বাংলাদেশ: ২২৮/১০ (হৃদয়-১০০, জাকের-৬৮, শামি-৫/৫৩, হর্ষিত-৩১/৩)
ভারত: ২৩১/৪ (রোহিত-৪১, গিল-১০১, রাহুল-৪১, রিশদ- ২/৩৮)
ভারত জয়ী ৬ উইকেটে
চ্যাম্পিয়ান্স ট্রফিতে নজিরের ছড়াছড়ি। বিশ্বরেকর্ড গড়লেন বাংলার জোরে বোলার মহম্মদ সামি। ২০০ উইকেট নিতে ৫১২৬ বল করেন সামি। এত দিন এই রেকর্ড ছিল মিচেল স্টার্কের দখলে। অস্ট্রেলিয়ার পেসার ২০০ উইকেট নিতে করেছিলেন ৫২৪০ বল। একদিনের আন্তজার্তিকে ২০০ উইকেটের মাইলস্টোন ছুঁলেন। পাশাপশি প্রধান নির্বাচকের রেকর্ড ভেঙে নতুন ইতিহাস গড়লেন সামি। একদিনের বিশ্বকাপে যেখানে শেষ করেছিলেন, সেখান থেকেই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে শুরু করে মহম্মদ সামি বল হাতে দিলেন আগুন ঝরা পারফরম্যান্স।। চোট সারিয়ে ২২ গজে ফিরে আইসিসি টুর্নামেন্টে লড়াকু মেজাজে বাংলার তারকা পেসার। আইসিসি টুর্নামেন্টে দুরন্ত প্রত্যাবর্তন তারকা পেসারের। লিখলেন ইতিহাস। দ্রুততম ভারতীয় বোলার হিসাবে ২০০ একদিনের আন্তর্জাতিক উইকেট নেওয়ার কৃতিত্ব অর্জন। নিজের ১০৩তম ইনিংসে ২০০ উইকেটের মাইলফলক ছুঁলেন তিন উইকেট নিয়েই। অজিত আগরকর ১৩৩তম ইনিংসে ২০০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেছিলেন। সেই নজির ভেঙে সামি গড়লেন নতুন রেকর্ড। বিশ্বের দ্বিতীয় দ্রুততম বোলার হিসাবে ২০০ একদিনের আন্তর্জাতিক উইকেটের মাইলফলকে ৩৪ বছর বয়সী তারকা পেসারসামি। অস্ট্রেলিয়ার মিচেল স্টার্ক ১০২ ইনিংসে নিয়েছিলেন। তালিকায় স্টার্ক এবং সামির পরে পাকিস্তানের সাকলিন মুস্তাক ১০৪ ইনিংসে, চারে নিউজিল্যান্ডের ট্রেন্ট বোল্ট ১০৭ ইনিংসে এবং পাঁচে অস্ট্রেলিয়ার ব্রেট লির ১১২ ইনিংসে ২০০ উইকেট।
একদিনের আন্তজার্তিক ক্রিকেটে ২০০ উইকেট নেওয়া অষ্টম ভারতীয় বোলার সামি। সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রহকারী তারকা স্পিনার অনিল কুম্বলে ৩৩৪টি উইকেট নেন। জাভাগল শ্রীনাথ ৩১৫, অজিত আগরকর ২৮৮, জাহির খান ২৬৯, হরভজন সিং ২৬৫, কপিল দেব ২৫৩ এবং রবীন্দ্র জাদেজা ২২৬ উইকেট নেন।
বাংলাদেশের মেরুদন্ড ভেঙে দেন বঙ্গ পেসার। মহম্মদ সামির পাঁচ শিকার। মহম্মদ সামি প্রথম ওভারেই ফেরান সৌম্য সরকারকে ০ রানে। ৬.২ ওভারে নিজের দ্বিতীয় উইকেট, আউট করেন মেহেদি হাসান মিরাজকে ৫ রানে। ৬৮ রান করা জাকেল আলিকে ফিরিয়ে দেন। বোল্ড করেন তানজিম হাসান শাকিবকে ০ রানে। তাসকিন আহমেদকেও আউট করেন তারকা পেসার। ১০ ওভারে ৫৩ রান খরচ করে সামি নেন ৫ উইকেট। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রথম ম্যাচেই নজির রোহিত শর্মার। ক্রিকেট ইতিহাসের দ্বিতীয় দ্রুততম ব্যাটার হিসাবে ১১ হাজার রান পূর্ণ করলেন ভারত অধিনায়ক। চতুর্থ ভারতীয় হিসাবে ওয়ানডেতে ১১ হাজার রান রোহিতের। অল্পের জন্য হাফসেঞ্চুরি হাতছাড়া হল হিটম্যানের। ক্রিকেট ইতিহাসের দশম ব্যাটার হিসাবে ৫০ ওভারের ক্রিকেটে তিনি ১১ হাজার রানের গণ্ডি পেরলেন। ২৭০টি ইনিংস খেলে এই নজির গড়লেন রোহিত। ক্রিকেট ইতিহাসে দ্বিতীয় দ্রুততম। ২৬১ ইনিংসে এই কীর্তি গড়েছিলেন বিরাট কোহলি। তালিকায় রয়েছেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এবং শচীন তেণ্ডুলকর। রোহিতের চেয়ে বেশি ইনিংস খেলে ১১ হাজার রান করেছেন দুই প্রাক্তন ক্রিকেটার।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে দুবাই স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ক্রিকেট মহারণের অভিযান শুরু রোহিত শর্মা ব্রিগেডের। টসে হার মেন ইন ব্লুর। প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। ভারতীয় প্রথম একাদশ সাজানো হয়েছে তিন পেসার-তিন স্পিনার দিয়ে। প্রথম একাদশে মহম্মদ সামি। বাদ বরুণ চক্রবর্তী। দুবাইয়ের মাঠে নৈশালোকে ব্যাট করা অনেক বেশি সহজ। বাঁহাতি অর্শদীপ সিংয়ের বদলে হর্ষিত রানা দলে। টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে মহম্মদ সামি এবং হর্ষিত রানার বলে বাংলাদেশের টপ অর্ডারের ব্যাটাররা নাজেহাল। প্রথম ওভারেই আউট ওপেনার সৌম্য সরকার। দ্বিতীয় ওভারে প্যাভিলিয়নের পথে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। নবম ওভারে দ্বিতীয় বলে তানজিদ হাসানকে আউট করেন অক্ষর। পরের বলেই গোল্ডেন ডাক মুশফিকুর রহিম। হ্যাটট্রিক চান্স। অধিনায়ক রোহিত প্রথম স্লিপে দাঁড়ান নিজেই, দ্বিতীয় স্লিপ এবং লেগ স্লিপ। স্ট্রাইকে থাকা জাকের আলির ব্যাট ছুঁয়ে প্রথম স্লিপে যাওয়া অক্ষরের ডেলিভা। বলটি লুফেও নেন রোহিত। সেলিব্রেশন শুরু করেন ফিল্ডাররা। বলটি তালুবন্দি রাখতে পারেননি ভারত অধিনায়ক। সহজ ক্যাচ ফেলে দিলেন রোহিত। ক্যাচ ফস্কানোর পর নিজের প্রতি হতাশায় মাঠে পরপর চাপড় মারতে থাকেন। পরে অক্ষরের কাছে ক্ষমা চাইতেও দেখা যায় ভারত অধিনায়ককে। অক্ষরের জীবনের প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেই হ্যাটট্রিক করতে পারার নজির ফস্কে গেল ক্যাপ্টেনের ভুলে। ক্যাচ ফেলেন হার্দিক পাণ্ডিয়াও। উইকেটরক্ষক রাহুল স্টাম্প করার সুযোগ নষ্ট করেন। ৩৫/৫ থেকে বাংলাদেশের রান ১৮৯/৫। দুবাইয়ে ভারতের ফিল্ডিং নিয়ে বিরাট প্রশ্ন? তৌহিদ হৃদয়ের শতরানে ভর করে বাংলাদেশের রান ২৩০। তোহিদ হৃদয় শতরান করেন। ৬৮ রান করেন জাকের আলি। অক্সর প্যটেল ২টি ও হর্ষিত রানা তিন উইকেট নেন। বাংলাদেশের ইনিংস থমকে যায় ২২৮ রানে।
বাংলাদেশের রান তাড়া করতে নেমে ভারত জিতল ৬ উইকেটে। চিন্তা বিরাট কোহলির ফর্ম নিয়ে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রথম ম্যাচে ৩৮ বলে ২২ রান করলেন কোহলি। একটি মাত্র চার মারেন। শুভমন গিল ১২৫ বলে শতরান করলেন। ওপেন করতে নেমে শেষ পর্যন্ত থেকে দলকে জেতালেন। এক দিক ধরে রেখে শেষ পর্যন্ত ছিলেন। দুই ইনিংস মিলিয়ে খেলা হল মোট ৯৬.৩ ওভার। ২১ বল বাকি থাকতেই ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচ শেষ করেন কেএল রাহুল। লক্ষ্মীবারে তৃপ্ত অগ্নিপরীক্ষায় উপবিষ্ট গৌতম গম্ভীর।
২৩ ফেব্রুয়ারি মুখোমুখি দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী। দুবাই ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের সব টিকিট ইতিমধ্যেই নিঃশেষ। ক্রমশ প্রকাশ্য টানটান উত্তেজনার ম্যাচ।