Wednesday, March 12, 2025
spot_imgspot_img

Top 5 This Week

spot_img

Related Posts

ঘটনার ঘনঘটায় চ্যাম্পিয়ান্স ট্রফি!‌ দুবাইয়ে ভারতের চ্যাম্পিয়ান হওয়ার সাক্ষী সস্ত্রীক অভিষেক ডালমিয়া

২০১৩ সালের পরে ফের ৫০ ওভারের ক্রিকেটে আবার কোনও আইসিসি ট্রফি জিতল ভারত। ২০১৩ সালেও আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতেছিল। তারপর টানা ১১ বছর কোনও আইসিসি ট্রফি ঢোকেনি ভারতের ক্যাবিনেটে। খরা কাটে ২০২৪ সালে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতে ভারতীয় দল। নয় মাসের মধ্যে আরও একটা আইসিসি ট্রফি জিতল ভারত। ১২ বছর পর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়। ভারতের সাফল্যের দিনে দুবাই স্টেডিয়ামে তৈরি অসংখ্য মুহূর্ত। ট্রফি হাতে নিয়ে ভারতীয় দলের উল্লাসের পাশাপাশি ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে জায়গা করে নিল অসংখ্য মনে রাখার মূহুর্তে

ভারতের চ্যাম্পিয়ান হওয়ার সাক্ষী সস্ত্রীক অভিষেক ডালমিয়া

বাংলার প্রশাসক। হাজির দুবাইয়ে। স্রেফ চ্যাম্পিয়ান্স ট্রফির ফাইনালে দেশের জয় কাছ থেকে প্রত্যক্ষ করবেন বলেই। বিরাট-‌রোহিতদের ভারত চ্যাম্পিয়ান হওয়ার সাক্ষী হতে হাজির ছিলেন আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের মেম্বার অভিষেক ডালমিয়া সস্ত্রীক। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে টিম ইন্ডিয়ার টানটান উত্তেজনার লড়াইয়ে জয়ী ভারতীয় দলের উদযাপনকে স্বচক্ষে মাঠে থেকে উপভোগ করলেন কিংবদন্তি প্রশাসক জগমোহন ডালমিয়ার পুত্র অভিষেক ডালমিয়া। সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী শালিনী ডালমিয়াও। ভারতের জয় দেখে দারুন উচ্ছ্বসিত বাংলার অন্যতম সেরা ক্রিকেট প্রশাসক প্রাক্তন সিএবি প্রেসিডেন্ট অভিষেক ডালমিয়া।

বিরাট মনের কোহলির প্রণাম সামির মায়ের পা ছুঁয়ে

আবেগঘন দৃশ্য। বিরাট কোহলি প্রণাম করলেন মহম্মদ সামির মা’‌কে। রবিবার দুবাইয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনাল দেখতে হাজির হয়েছিলেন ক্রিকেটারদের পরিবারের সদস্যরা। স্বামীদের হয়ে গলা ফাটাচ্ছিলেন অনুষ্কা শর্মা-ঋতিকা সাজদেরা গ্যালারি থেকেই। হাজির ছিলেন তারকা পেসারের মা। চোট সারিয়ে আইসিসি টুর্নামেন্টের ফাইনালে খেলছে ছেলে, সেই মুহূর্তের সাক্ষী থাকতে স্টেডিয়ামে হাজির ছিলেন। মায়ের সামনে উইকেটও নিলেন বাংলার ক্রিকেটার মহম্মদ সামি। অল্প রানে ফিরিয়ে দেন ড্যারিল মিচেলকে। নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে ভারত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিততেই উল্লাসে মাতোয়ারা দুবাই ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামের গ্যালারি। ক্রিকেটারদের পরিবারের সদস্যরাও নেমে আসেন মাঠে। বিরাট এবং সামি এগিয়ে গেলেন তারকা পেসারের মার কাছে। হাসিমুখে তাঁর পা ছুঁয়ে প্রণাম করেন কিং কোহলি। বিরাটকে আশীর্বাদও করেন সামির মা। বিরাটের এমন নম্র আচরণে মুগ্ধ বিশ্ব।

ফস্কে গেল চার ক্যাচ, সেরা ফিল্ডার?‌

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে জঘন্য ফিল্ডিং করে ভারত। কমপক্ষে চারটি ক্যাচ ফস্কানোর পাশাপাশি গ্রাউন্ড ফিল্ডিং নড়বড়ে। ফাইনালের সেরা ফিল্ডারের মেডেল। ভারতের ফিল্ডিং কোচ টি দিলীপ নাজেহাল। নমিনেশন তালিকায় তিনজনের নাম। অধিনায়ক রোহিত শর্মাকে ছাপিয়ে সেরা রবীন্দ্র জাদেজা। সেরা ফিল্ডারের মেডেল পরিয়ে দিলেন ফিল্ডিং কোচই। জাদেজাকে সেরা ফিল্ডার বেছে নেওয়া হয়। জাদেজার নাম ঘোষণা। উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন সতীর্থরা। গলায় চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জয়ীর পদক এবং ফাইনালের সেরা ফিল্ডারের পদক নিয়ে পোজ জাদেজার।

‘সাইলেন্ট হিরো’ শ্রেয়স আইয়ার

২০২৩ বিশ্বকাপে দুর্দান্ত পারফর্ম্যান্স। শ্রেয়স আইয়ার ভারতের ওয়ান ডে স্কোয়াডে। টেস্ট ও টি-২০ ক্রিকেটে জাতীয় দলে বেশ কিছুদিন সুযোগ পাননি। শ্রেয়স বড় মঞ্চের খেলোয়াড়, প্রমাণ করলেন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে। দলের হয়ে সব থেকে বেশি রান করে শ্রেয়স ভারতের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন। রোহিত-কোহলিদের নিয়ে যাবতীয় চর্চার মাঝে নিঃশব্দে নিজের কাজ করে যান শ্রেয়স। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে গ্রুপ লিগের প্রথম ম্যাচে বড় রানের ইনিংস না খেরতে পারলেও ফাইনাল পর্যন্ত পরের চারটি ম্যাচে দুর্দান্ত ব্যাটিং পারফর্ম্যান্স উপহার দেন আইয়ার। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ২০২৫-এ শ্রেয়স আইয়ার বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচে ২টি বাউন্ডারির সাহায্যে ১৭ বলে ১৫ রান করে আউট হন। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে লিগের দ্বিতীয় ম্যাচে ৬৭ বলে ৫৬ রানে ৫টি চার ও ১টি ছক্কা। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে গ্রুপের তৃতীয় তথা শেষ ম্যাচে শ্রেয়স ৯৮ বলে ৭৯ রানে ৪টি চার ও ২টি ছক্কা। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সেমিফাইনালে ৬২ বলে ৪৫ রান করেন শ্রেয়স আইয়ার। ৩টি চার মারেন। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ফাইনালে ৬২ বলে ৪৮ রান করে আউট হন আইয়ার। ২টি চার ও ২টি ছক্কা মারেন। ক্যাপ্টেন রোহিত শ্রেয়সকে ভারতের সাইলেন্ট হিরো আখ্যা দেন। শ্রেয়স আইয়ার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সব থেকে বেশি রান সংগ্রহকারী ব্যাটারদের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে। ৫ ম্যাচে ব্যাট করে ৪৮.৬০ গড়ে ২৪৩ রান। স্ট্রাইক-রেট ৭৯.৪১। শ্রেয়স ২টি হাফ-সেঞ্চুরি। সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস ৭৯ রানের।

টিম ইন্ডিয়ার ১১জনের ১১জনই স্টার

ভারতীয় দল এবারের চ্যাম্পিয়ান্স ট্রফিতে পাঁচ ম্যাচ খেলে জিতেছে পাঁচটি ম্যাচেই। দুবাইয়ে তৃতীয়বারের জন্য চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শিরোপা জয়ী ভারত। আইসিসির সব ইভেন্ট মিলিয়ে এটি ভারতের সপ্তম ট্রফি। জোড়া টি২০ বিশ্বকাপ, জোড়া ওডিআই বিশ্বকাপ এবং দুবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জেতে ভারত। ২০০২ সালে যুগ্মভাবে এবং ২০১৩ সালে এককভাবে। রোহিত শর্মা-গৌতম গম্ভীর যুগ। ভারতের সেরা অল-ফরম্যাট বোলার জসপ্রীত বুমরাহর কোনও প্রভাবই ভারতের পারফরমেন্সে পড়েনি। ভারতের অন্যতম সেরা বোলার আর্শদীপ সিং, সামির সঙ্গে স্পিনাররা। বরুণ চক্রবর্তীর অন্তর্ভুক্তি। পাঁচ ম্যাচে ৪৭ উইকেট তুলেছে ভারত। সামি ৯ উইকেট, বরুণ ৯ উইকেট। কুলদীপ, অক্ষর প্যাটেল এবং রবীন্দ্র জাদেজার কৃপণ বোলিং। অলরাউন্ডার হার্দিককে নিয়ে টিম ইন্ডিয়ার ১১জনের ১১জনই স্টার।

বিরাট মনের মানুষ কোহলি

নিউজিল্যান্ডের হার। উইলিয়ামসনের জন্য ব্যথিত কোহলি। ১২ বছর পরে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির খেতাবে উচ্ছ্বসিত বিরাট কোহলি। প্রিয় বন্ধুর মন খারাপ কোহলির। নিউজিল্যান্ডের অভিজ্ঞ তারকা কেন উইলিয়ামসন বিরাট কোহলির অন্তরঙ্গ বন্ধু। বন্ধু উইলিয়ামসনকে পরাজিত শিবিরে মাথা নীচু করে থাকতে দেখে খারাপ লাগে বিরাটের। কোহলি বলেন, ‘আমার কাছের বন্ধুকে হেরে যাওয়া দলে দেখে খারাপ লাগছে। তবে এটাই হয়। আমিও বার দু’য়েক পরাজিত শিবিরে ছিলাম, যখন ও জয়ী দলের সদস্য ছিল।‘‌
২০২১ টেস্টে চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল ও ২০১৯ সালের বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরে যায় ভারত। কেন উইলিয়ামসন ছিলেন বিজয়ী শিবিরে এবং কোহলি ছিলেন পরাজিত শিবিরে। ‘বিশ্বের সেরা ফিল্ডিং দল নিউজিল্যান্ড’ বলেন বিরাট।

বাবার দুরন্ত ইনিংসে কাপ জয়! আনন্দে রোহিতের মেয়ে সামাইরা

রোহিতের মেয়ে সামাইরা খুশি ভারতীয় দলের জয় দেখে। বাবাকে জড়িয়ে ধরে ছাড়তেই চাইছিল না।
ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মা আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালেও ৭৬ রান করে দলকে জেতান। সঙ্গে ম্যান অফ দ্য ম্যাচের পুরস্কার জেতা হিটম্যান ২২ গজের বাইরে একদমই আলাদা রকমের মানুষ। চ্যাম্পিনয়ন্স ট্রফির ফাইনাল ম্যাচের শেষে বিরাট কোহলি স্ত্রী অনুষ্কার শর্মার জন্য জলের বোতল খুলে দিলেন, সঙ্গে ট্রফি জয়ের পর একাধিকবার আলিঙ্গন তো ছিলই। রোহিত শর্মাও স্ত্রী মেয়ের সঙ্গে কাটালেন উৎসবের মূহূর্তটা। দুবাইয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ফাইনালে নিউজিল্যান্ডকে চার উইকেটে হারিয়ে স্টেডিয়ামের সাইডলাইনে স্ত্রী রিতিকা সাজদেহ ও মেয়ে সামাইরার সঙ্গে জয় উদযাপনে মেতে ওঠেন রোহিত। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পদক, ট্রফি এবং বিখ্যাত সাদা জ্যাকেট পাওয়ার পরে, রোহিত শর্মা স্ত্রী ঋতিকার সাথে উষ্ণ এবং আবেগময় আলিঙ্গন।

ভারতকে চ্যাম্পিয়ান হতে দেখে সানির নাচ

বিরাটরা চ্যাম্পিয়ন হতেই নাচতে শুরু করলেন গাভাসকর! টিম ইন্ডিয়ার দুরন্ত পারফরমেন্সের পর বাঁধন হারা উচ্ছাসে ১৯৮৩র বিশ্বকাপজয়ী দলের ক্রিকেটার সুনীল গাভাসকরও। ২০১১ সালের পর ফের ৫০ ওভারের ফরম্যাটে সেরা রোহিত শর্মার টিম ইন্ডিয়া। মুম্বইকর ব্যাটার রোহিত শর্মা ফাইনালে রাজকীয় ইনিংস খেলেছেন, ম্যাচের সেরাও। মহেন্দ্র সিং ধোনির পর দ্বিতীয় ভারত অধিনায়ক হিসেবে একাধিক আইসিসি ট্রফির জয়েরও নজিরে ভারতীয় ক্রিকেটের ইতিহাসে রোহিত অন্যতম সফল অধিনায়ক হিসেবেই থাকবেন। গাভাসকারের নাচ দেখে সঞ্চালিকা মায়ান্তি ল্যাঙ্গারও হাসিতে ফেটে পড়লেন।

গম্ভীরকে ভাংড়া নাচানোর চেষ্টা, আঙুল তুলে দাঁড়িয়ে কোচ

ভাংড়া নাচানোর চেষ্টা করা হল ভারতীয় দলের হেড কোচ গৌতম গম্ভীরকে। নাচানো গেল না। স্রেফ আম্পায়ারের মতো আঙুল তুলে দাঁড়িয়ে রইলেন গম্ভীর। গম্ভীর হাসলেন। কিন্তু কিছুতেই নাচলেন না! ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেটার ধারাভাষ্যকার নভজ্যোত সিং সিধু অনেকবার ‘ভাংড়া’-য় নাচার অনুরোধ করার পরে, লাজুকভাবে এক হাত তুলে দাঁড়িয়ে থাকেন গৌতম গম্ভীর। আম্পায়ারদের আউটের সিদ্ধান্ত দিতেই যেন ভারতীয় দলের হেড কোচ। ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ এবং অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে বর্ডার-গাভাসকর ট্রফিতে হারের জন্য তুমুল সমালোচনা। উঠেছিল অনেক প্রশ্ন। কলকাতা নাইট রাইডার্স অর্থাৎ কেকেআরের বরুণ চক্রবর্তী ও হর্ষিত রানাকে ভারতীয় দলে সুযোগ পাওয়ায় পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ। সবকিছুর জবাব আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। সত্যিই গৌতম গম্ভীর হলেন ইন্ট্রোভার্ট প্রো ম্যাক্স।’

খলনায়ক থেকে নায়ক লোকেশ রাহুল

১৯ নভেম্বর, ২০২৩। ৯ মার্চ, ২০২৫। প্রথমটা দেশের মাঠে ওয়ান ডে বিশ্বকাপ। অন্যটা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। প্রথমটা নভেম্বরের রবিবার। কেএল রাহুল মার্চের রবিবারও খেললেম জয়ও করলেন। ২০২৩ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালে দলের হয়ে সর্বোচ্চ রান করা সত্ত্বেও দেশবাসীর কাছে খলনায়ক রাহুলের ব্যাটে এসেছিল মন্থরগতিতে ১০৭ বলে ৬৬ রান। মার্চের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ের রবিবারে রোহিত শর্মার কাছের মানুষ গম্ভীরের প্রিয় ভারত সমর্থকদের কাছে প্রাণের নায়ক রাহুলের ৩৩ বলে অপরাজিত ৩৪ রান। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ফাইনাল রাহুলের কাছেও শাপমুক্তিও। ঋষভ পন্থকে পাঁচটি ম্যাচই মাঠের বাইরে রেখে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে লোকেশ রাহুলকে উইকেটকিপার-ব্যাটার হিসাবে খেলিয়ে গেছেন কোচ গৌতম গম্ভীর। সত্যিই খলনায়ক থেকে নায়কে পরিনত হলেন রাহুল।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Popular Articles