বার্ধক্য পিছিয়ে যেতে পারে। কম করে ৯ বছর। রোজ করতে হবে শরীরচর্চা। কী ভাবে তা সম্ভব, ব্যাখ্যা আমেরিকার গবেষকদের। শরীরচর্চা করলে মেদ ঝরে, দেহকোষের ক্ষত মেরামতের পাশাপাশি শরীরের কোষগুলির ক্ষয় বয়সের সঙ্গে একই হারে হয় না। কারও ক্ষেত্রে হয় দ্রুত হারে। কারও ক্ষেত্রে কম। বছরের হিসাবে মানুষের বয়সের সঙ্গে তার দেহকোষের আয়ুর ‘বায়োলজিক্যাল এজ’ তফাৎ। মানব দেহকোষের ক্ষয়ের প্রক্রিয়া বিলম্বিত করা গেলেই বার্ধক্য পিছিয়ে দেওয়া সম্ভব। বিশ্ব জুড়েই গবেষণা চলছে। আমেরিকার ব্রিগাম ইউনিভার্সিটির গবেষকদের দাবি, রোজ যদি ৩০ মিনিট করে দৌড়লেই দেহকোষের ক্ষয়ের ওই প্রক্রিয়া পিছিয়ে দেওয়া সম্ভব।
নিয়মিত হাঁটাহাঁটি করলে বা দৌড়লে শরীরে রক্ত চলাচল ভাল হয়। ওজন কমানোর জন্য ও শরীর সুস্থ রাখতে রোজ অন্তত কিছুটা সময় হাঁটাহাঁটি করতে বা দৌড়তে বলেন চিকিৎসকেরা। আমেরিকার গবেষকদের দাবি, রোজ যদি ৩০ মিনিট করে ৫ দিন কেউ জগিং করলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ শক্তি অনেক বেড়ে যাবে। সংক্রামক অসুখবিসুখের ঝুঁকি কমবে। শরীরে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রিত হয়। ইনসুলিন হরমোনের ভারসাম্য বজায় থাকবে। ডায়াবিটিস হওয়ার ঝুঁকিও কমবে।
মানুষের শরীরে প্রতি দশ বছর অন্তর হার্ট, লিভার, কিডনি, ফুসফুসের কার্যক্ষমতা ৫-১০ শতাংশ হারে কমতে থাকে। সাধারণত ৩০ বছরের পর থেকেই এই ক্ষয়ের প্রক্রিয়া শুরু হয়। ৫০ বছরে গিয়ে হয়তো শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলির ক্ষমতা প্রায় ২০ শতাংশ কমে গিয়েছে। ৮০ বছরে গিয়ে তাই ৫০ শতাংশ বা তার বেশি কমে যাওয়ার কারণ, কোষের ক্ষয় ক্রমাগতই হয়ে চলেছে।
কোষের মূল জিনগত উপাদান হল ক্রোমোজোম। দেখতে ‘এক্স’-অক্ষরের মতো। এর দু’টি বাহু, ছোটটির শেষ প্রান্তকে বলে টেলোমিয়ার। ক্ষয়টা হয় এখানেই। কোষ কত বার বিভাজিত হবে, তার হিসাব আছে। যখন বিভাজন প্রক্রিয়া একেবারেই বন্ধ হয়ে গেলেই কোষের মৃত্যু হবে। গবেষকেরা জানাচ্ছেন, এই প্রক্রিয়াই বিলম্বিত হবে অর্থাৎ টেলোমিয়ারের ক্ষয় পিছিয়ে যাবে। ফলে কোষের মৃত্যু হবে না। শরীরে ক্ষয়ও হবে না। সব অঙ্গপ্রত্যঙ্গ একই রকম কার্যক্ষম থাকবে বছরের পর বছর। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় ‘টেলোমিয়ার প্রিজারভেশন’। সপ্তাহে ৫ দিন যদি ৩০ মিনিটও কেউ নিয়ম মেনে দৌড়লেই যৌবন ধরে রাখা যাবে দীর্ঘ সময় ধরেই।