিথ্যা ও ভুল দুই-ই যখন এক মোড়কে পরিবেশিত হয়, তার একটি অন্যতর, বৃহত্তর অভিধা তৈরি হয়। যার নাম প্রতারণা। সম্প্রতি এসএসসি-কাণ্ড নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বার্তা। অনেকটা এই শব্দটিই হয়তো সবচেয়ে প্রযোজ্য। এত বড় সরকারি দুর্নীতির পর সরকারের প্রধান হিসাবে তিনি এতটুকু লজ্জিত বা বিড়ম্বিত বলে মনে হল না। সকল সাধারন মানুষ, সকল শ্রেণার মানুষ বুঝে গেলেন মুখ্যমন্ত্রীর ভাবধারা। অথচ তিনিই স্বয়ং জনসাধারনকে ভাবলেন, ‘কেউ কিচ্ছুটি বোঝে নি, আবার নতুন ধারায় মিথ্যাচারিতা শুরু করা যাক’। জনগনের তীব্র অভিযোগ। এরপরও, স্পর্ধিত উচ্চারণ। অবিরত আশ্বাস। যে আশ্বাসের বিন্দুমাত্র বিশ্বাসযোগ্যতা নেই। মাননীয়া যখন বললেন যে তিনি বেঁচে থাকতে কারও চাকরি যেতে পারে না, তাঁর বিশ্বাসযোগ্যতার বুদবুদ মুহূর্তে ফেটে গেল। সম্ভব কি না তাতেও ঘোর সন্দেহ! শিক্ষা-প্রশাসনের দুর্নীতি? এক বিরাট অংশ নির্দোষ, অর্থাৎ যোগ্য। প্রকৃত দোষী অর্থাৎ অযোগ্যদের আলাদা করার কোনও দিশা? যোগ্যদের প্রতি সুবিচার ও অযোগ্যদের শাস্তি সম্ভব? প্রকৃত অপরাধী অর্থাৎ যে রাজনৈতিক নেতা কর্তা কর্মীদের সীমাহীন অর্থলোলুপতায় এমন ঘটল। বিচারের আঙিনায় টেনে আনা প্রায় অসম্ভব গুণধরদের? এই বিপুল আয়তনের দুর্নীতি সম্বন্ধে রাজ্যের শীর্ষ নেত্রী ও নেতারা অনবহিত ছিলেন? সরকারের এই ঘোর অপরাধ জনসমক্ষে উন্মোচিত হওয়ার পরও স্টেডিয়াম-ভাষণের পর মুখ্যমন্ত্রীর মানবিক মুখ নিয়ে খোদ শিক্ষামন্ত্রী থেকে দলীয় তাঁবেদারসমূহ উদ্বেলিত গদগদ। নেত্রীস্তবের আবহে ধ্বনিত শব্দ ‘আশ্বাস’।
আশ্বাসের পাশাপাশি নির্দেশ, চাকরিহারা শিক্ষকরা স্বেচ্ছাশ্রমে শিক্ষাদান করুন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষে অতি স্বাভাবিক নির্দেশ। পরিস্থিতি ম্যানেজ। ক্ষতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা। পশ্চিমবঙ্গে এখন প্রতিটি ক্ষেত্রেই স্বাভাবিক প্রাতিষ্ঠানিক কাজকর্ম বন্ধ। পাশাপাশি সমান্তরাল ব্যবস্থা চালু করাই হল প্রশাসনিক ম্যানেজ কর্মকাণ্ডের ধারা। পুরকর্মী থেকে স্বাস্থ্যকর্মী, সকলকেই অস্থায়ী ভিত্তিতে এবং দলীয় সংগঠনের উপর নির্ভরতার ভিত্তিতে নিয়োগ। যোগ্যতা বিচার অপ্রাসঙ্গিক। নিয়মবহির্ভূত অর্থাগমের ব্যবস্থা। বিপুল সমর্থক সমাজের মধ্যে সিস্টেমের বদলে, সিস্টেমের বাইরে পার্টি মুখাপেক্ষিতার পাকাপাকি বন্দোবস্ত। সিভিক ভলান্টিয়ার, পার্শ্বশিক্ষকের পর এখন সিভিক শিক্ষক তৈরির পালা? সিস্টেম-ধ্বংসকারী সমান্তরাল ব্যবস্থা নির্মাণ বর্তমান শাসনের একটি বিশিষ্ট অবদান। সুপারনিউমেরারি বা অতিরিক্ত শূন্যপদ বন্দোবস্তকেও সেই প্রেক্ষাপটে দেখা সম্ভব। এসএসসি-র সিস্টেমকে এড়িয়ে আলাদা এই তালিকার ভাবনায় মন্ত্রিসভার সিলমোহর কিংবা রাজ্যপালের স্বাক্ষর। রাজনৈতিক ও সামাজিক নৈতিকতাকে পদদলনের দায় থেকে মুক্ত হওয়া অসম্ভব। মুখ্যমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর বারংবার বার্তা। চাকরিহারাদের ‘পাশে থাকার’। মানবিক আস্থা কিংবা মহৎ আশ্বাস বিতরণের উচ্চভূমি বিচ্যুত সরকার। বিপুল অপরাধের দায় সর্বাংশে স্বীকার করলেই পাপ ক্ষয় হলেও হতে পারবে।
এখানেও, মুর্শিদাবাদে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নির্দেশ! ‘মমতার সরকারের গালে থাপ্পড়!’ মুর্শিদাবাদে ভয়াবহ হিংসা। কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ। মান্যতা পেল কলকাতা হাইকোর্টে। মুর্শিদাবাদে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। শান্তিরক্ষায় মুর্শিদাবাদে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেফতার করে কড়া পদক্ষেপ। জানিয়েছে হাইকোর্ট। পুলিশের সঙ্গে একযোগে কাজ করবে কেন্দ্রীয় বাহিনী। নির্দিষ্ট কাউকে রক্ষা করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়, সামগ্রিকভাবে সকলকে সুরক্ষা দিতে হবে। জানিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। আদালত জানিয়েছে এই ধরনের অভিযোগ এলে আদালত চোখ বন্ধ করে থাকতে পারে না। ছুটির দিনে কোর্ট খুলে এই রায় দেওয়া হয়েছে। মমতার সরকারের গালে থাপ্পড়, রাজীব কুমারের গালে থাপ্পড়। আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি বলেন, কোর্ট অর্ডার দিয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন থাকবে মুর্শিদাবাদে। সিএপিএফের ক্ষেত্রে এডিজি সিআইএসএফকে মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশ কেন্দ্রীয় বাহিনীকে সহযোগিতা করবে। ভয়াবহ হিংসা ছড়িয়েছিল মুর্শিদাবাদে। একেবারে ভয়াবহ হিংসা। একের পর এক সরকারি গাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। সরকারি সম্পত্তি নষ্ট। জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে গাড়ি। তুমুল অশান্তি। পুলিশ অশান্তি মোকাবিলার চেষ্টা করেছে। কতটা সম্ভব হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্নটা থেকেই গিয়েছে। সংশোধিত ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদে ভয়াবহ তাণ্ডব মুর্শিদাবাদে। সুতি, ধুলিয়ানে ভয়াবহ পরিস্থিতি। শপিং মলেও লুঠপাট। ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদের সঙ্গে শপিং মলের লুঠপাটের কী সম্পর্ক সেটা কিছুতেই বোঝা যাচ্ছে না। আতঙ্কে বাসিন্দারা। তবে একইভাবে এখানেই পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্নটা থেকেই গেল। পুলিশ কী শুধু শিক্ষার পেটে লাথিই মারতে জানে?