শূন্য মাধ্যাকর্ষণ শক্তি। ভারতের একমাত্র ব্যক্তি চূড়ান্ত সীমান্তে সময় অতিবাহিত করেছিলেন। উইং কমান্ডার রাকেশ শর্মা। মহাকাশে প্রাচীন ভারতীয় শৃঙ্খলা অনুশীলনকারী প্রথম ব্যক্তি হওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন। মহাকাশে বিস্ফোরণের ৪০ বছরেরও বেশি সময় পর, উইং কমান্ডার শর্মা মাধ্যাকর্ষণ শক্তির অনুপস্থিতির কারণে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জ এবং মিশনে থাকা রাশিয়ান মহাকাশচারীদের প্রশিক্ষণ পদ্ধতির কথা ব্যাক্ত করেছিলেন। মহাকাশচারীদের সোয়ুজ টি-১১-এর মিশন। ১৯৮৪ সালের ৩ এপ্রিল সোভিয়েত স্যালিউট ৭ মহাকাশ স্টেশনের ষষ্ঠ অভিযান। মহাকাশযাত্রীরা মহাকাশের কঠোরতা সহ্য করার জন্য প্রস্তুত। ভারতীয় বিমান বাহিনীর প্রাক্তন পাইলট বলেন, উৎক্ষেপণের আগে, মহাকাশে এবং পৃথিবীতে ফিরে আসার পরের সমস্ত পর্যায়ে মহাকাশচারীদের তুলনায় কতটা প্রস্তুত তা প্রত্যক্ষ করা প্রয়োজন। মহাকাশে শূন্য মাধ্যাকর্ষণ। কক্ষপথে টান অনুপস্থিত। সেই মাধ্যাকর্ষণকে প্রতিলিপি করার জন্য ইলাস্টিক কর্ড দিয়ে একটি হারনেস তৈরি করা হয়। নিজেকে ভারসাম্য বজায় রাখাও কিছুটা কঠিন। উইং কমান্ডার শর্মা বলেছিলেন, প্রথম কয়েকটি ফ্লাইটের জন্য সিস্টেমগুলি প্রমাণ করা এবং সেগুলি নির্ভরযোগ্য কিনা তা নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ।

পৃথিবীর খোলা হাওয়ায় নিশ্বাস নেবেন সুনীতারা। দমকা হাওয়ার জেরে রকেট উৎক্ষেপণ বাতিল সুনীতাদের। ফেরার নতুন দিনক্ষণ ঠিক করে নাসা। পৃথিবীর মাটিতে পা রাখার কথা ছিল দুই নভোচর সুনীতা উইলিয়ামস, বুচ উইলমোরের। এলন মাস্কের মহাকাশযানের যান্ত্রিক গোলযোগের কারণে পিছিয়ে দেওয়া হয়। দমকা হাওয়া ও বৃষ্টির কারণে রকেট উৎক্ষেপণ সম্ভব হয়নি। সম্ভাব্য তারিখ ১৯ মার্চ। তার আগে দুই নভোচরের ফেরা সম্ভব নয়। গত বছর থেকে মহাশূন্যে বন্দি দুই নভোচর। ‘বন্ধু’ মাস্কের সাহায্য চেয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। টেসলা কর্তার আশ্বাসে সুনীতাদের ফেরাতে প্রস্তুতি শুরু স্পেস এক্স সংস্থার। নাসা ও স্পেস এক্স সহযোগিতায় দুজনকে নিয়ে পৃথিবীতে পৌঁছনোর কথা ড্রাগন স্পেসক্র্যাফটের।

অভিযানের নাম ‘ক্রু-১০ মিশন’। ১২ মার্চ বুধবার ভোর ৫টা ১৮ নাগাদ আমেরিকার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে স্পেস এক্সের ফ্যালকন নাইন রকেট উৎক্ষেপণ করার কথা ছিল। মহাকাশযানে আরও চার নভোচর, নাসার অ্যান ম্যাক্লেন এবং নিকোল আয়ার্স, জাপানের তাকুয়া ওনিশি এবং রাশিয়ার কিরিল পেসকভের থাকার কথা। পরিকল্পনা ছিল যে, পাঠানো চারজনকে গবেষণার বিবরণ ব্যাখ্যা করে একই মহাকাশযানে পৃথিবীতে ফিরবেন সুনীতারা। অভিযানের নাম ‘ক্রু-১০ মিশন’। সন্ধ্যে প্রায় সাড়ে ৭টা নাগাদ ফ্যালকন রকেট ৯-এর উৎক্ষেপণের পরিকল্পনা দমকা হাওয়া ও বৃষ্টির কারণে বাতিল। বৃহস্পতিবার ভোর প্রায় সাড়ে ৪টে নাগাদ স্পেস এক্স ও নাসা বিবৃতি দিয়ে জানায়, কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে ওড়ার কথা ছিল ফ্যালকন রকেট ৯-এর। রকেট লঞ্চপ্যাডের এক ক্রুটির কারণে এই মিশন বাতিল। মহাকাশযানটি উড়ান ভরার ঠিক ঘণ্টা চারেক আগেই হাইড্রলিক সিস্টেমে সমস্যা প্রত্যক্ষ করে। বিপদ এড়াতে তড়িঘড়ি মিশন বাতিলের সিদ্ধান্ত। নাসা জানায়, ১৯ মার্চের আগে দুই নভোচর পৃথিবীতে ফিরবেন না। শনি ভোর সাড়ে ৪টে নাগাদ ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে সুনীতাদের ফিরিয়ে আনার জন্য রকেট উৎক্ষেপণ।

ভারতীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকান মহাকাশচারী সুনীতা উইলিয়ামস এবং তাঁর সঙ্গী বুচ উইলমোরকে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনতে মহাকাশের উদ্দেশে রওনা ইলন মাস্কের স্পেসএক্সের মহাকাশযানের। ভারতীয় সময় অনুযায়ী, শনিবার ভোর ৪টে ৩৩ মিনিটে আমেরিকায় নাসার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে মহাকাশযানটির উৎক্ষেপণ সফল। মহাকাশযানে আরও চার মহাকাশচারী আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনের আইএসএসের উদ্দেশে পাড়ি দেন। আছেন নাসা ছাড়াও জাপান এবং রাশিয়ার প্রতিনিধি। নাসা এবং মাস্কের সংস্থার যৌথ উদ্যোগে ক্রিউ-১০-এর উৎক্ষেপণ। মাস্কের ড্রাগন যান স্পেসক্র্যাফ্ট নিয়ে মহাকাশের উদ্দেশে পাড়ি ফ্যালকন ৯ রকেটের। উৎক্ষেপণকালে আমেরিকার স্থানীয় সময় ছিল সন্ধ্যা ৭টা ৩ মিনিট। ক্রিউ-১০ সুনীতাদের নিয়ে ফিরবে ১৯ মার্চের পর। ক্রিউ-১০ অভিযানে মহাকাশে গেলেন নাসার অ্যান ম্যাক্লেন, নিকোল আইয়ার্স, জাপানের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা জাক্সার প্রতিনিধি টাকুয়া ওনিশি এবং রাশিয়ার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা রসকসমসের প্রতিনিধি কিরিল পেসকভ।

এদিকে, মহাকাশে স্বয়ংক্রিয় ভাবে সংযুক্ত ইসরোর দুটি কৃত্রিম উপগ্রহ। নয়া ইতিহাস গড়ল ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। ‘আনডকিং’ এর পদক্ষেপকে ‘যুগান্তকারী’ বলে মনে করছেন মহাকাশ গবেষকরা। এবার থেকে ভবিষ্যতে নিজে নিজেই পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত হতে পারবে ভারতীয় মহাকাশযানগুলি অর্থাৎ চন্দ্রযান-৪, গগনযানের মতো অভিযানগুলির ক্ষেত্রেও। পৃথিবী থেকে আর তাদের নিয়ন্ত্রণ করার প্রয়োজনই পড়বে না। এমনটাই আশা। স্পেডেক্স মিশনের স্বপ্ন বেশ দৃঢ় হল। দুই কৃত্রিম উপগ্রহের মধ্যে ‘করমর্দন’ সম্পন্ন। রাশিয়া, আমেরিকা, চিনের পর বিশ্বের চতুর্থ দেশে হিসাবে এই সাফল্য অর্জন করে ভারত। ‘স্পেস ডকিং’ এক জটিল প্রক্রিয়া। মহাকাশে দুই উপগ্রহকে একই বিন্দুতে অবস্থান করানোর নামই ‘স্পেস ডকিং’। ইসরোর লক্ষ্য ছিল স্পেডেক্স ১ ও স্পেডেক্স ২, এই দুই কৃত্রিম উপগ্রহকে একত্রিত করা। ২০২৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর সেই দুই উপগ্রহকে উৎক্ষেপণ স্পেডেক্স ১ হল চেজার ও স্পেডেক্স ২ টার্গেট। ১২ জানুয়ারি ইসরোর সূত্র বলেছিল, ১৫ মিটার থেকে ৩ মিটার দূরত্ব পর্যন্ত কাছাকাছি আনার পরে ফের দুই উপগ্রহকে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কয়েকদিনের মধ্যেই ইসরোর স্যাটেলাইট ডকিং সফল। ‘আনডকিং’ পদ্ধতিরো সাফল্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংয়ের কথায় মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
এসআরও-র ভারতীয় অন্তরীক্ষ স্টেশনে হোস্ট মহাকাশচারীর সংখ্যা। প্রথমে তিন জন ধারণক্ষমতা ৫২ টন ওজনের বিএএস এর। বিএএস প্রাথমিকভাবে তিনজন মহাকাশচারী ভবিষ্যতে এর ধারণক্ষমতা ছয়জনে উন্নীত করার পরিকল্পনা। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং জানান ২০৩৫ সালের মধ্যে ভারতের নিজস্ব মহাকাশ স্টেশন থাকবে। ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা অর্থাৎ ইসরো ভারতীয় অন্তরীক্ষা স্টেশন অর্থাৎ বিএএস এর পরিকল্পনা উন্মোচনে স্পষ্ট যে, ভারতের প্রথম মহাকাশ স্টেশন দেশের মহাকাশ কর্মসূচি এবং অনুসন্ধানে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত। বেঙ্গালুরুর ইউআর রাও স্যাটেলাইট সেন্টারে অনুষ্ঠিত কন্নড় টেকনিক্যাল সেমিনারে তথ্য প্রকাশ। ভারতীয় অন্তরীক্ষা স্টেশন বিএএস হল একটি মডিউলার স্পেস স্টেশন যা ভারত দ্বারা তৈরি করা হচ্ছে জীবন বিজ্ঞান, চিকিৎসা এবং মহাকাশ অনুসন্ধানের মতো ক্ষেত্রে বৈজ্ঞানিক গবেষণার জন্য। প্রথম মডিউলটি ২০২৮ সালের মধ্যে চালু হবে। স্টেশনটি ২০৩৫ সালের মধ্যে পুরোপুরি কার্যকর হবে। বিএএস-এর লক্ষ্য আন্তর্জাতিক মহাকাশ গবেষণায় দীর্ঘমেয়াদী মিশন। বিএএস ভবিষ্যতের মহাকাশ অভিযানে মাইক্রোগ্রাভিটি, মানব স্বাস্থ্য এবং জীবন-রক্ষণশীল প্রযুক্তির উপর গবেষনায় ভারতকে মহাকাশ অনুসন্ধানে এক গুরুত্বপূর্ণ দিশা দেবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের মতো দেশগুলির সঙ্গে তাল মিলিয়ে নভোচারীদের মহাকাশে প্রেরণের পাশাপাশি তরুণ বিজ্ঞানীদের অনুপ্রাণিত করা এবং মহাকাশে নতুন বাণিজ্যিক সম্ভাবনা তৈরি করা। চন্দ্রযান-১ এর মাধ্যমে চাঁদে জল আবিষ্কার থেকে শুরু করে চন্দ্রযান-৩ এর মাধ্যমে চাঁদের দক্ষিণ মেরুর কাছে অবতরণ, ইসরো উল্লেখযোগ্য মাইলফলক। বিএএস ইসরো বিশ্বব্যাপী মহাকাশ অনুসন্ধানে ভারতের স্থানকে সুদৃঢ় করবে।