Tuesday, April 8, 2025
spot_imgspot_img

Top 5 This Week

spot_img

Related Posts

ধোনির চেন্নাইকে হারিয়ে জয়ের হ্যাটট্রিক দিল্লির, জয়ের হ্যাটট্রিক হল না শ্রেয়সের পাঞ্জাবের, জিতল সঞ্জুর রাজস্থান

দিল্লি ক্যাপিটালস দলের জয়ের হ্যাটট্রিক। চেন্নাই সুপার কিংস দলের পরাজয়ের হ্যাটট্রিক। চিপকে হারল চেন্নাই। দিল্লির ১৮৩/৬-এর জবাবে চেন্নাই থামল ১৫৮/৫ রানে। হার ২৫ রানে। ব্যাটিং এবং বোলিং, দুই বিভাগেই অত্যন্ত সাদামাঠা পাঁচ বার আইপিএল জয়ী চেন্নাই। ১৬ বছর পর আইপিএলের প্রথম তিনটি ম্যাচ জিতল দিল্লি। চেন্নাইয়ের মাঠে জিতল ১৫ বছর পর। টস জিতে দিল্লি অধিনায়ক অক্ষর প্যাটেল প্রথম ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন। দিল্লি ক্যাপিটালসে মরশুমে প্রথমবারের মতো ওপেনিংয়ে কেএল রাহুল। অন্য ওপেনার জ্যাক ফ্রেজার-ম্যাকগার্ক প্রথম ওভারেই খলিল আহমেদের বলে কোনও রান না করে আউট হন। অভিষেক পোড়েল নেমে ঝোড়ো গতিতে শুরু করেও রবীন্দ্র জাদেজার ওভারে ২০ বলে ৩৩ রানে আউট হন। কেএল রাহুল শেষ ওভারের দ্বিতীয় বলে ৫১ বলে ৭৭ রানে আউট হন। অক্ষর প্যাটেল ২১, সমীর রিজভি ২০, ট্রিস্টান স্টাবস করেন ২৪। দিল্লি ১৮৩ রানে থামে। সিএসকে’র হয়ে খলিল আহমেদ ও বিপ্রজ নিগমের ২ উইকেট। রবীন্দ্র জাদেজা, নূর আহমেদ, মাথিশা পাথিরানার শিকার একটি করে উইকেট।

জবাবে ব্যাট করতে নেমে উইকেট খোয়াতে থাকে সিএসকে। চেন্নাইয়ের পিচ মন্থর। ব্যাট করতে নেমে ১৮৪ রান তোলা সহজ ছিল না। ৭৪ রানের মধ্যেই ৫ উইকেট হারিয়ে বসে। দীর্ঘ দিন পর ওপেনিং জুটিতে ফিরেছিলেন রাচিন রবীন্দ্র এবং ডেভন কনওয়ে। রাচীন রবীন্দ্র ৩, ডেভন কনওয়ে ১৩, রুতুরাজ গায়কোয়াড় ৫, শিবম দুবে ১৮, রবীন্দ্র জাদেজা ২ রানে প্যাভিলিয়নে ফেরেন। দ্বিতীয় ওভারেই বাংলার মুকেশ কুমারের বলে তাঁর হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন রাচিন। রুতুরাজ গায়কোয়াড় পাঁচ রান করে মিচেল স্টার্কের বলে জেক ফ্রেজার ম্যাকগার্কের হাতে ক্যাচ দেন। দ্বিতীয় বলেই ফিরে যেতে পারতেন বিজয় শঙ্কর। স্টার্কের ইয়র্কার তাঁর জুতোয় আছড়ে পড়া সত্ত্বেও অভিষেক পোড়েলের আপত্তিতে দিল্লি রিভিউ নেয়নি। অভিষেক বোঝাতে থাকেন, বল আগে ব্যাটে লেগেছে। রিপ্লে-তে স্পষ্ট দেখা যায় বল আগে শঙ্করের জুতোয় লেগেছে। এর পরে শঙ্করের গোটা দুয়েক ক্যাচও ছাড়ে দিল্লি। বিজয় শংকর ৬৯ রান করেন। শিবম দুবে ও রবীন্দ্র জাডেজা আউট হওয়ার পর সাতে ব্যাট করতে নামেন ধোনি। মহেন্দ্র সিং ধোনি ৩০ রান করেন। মন্থর উইকেটে শ্লথ ব্যাটিং প্রদর্শন করতে থাকেন ‘থালা’। চেন্নাইয়ের ইনিংস থেমে যায় ১৫৮ রানে। পরপর তিন ম্যাচ হার চেন্নাই। মিচেল স্টার্ক, মুকেশ কুমার, কুলদীপ যাদব নেন ১টি উইকেট। ফাফ ডু প্লেসিসের জায়গায় দিল্লি একাদশে জায়গা পেয়েছিলেন সমীর রিজভি। সিএসকে’তে ক্রেইগ ওভারটনের জায়গায় ডেভন কনওয়ে এবং রাহুল ত্রিপাঠীর জায়গায় মুকেশ চৌধুরী সুযোগ পান।

মহেন্দ্র সিং ধোনির ব্যাট ঝড় তুলেও ম্যাচ ফিনিশ করার দক্ষতা হারিয়েছে। একা দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে ম্যাচ জেতাতে আর পারছেন না। ‘বুড়ো’ হয়ে গিয়েছেন ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক। শনিবার ধোনিকে অবসর নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন সিএসকে-র ভক্তরা। ধোনি কি সত্যিই অবসর নেবেন এবার? সিএসকে-র হেড কোচ স্টিফেন ফ্লেমিং জল্পনা উড়িয়ে দিয়েছেন। ফ্লেমিং বলেছেন, ধোনির ভবিষ্যৎ নিয়ে তিনি কিছু জানেন না। সিএসকে-র হেড কোচ বলেন, ‘কারও অবসর নিয়ে বিবৃতি দেওয়া আমার কাজ নয়। এই সম্পর্কে আমার কোনও ধারণাও নেই। আমি এখনও ওর সঙ্গে কাজ করাটা উপভোগ করি। ও এখনও ভালো খেলছে। আমি ওকে অবসর নিয়ে কিছু জিজ্ঞেসও করি না।’

অর্ধশতরান করে রানে ফিরলেন যশস্বী জয়সওয়াল। রাজস্থান রয়্যালসের বাকি ব্যাটাররা যথাযথ সঙ্গ দিলেন। পাঞ্জাব কিংসের ঘরের মাঠে রাজস্থানকে টার্গেট দেয় ২০৬ রান। টস জিতে চোখ বন্ধ করে প্রথমে বল করার সিদ্ধান্ত নেন শ্রেয়স আয়ার। রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে ওপেন করতে নেমে অর্ধশতরান করলেন যশস্বী জয়সওয়াল। শুরুতে যশস্বী। শেষে রিয়ান পরাগ। রান পেলেন সঞ্জু স্যামসনও। প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ২০৫ রান করল রাজস্থান। চণ্ডীগড়ের মাঠে প্রথম বার ২০০-র বেশি রান হল আইপিএলে। লকি ফার্গুসনের বলে ৩৮ রানে আউট হন সঞ্জু। তিন নম্বরে নেমে পরাগও এই ম্যাচে মারমুখী ব্যাটিং শুরু করেন। অর্ধশতরান করেন যশস্বী। আইপিএলে এটি তাঁর সবচেয়ে মন্থর অর্ধশতরান। ৫০ পার করার পরে কয়েকটি বড় শট মারেন যশস্বী। ফার্গুসনের বলেই ৬৭ রানে ফেরেন। নীতীশ রানা ১২ রান করে আউট হন। ডেথ ওভারের জন্য অর্শদীপ সিংহ, মার্কো জানসেন ও মার্কাস স্টোইনিসকে রেখেছিলেন শ্রেয়স। পরাগ ও শিমরন হেটমেয়ার প্রতি বলে বড় শট খেলার চেষ্টা করছিলেন। হেটমেয়ার ২০ রান করে আউট হলেও শেষ পর্যন্ত থাকা পরাগকে সঙ্গ দেন ধ্রুব জুরেল। ২০০ রান পার করে রাজস্থান। পরাগ ৪৩ রান করে অপরাজিত। চণ্ডীগড়ের এই মাঠে আইপিএলে এটিই সর্বাধিক রান।

২০৬ রান তাড়া করতে নেমে প্রথম বলেই প্রিয়াংশ আর্যের উইকেট হারায় পঞ্জাব। বোল্ড করেন জোফ্রা আর্চার। তিন নম্বরে নেমে শ্রেয়স পরপর দু’টি চার মারেন আর্চারকে। সেই ওভারের শেষ বলে আবার বড় শট মারতে গিয়ে বোল্ড শ্রেয়স। প্রথম ওভারে পাঞ্জাবকে জোড়া ধাক্কা দেন আর্চার। রান পাননি স্টোইনিস। এক রানে ফেরেন। পাঞ্জাবের ভরসা ওপেনার প্রভসিমরন সিং ১৭ রানে আউট। ৪৩ রানে ৪ উইকেট পড়ে যায় পাঞ্জাবের। নেহাল ওয়াধেরা ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েলর জুটি এগিয়ে নিয়ে যায়। অর্ধশতরান করেন তরুণ ওয়াধেরা। ৩০ রান করে আউট হন ম্যাক্সওয়েল। ওয়ানিন্দু হাসরঙ্গ আউট করেন ওয়াধেরাকে ৬২ রানে। শশাঙ্ক সিং পারলেন। রাজস্থানের অভিজ্ঞ বোলারদের সামনে ১৫৫ রানে শেষ হল পাঞ্জাবের ইনিংস।

আঙুলের চোটের জন্য চলতি আইপিএলের প্রথম তিন ম্যাচে কিপিং করতে পারেননি সঞ্জু স্যামসন। ফিল্ডিং না করে শুধুমাত্র ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হিসেবে ব্যাট করতে নামেন। আইপিএল ২০২৫-এর প্রথম তিন ম্যাচে রাজস্থান রয়্যালসকে নেতৃত্ব দেন রিয়ান পরাগ। পাঞ্জাব কিংসের বিরুদ্ধে রাজস্থানের চতুর্থ লিগ ম্যাচে নেতৃত্বে ফেরেন সঞ্জু স্যামসন। রয়্যালসের ক্যাপ্টেন্সির নিয়েই ব্যক্তিগত নজির গড়েন সঞ্জু। ভেঙে দেন কিংবদন্তি শেন ওয়ার্নের সর্বকালীন রেকর্ড। মুল্লানপুরে আইপিএল ২০২৫-এর অ্যাওয়ে ম্যাচে পাঞ্জাব কিংসকে দাপটের সঙ্গে পরাজিত করে রাজস্থান রয়্যালস। রাজস্থানের ক্যাপ্টেন হিসেবে আইপিএলে সব থেকে বেশি ম্যাচ জেতার রেকর্ড গড়েন অর্থাৎ, ম্যাচ জয়ের নিরিখে রাজস্থানের সব থেকে সফল দলনায়কে স্যামসন। রাজস্থান রয়্যালসকে মোট ৬২টি ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়ে ৩২টি ম্যাচে জয়। এতদিন রাজস্থানের ক্যাপ্টেন হিসেবে সব থেকে বেশি ম্যাচ জয়ের রেকর্ড ছিল শেন ওয়ার্নের। অসি কিংবদন্তির নেতৃত্বে রাজস্থান রয়্যালস মোট ৫৫টি ম্যাচে ৩১জয়। শেন ওয়ার্নের থেকে রেকর্ড ছিনিয়ে নিলেন সঞ্জু।

রাজস্থান রয়্যালসের ক্যাপ্টেন্সি রেকর্ড
১. সঞ্জু স্যামসন- ৬২ ম্যাচে ৩২ জয়
২. শেন ওয়ার্ন- ৫৫ ম্যাচে ৩১ জয়
৩. রাহুল দ্রাবিড়- ৪০ ম্যাচে ২৩ জয়
৪. স্টিভ স্মিথ- ২৭ ম্যাচে ১৫ জয়
৫. অজিঙ্কা রাহানে- ২৪ ম্যাচে ৯ জয়

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Popular Articles